বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

আমূলে বদলে যাবেন সাকিব, দলও

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রায় এক যুগ আগে জেমি সিডন্স যখন ছিলেন বাংলাদেশের দলের প্রধান কোচ, তখন নেতৃত্বে ছিলেন সাকিব আল হাসান। সিডন্সের কোচিং আর সাকিবের নেতৃত্বেই ২০১১ বিশ্বকাপ খেলেছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় দফায় সাকিবের টেস্ট অধিনায়কত্ব ফেরার সময়ে সিডন্সের ভূমিকা ব্যাটিং কোচের। আগের অভিজ্ঞতা থেকে এই অস্ট্রেলিয়ান সাকিবের নেতৃত্বে ফেরায় এবার দুটি ইতিবাচক দিক দেখতে পাচ্ছেন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ চলাকালীনও টেস্ট দলের নেতৃত্ব বদলের তেমন আভাস ছিল না। এমনকি মুমিনুল হককে অধিনায়ক করে ঘোষিত হয়ে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দল। তবে টানা রান খরায় চাপে থাকা মুমিনুল হুট করে নেতৃত্ব ছেড়ে দিলে গত বৃহস্পতিবার সাকিবকে নতুন অধিনায়ক ও লিটন দাসকে টেস্টের সহ-অধিনায়ক করে বিসিবি। দল ঘোষণার পর এভাবে নেতৃত্ব বদল নিয়ে আছে সমালোচনা। মুমিনুল নিজে সরেছেন নাকি সরতে বাধ্য হয়েছেন এমন আলোচনাও আছে। শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এসব নিয়ে প্রশ্নের মুখে পুরো পরিস্থিতিকে ভীষণ ইতিবাচক হিসেবে ব্যাখ্যা করলেন সিডন্স, ‘আমার মনে হয় এখানে দুটো ইতিবাচক ব্যাপার আছে। সাকিব খুব ভালো অধিনায়ক ও খুব ভালো চিন্তক। সে খুব ধারাবাহিক পারফর্মার । কাজেই সে অধিনায়ক হিসেবে দারুণ করবে। সবাই তাকে অনুসরণ করে। সে দারুণ নেতা। আরেকটা বিষয় হচ্ছে মুমিনুল এখন কেবল ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে পারবে। সে কিছুটা ধুঁকছে, এখন সে শতভাগ মনোযোগ ব্যাটিংয়ে দেবে। আমরা চাই সে পারফর্ম করুক। আমরা জানি সে ভালো খেলোয়াড়। আমরা তাকে আগের অবস্থায় ফিরে পেতে চাই। অধিনায়কত্বের ভার ছাড়া সে মুক্ত হয়ে খেলবে।’
২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা চোটে পড়লে নেতৃত্ব পান সাকিব। ২০১১ সালে আবার তা হারান তিনি। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০১৮ সালে ফের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে অধিনায়ক হন সাকিব। ২০১৯ সালে জুয়াড়ির তথ্য গোপন করে নিষিদ্ধ হলে নেতৃত্ব হারান আরেকবার। ২০২২ সালে আরেকটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে সাকিবকে করা হলো অধিনায়ক। এবার বিসিবি তার নেতৃত্বের কোন মেয়াদ ঠিক করেনি। সাকিব কতদিন অধিনায়কত্ব করবেন তাও বলা মুশকিল বলে জানান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকলেও সিডন্স মনে করছেন সাকিবের উপর সবারই আছে আস্থা, দলের নেতৃত্বের সব ঘাটতিও পূরণ হবে, ‘আমার মনে হয় সাকিবের অধিনায়কত্বে সবার আস্থা আছে। সে আগেও করে দেখিয়েছে। খেলোয়াড়রা ওর উপর আস্থা রাখে। মুমিনুল যেটা পারেনি সাকিব হয়ত সেটা বেশি করে পারবে। তাকে নেতৃত্বে ফিরে পাওয়া দারুণ ব্যাপার। মুমিনুলও তার খেলাটা খেলবে। যখন সে অধিনায়ক তখন তো খেলতেই হবে। অধিনায়ক হয়ে না খেলাটা খুব কঠিন। আমার মনে হয় আরেক দফায় নেতৃত্বের সম্ভাবনা নিয়ে সে খুব রোমাঞ্চিত। দলে খুব ভাল একটা নেতৃত্বের আবহ আসবে, যেটার হয়ত ঘাটতি ছিল।’
এদিকে, বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সব পর্যায়ে সব ধরনের ক্রিকেটে সবসময় ইনিংস ওপেন করে আসছেন তামিম। তবে তার মধ্যেই সম্ভাব্য দারুণ একজন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের ছবি খুঁজে পাচ্ছেন সিডন্স! বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচের মতে, দুর্দান্ত একজন চার নম্বর ব্যাটসম্যান হতে পারেন তামিম।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ বছরের পথচলায় ৪২৫ ইনিংস খেলে স্রেফ একটিতেই ওপেন করেননি তামিম। ওপেনিংয়ে ব্যাট করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রান ও সেঞ্চুরি তামিমের। নিচে কোথাও তার ব্যাট করা নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয়নি কখনোই। তবে ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে যার সংস্পর্শে সমৃদ্ধ হয়ে বদলে গিয়েছিল তামিমের ব্যাটিং, সেই সিডন্স যখন কিছু বলেন, বাড়তি কৌতূহল যেমন সেখানে থাকে, তেমনি থাকে বাড়তি ওজনও।
এবার প্রসঙ্গটি মূলত এসেছে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের একটু নিচে নেমে খেলা নিয়ে। সেখানেই প্রশ্ন ওঠে তামিমের মতো অভিজ্ঞরা কখনও ব্যাটিং অর্ডারে নিচে নামতে পারেন কিনা। সিডন্স এটির আরও গভীরে গিয়ে বললেন, তামিম নিজেও হয়তো মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে পছন্দ করবেন। তবে তাকে ওপেনিং থেকে সরানোর পথে সবচেয়ে বড় বাধাও তুলে ধরলেন ব্যাটিং কোচ, ‘বেশির ভাগ দেশেই সিনিয়র ক্রিকেটাররা লম্বা সময় ওপেন করলে সুযোগটা পায় (একটু নিচে নামার)। একটু নিচে নামতে পারলে তামিমেরও ভালো লাগবে বলে ধারণা আমার। তবে আগে তো আরেকজন ওপেনার খুঁজে বের করতে হবে! ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করেনি বা ‘এ’ দলে কিংবা টাইগার্সে পারফর্ম করছে না, এমন কাউকে আমরা স্রেফ ওপরে ঠেলে দিতে পারি না। এটাই চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য। তামিমকে চারে নামাতে হলে আরেকজন ভালো ওপেনার লাগবে। আমার মতে, চার নম্বরে সে ‘ফ্যান্টাস্টিক’ হতে পারে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন