মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাহিত্য

গুচ্ছ কবিতা

| প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০২২, ১২:০৫ এএম

মোরশেদুল ইসলাম

ঘুম নয়, ভাবনা আসে
রাতের শান্ত হৃদয়ে ঢেউ তুলে যায়
কুকুরের ঘেউ ঘেউ! একটা পেঁচা ডাকে
একঘেয়ে বিষণ্ন সুরে; খেঁকশিয়াল হাঁকে
বুঝি, খাদ্যের অভাবে। তবু ঝিঁঝিঁ গায়
ব্যাঙেদের সাথে গান– মানুষ নিদ্রায়
ডুবে যায় অনিঃশেষ– সাপেদের পাকে
এ আঁধারে পড়ে ব্যাঙ, বাঁচাবে কে তাকে?
সেই প্রশ্ন করে সুরে সুহৃদ পেঁচায়!
এভাবেই লিখে যাই নির্ঘুম এ রাতে
পেঁচার গল্প সনেটে; হঠাৎ হিজরত
করে পেঁচা জান নিয়ে– ঝিঁঝিঁ সহমত,
পাণ্ডা মশারা ধরেছে পেঁচাটার পায়!
মুখ বন্ধ করলেই কি কথা থেমে যায়?
প্রতিবাদ ঢেউ তোলে পুরো দেহটাতে!

 

আহমাদ কাউসার
আদিম পরিচ্ছদে মানবতা
সময়ের সিঁড়ি বেয়ে এগোয় পৃথিবী
মানবের পদধূলিতে ধন্য মেরুদ্বয়
সাত সমুদ্র তেরো নদীতে মানুষের কোলাহল
গহীন অরণ্য পেল নগরের তকমা
মানুষ রপ্ত করল আকাশ পাড়ির দুর্বোধ্য কৌশল
চন্দ্রপৃষ্ঠে পৃথিবীর পতাকা
শুধু মানবতার গায়েই আদিম পরিচ্ছদ।

 

উৎপলেন্দু পাল
ক্ষমিও
তোমার অগ্নিবীণার সুর শুনেছি তবুও
বুকে আগুন জ্বালাতে পারিনি আজও
তোমার শেকল ভাঙার গান শুনেও
এখনও শেকল ছিড়ে স্বাধীন হতে পারিনি
তোমার উদাত্ত কণ্ঠে শুনেছি সাম্যের গান --
তবুও মন থেকে মুছতে পারিনি অসাম্যের বিষ
জাতের নামে বজ্জাতি করেই চলেছি চিরকাল
করেছি তোমার মতো কাণ্ডারীকে অপমান
তোমার মন্দ্রগম্ভীর বিদ্রোহের ডাক শুনেও
প্রকৃত বিদ্রোহী হতে পারিনি আজও ,
তোমায় শুধু পড়েই গেছি চিরকাল , তবুও
তোমায় উপলব্ধি করতে পারিনি কোনোদিন
তোমায় বর্ষে বর্ষে পুষ্পে প্রদীপে বরণ করেও
হৃদয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারিনি হয়তো একবারও
তুমি প্রতিবার আমায় নিঃশর্ত ক্ষমা করে দিলেও
আমি হারিয়েছি আজ ক্ষমা চাইবার অধিকার

 

জসীম উদ্দীন মুহম্মদ
নগদ জলের বৃত্তান্ত
জীবন থেকে হররোজ যতটা জল খসে খসে পড়ে
কে জানে না...? চন্দ্রবিন্দু, খন্ড ত, অনুস্বার..
সে জল আর কোনোদিন ফিরে না আপন নীড়ে!
তবুও নিয়ত বায়ুর মতোন নিয়ত বন্দনা করি
পড়ি, মরি করে আবারও সে জলকেই স্মরি
বিষাদ থেকে আলাদা হয় কয়েকটি মাত্র বিন্দু
যে ডুবুরি সেও কি জানে কতটা গভীর এই সিন্ধু?
অথচ হ্যালোসিনেশন বলে অভিধানে আছে কিছু
জলের মতো কালও ঘুরে সদাই চক্রের পিছু পিছু
বোটার গর্ভে ক›দিনই বা বেঁচে থাকে শিশু ফল
এখানেও নাক-চোখ-মুখ-খিঁচিয়ে হেসে উঠে জল..!
জানি তবুও ইতিবৃত্ত হয়নি নগদ জলের বৃত্তান্ত
মাছির চোখের মতোন সেই জলও যে সর্বত্র সম্ভ্রান্ত!

 


শেলী সেলিনা
দূরত্ব
পুঞ্জে, পুঞ্জে মোলায়েম ঝলমলে জোছনায় -
যে মুখটি বহুবার,
পুন:বার ভেসে ওঠে কলঙ্কিত হৃদয়ে,
সে মুখটি তাঁর
এই মোলায়েম মুখের জন্য বহুবার আধুনিক হেরেমে যাই, কিন্তু বিশ্বাস কর,
কোন সুলতান কখনো ডাকেনি আমায়
তীর্থের সন্যাসীর মতো নির্ঘুমা হয়ে জেগে থাকি একটি প্রেম ও একটি কবিতার জন্য!
বহুবার বুকের খুব কাছে গিয়েও অন্তরের ছোঁয়া পাইনি।
বুক আর অন্তরের দূরত্ব -
পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বের মতো
তাইতো ক্ষুদ্র আমার
শুধু খরাবুক দেখা হয়েছে ,
অন্তর দেখা হয়নি!

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md Raihan Faraji ৪ জুন, ২০২২, ৭:১০ এএম says : 0
সত্যিই কবিতাটি অসাধারণ ছিল। কবির উজ্জ্বল ভবিষ্যত কমনা করছি ।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন