শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চালক ও মালিক গ্রেফতার

ফিটনেসবিহীন গাড়িচাপায় মৃত্যু হয় কনস্টেবলের

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাজধানীর বাংলামোটরে বাসচাপায় পুলিশ সদস্য কোরবান আলীর মৃত্যুর ঘটনায় ওয়েলকাম পরিবহনের চালক ও মালিককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে বাসটি ছিল ফিটনেসবিহীন। দৈনিক চুক্তিভিত্তিক বাসটি চালিয়ে আসা জাকির হোসেন বেপরোয়া গতিতে বাংলামোটরের দিকে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ সদস্যকে চাপা দেন। শুক্রবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর এলাকা থেকে বাসচালক জাকির হোসেন ও সাভার এলাকা থেকে বাসটির মালিক মো. আলম ওরফে খোকাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-২। গতকাল শনিবার কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গত ৬ জুন সকালে বাংলামোটর সড়কে মোটরসাইকেলযোগে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে যাওয়ার পথে ওয়েলকাম পরিবহনের বাসচাপায় পুলিশ কনস্টেবল কোরবান আলী মারা যান। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারির ধারাবাহিকতায় চালক ও বাস মালিককে গ্রেফতার করা হয়। তবে বাসটির হেলপার এখনো পলাতক রয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, চালক জাকির ২০০৫ সালে ঢাকায় টেম্পুর হেলপার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১০ সালের দিকে তিনি লেগুনা চালাতেন। ২০১৫ সালে বাসের হেলপার হিসেবে ঢাকায় চাকরি নেন। ২০১৮ সাল থেকে লাব্বাইক ও ওয়েলকাম ট্রান্সপোর্টে চালক হিসেবে অস্থায়ী ভিত্তিতে বাস চালানো শুরু করেন। ২০১৯ সালে হালকা যানবাহন চালনার লাইসেন্স করে নিয়মিত বাস চালানো শুরু করেন। প্রায় এক মাস আগে বর্তমান গাড়ির মালিক খোকার সঙ্গে জাকিরের পরিচয় হয়। প্রায় ২০ দিন আগে ওয়েলকাম পরিবহনের ওই বাসটি দৈনিক ২৫০০ টাকা চুক্তিতে চালানো শুরু করেন জাকির। এর বাইরে গাড়ির লাইন খরচ ১ হাজার ৩০০ টাকা দিতে হতো। এরপর বাকি টাকা জাকির, হেলপার ও কন্ট্রাক্টর ভাগ করে নিতেন।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার দিন কারওয়ানবাজার সিগনাল থেকে যাত্রী নিয়ে বেপরোয়াভাবে চালিয়ে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ সদস্যকে চাপা দেন জাকির। বাংলামোটরে গিয়ে বাসটি রেখে পালিয়ে যান তিনি। পরে বাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে আত্মগোপনে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। সারাদিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করে রাতে চট্টগ্রামে চলে যান। সেখানে এক আত্মীয়ের বাসায় দুদিন থাকার পর আরেক জায়গায় চলে যান। সেখান থেকে শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আত্মগোপনে যান। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জাকিরের পরিকল্পনা ছিল সীমান্ত পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে অবৈধভাবে পালিয়ে যাওয়া।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বাসের মালিক আলম ২০১৭ সালে পরিবহন ব্যবসা শুরু করেন। একটি বাসের লাভ দিয়ে ২০২০ সালে এ বাসটি কিনে রুট পারমিট ছাড়াই সড়কে চালানো শুরু করেন। এখনো গাড়িটির রুট পারমিট না পেলেও দুই বছর ধরে গাড়িটি রাস্তায় চলছিল। ঘটনার পর তিনিও সাভারে আত্মগোপনে যান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আমাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বাস চালক-মালিক থেকে শুরু করে সব স্টেকহোল্ডারদের গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। এটি শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নেই। সবাই সচেতন না হলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা কঠিন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
সত্য কথা ১২ জুন, ২০২২, ১২:৫৯ এএম says : 0
রুট পারমিট ছাড়া, ফিটনেস ছাড়া এত বড় একটি বাস কিভাবে রাস্তায় চলতে পারে? পুলিশ থেকে শুরু করে যারাই এই অবৈধ যানবাহন পরিচালনা-ঘুষ-চাদাবাজির সাতে জড়িত তাদেরকে সবাইকে ধরে টান দিতে হবে। চাইলে সবকিছুই শৃঙ্থলার মধ্যে আনা সম্ভব। কিন্তু আনা হবে না। দোষ তাদের আমাদের সবার
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন