শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পেপার হারিয়ে দায় এড়াচ্ছেন শিক্ষক, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০২২, ১২:০১ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৯৮-৯৯নং ব্যাচের প্রথম বর্ষের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার ১৫ শিক্ষার্থীর ল্যাব এক্সামের খাতা হারিয়ে ফেলেছে পরীক্ষা কমিটি। এতে পুনরায় ওই পরীক্ষা দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। যার ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, বিভাগটির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এ বছরের জানুয়ারির শেষ দিকে। প্রায় ৪ মাস পর মে মাসের শেষের দিকে এসে তাদেরকে অবহিত করা হয় যে, তাঁদের ১৫ জন শিক্ষার্থীর ল্যাব এক্সামের খাতা হারিয়েছে। তাই তাদের আবার পরীক্ষায় বসতে হবে। ওই ১৫ শিক্ষার্থীর খাতা হারানোয় বাকি শিক্ষার্থীদের রেজাল্টও আঁটকে আছে। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে পরীক্ষায় বসার কথা জানালেও সংশ্লিষ্টদের দুষছেন বিভাগের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ইনকিলাবকে জানান, পরীক্ষা হওয়ার প্রায় ৪ মাস পর গত ২ জুন আমাদের ডেকে নিয়ে দ্বিতীয় বার পরীক্ষায় বসার জন্য প্রেশারাইজ করা হয় এবং আমাদেরকে হুমকি দেয়া হয় এই বলে যে, তোমাদেরকে এখানে আরো তিন বছর থাকতে হবে। আমাদের হাতে তোমাদের অনেক কিছুই আছে। এসব কথা বলেন পরীক্ষা কমিটির সদস্য নওরিণ আহসান ম্যাডাম।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উক্ত পরীক্ষার দিন পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক প্রফেসর ড. সুপ্রিয়া সাহা, ড. ইশতিয়াক এম সাইদ সহ মোট তিনজন শিক্ষক।
তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য দিচ্ছেন না তারা। জানতে চাইলে প্রফেসর সুপ্রিয়া সাহা বলেন, একটা জিনিস হারায় কি কারণে? হতে পারে কেউ তোমার ব্যাগ ধরে ছিনতাই করে নিয়ে গেছে, না হয় চুরি হয়ে গেছে। এমন দুর্যোগপূর্ণ অবস্থাও তৈরি হতে পারে যখন তোমার জিনিসটা পানিতে ডুবে যায়। এখন এ ক্ষেত্রে ঠিক কি হয়েছে সেটা তো বিশ্ববিদ্যালয় দেখবে। এটা নিয়ে তো শিক্ষার্থীদের ভাবার দরকার নেই। এক্সিডেন্টলি একটা বিষয় ঘটে গেছে। এখন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদেরকে আবার পরীক্ষা দিতে হবে। কারণ তাদের তো নাম্বার দিতে হবে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা কমিটির প্রধান প্রফেসর ড. মো. আব্দুস সাত্তারকে দুষছেন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ঘটনায় পরীক্ষা কমিটির সভাপতির চরম অবহেলা লক্ষণীয়। ভুক্তভোগী এসব শিক্ষার্থীর দ্বিতীয় বার পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে আমরা একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু খাতা হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ভালো বলতে পারবেন কেন খাতা হারিয়েছে।
তিনি বলেন, পরীক্ষা কিমিটির সভাপতি খাতা না পাওয়ার আগে টেবুলেশনের কাজ সম্পন্ন করে কীভাবে? নিয়ম হচ্ছে আগে ইনকোর্স শেষ করবে, তারপর ফাইনাল নিবে। ফাইনালের পর সমস্ত মার্কস একসাথে পাবে, অতঃপর ইনকোর্স আর ফাইনাল মিলিয়ে রেজাল্ট তৈরি করবে। সেসব পাওয়ার পরে চেক করবে সব মার্কস পেয়েছে কি না। তারপর পরীক্ষা কমিটির কাছে মার্কস হস্তান্তর করবে। কিন্তু ওনি কী করে পূর্ণাঙ্গ মার্কস পাওয়ার আগে পরীক্ষা কমিটির কাছে রেজাল্ট হস্তান্তর করল এবং তাঁরা তা প্রকাশ করল? কিন্তু ধরা পড়লো না! আবার যখন বিষয়টি ধরা পড়লো তখনও তো তারা তা বন্ধ করে একাডেমিক কমিটির কাছে আসতে পারত। কিন্তু সবকিছু করে কোনো উপায় না দেখে সবশেষে তারা একাডেমিক কমিটির কাছে আসছে। এটা সভাপতির চরম অবহেলা।
ওবায়দুল ইসলাম আরো বলেন, শুধু সভাপতির দায় না, পরীক্ষা কমিটিতে যারা ছিল তারাও যখন দেখলো এই মার্কসগুলো নেই তখন তাৎক্ষণিকভাবে এটা বন্ধ করে একাডেমিক কাউন্সিলের সাথে যোগাযোগ করতে পারতো। কিন্তু তারা তা না করে কাজটা কন্টিনিউ করে, এমনকি তৃতীয় পরীক্ষকের মূল্যায়ণও সম্পন্ন করে ফেলে। সভাপতিসহ তারা কেউ এটার দায় এড়াতে পারেন না।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে তেমন কিছুই বলতে রাজি হননি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. আব্দুস সাত্তার। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের বিভাগে আলোচনা হচ্ছে। আমি এই মূহুর্তে এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না। প্র্যাকটিক্যাল যারা নিয়েছে তারা নাম্বার দিতে দেরি করেছে। তারা অনেক খোঁজাখুঁজি করেছে খাতাগুলো, কিন্তু পায়নি। এতটুকুই আমার বলার আছে।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Murshed ৬ জুন, ২০২২, ২:৪৪ এএম says : 0
Why not kick out all bloody involved. This so called teacher have no shame that's why now Adams students are beating those fu...teacher. just kick out them from DU, Please.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন