ফরিদপুরের সালথায় কাজ শেষ হওয়ার আগেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরের বারান্দা হেলে পড়ার অভিযোগ উঠছে। এতে ঘর নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি আবারও জনতার চোখের সামনে ওঠে এসেছে। এর আগে মুজিববর্ষ উপলক্ষে সালথায় গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার সরকারি ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে সংশ্লিষ্টরা নড়েচড়ে বসে।
এমন খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা সরেজমিন পরিদর্শনে যান আশ্রয়ন এলাকায়। গত ৬ জুন সাংবাদিকরা দেখতে পান প্রধানমন্ত্রীর উপহার গরীবের ঘর নির্মাণে পাহাড় সমান অনিয়মের চিত্র। ইনকিলাবের সংবাদদাতাসহ ৮/৯ জন সাংবাদিক, সরেজমিনে মাঝারদিয়ার কুমারপট্টি কুমার নদের পাড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখতে পান- কয়েকটি ঘর নির্মাণের ইটের কাজ প্রায় শেষের পথে। এখন শুধু বাকি আছে উপরে টিনের ছাউনি আর জানালা-দরজার কাজ। এরই মধ্যে একটি ঘরের বারান্দার ডোয়া ভেঙে পড়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের আশপাশের লোকজন গণমাধ্যমকর্মীদের জানান- কুমার নদে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে ঘরের মেঝ ভরাট করা হয়। এ সময় বালু মিশ্রিত পানির চাপে ঘরের ডোয়া হেলে পড়ে ভেঙে যায় দুর্বল কাঠামোর জন্য। এখানে শুরু থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর ব্যাপক অভিযোগ। যে কারণে সামান্য পানির চাপে ডাবল ইটের দুর্বল ডোয়া ফেটে ভেঙে যায়। ঘরের মান ভাল হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপকারভোগীরা সাংবাদিকদের বলেন- প্রধানমন্ত্রী আমাদের মাথা গুজার ঠাই বানিয়ে দিচ্ছে। আমাদের স্বপ্ন তিনি পূরণ করছেন। আমরা তার কাছে ঋণী। তবে ঘর নির্মাণের মান ভাল হচ্ছে না। নিম্নমানের মাল দিয়ে ঘর তৈরি করায় ঝুঁকিতে বসবাস করতে হবে। ঘরগুলো এমনভাবে তৈরি করছে যার আশপাশে হাটাচলার মত কোন জায়গা রাখা হয়নি না। অথচ ২ শতাংশ জমিসহ ঘর দেয়ার কথা। আপনারা লেখালেখি করে কোন লাভ নাই। আগেও তো লিখছেন, তাতে কি হয়েছে, যা হবার তা তো হচ্ছেই।
সরেজমিনে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা হয় ড্রেজারের শ্রমিক শেখ রাশেদের সাথে। তিনি বলেন, ড্রেজার দিয়ে বালু দেওয়ার সময় পানি-মাটি ছিলো, তাই ঘরের ডোয়া কাত হয়ে গেছে। পরে স্যার এসে মিস্ত্রিদের দিয়ে ইট খুলে ফেলে।
ইউএনও অফিস সূত্রে জানা গেছে- সালথায় তৃতীয় ধাপে মোট ২৩৩টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণের জন্য ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫শ’ টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
এ বিষয় বক্তব্য জানতে গৃহ নির্মাণ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাছলিমা আক্তারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন। এ কারণে তার বক্তব্য নিতে পারেননি সংবাদকর্মীরা।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায় বলেন- বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন