আর এক সপ্তাহ। তার মধ্যেই হয়তো স্পষ্ট হয়ে যাবে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর সদস্য পদ পাবে কিনা ইউক্রেন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লেয়েন শনিবার এক বৈঠকে এই কথা জানিয়েছেন।
কিয়েভে শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন উরসুলা। যুদ্ধ চলাকালীন এটি তার দ্বিতীয় বার কিয়েভ সফর। এবারের বৈঠক ছিল সম্পূর্ণ ইইউ নিয়ে। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ইইউ-তে যোগ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল ইউক্রেন। তার চার দিন পরেই হামলা করে রাশিয়া। মস্কো চায় না প্রতিবেশী দেশটি ইইউ-তে যোগ দিক। অতীতে সোভিয়েত রাশিয়ার অন্তর্ভূক্ত ছিল ইউক্রেন।
সোভিয়েত পতনের পরে তারা আলাদা হয়। এ নিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলেও এত দিন শোনা গিয়েছে, ইইউ-তে জায়গা দেওয়া হবে না ইউক্রেনকে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে নিজেদের অনড় অবস্থান থেকে কিছুটা সরেছে ইইউ। এই গোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্ত হওয়ার জন্য বেশ কিছু মাপকাঠি রয়েছে। সে সবে পাশ করলে তবে মেলে সদস্যপদ। যেমন, দেশে গণতন্ত্র থাকতে হবে, যথাযথ আইন থাকবে এবং মজবুত অর্থনীতি থাকবে। জেলেনস্কির উদ্দেশ্যে শনিবার উরসুলা বলেন, ‘আপনি দেশের আইনকানুন অনেকটাই মজবুত করেছেন। কিন্তু আরও সংস্কার করা প্রয়োজন। বিশেষ করে দুর্নীতি রুখতে পদক্ষেপ নিতে হবে।’
জিলেনস্কি অনুরোধ করেছেন, ইউক্রেনের ক্ষেত্রে যদি বিষয়টি আলাদ ভাবে দেখে অবিলম্বে সদস্য পদ দেওয়া হয়। বৈঠকের পরে একটি যুগ্ম সাংবাদিক বৈঠক করেন উরসুলা ও জেলেনস্কি। সেখানে সাংবাদিকদের সামনে খোলাখুলিই উরসুলা বলেন, ‘শনিবারের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই কথার ওপর ভিত্তি করে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
ওদিকে, ইউক্রেন যখন ইইউ-তে ‘আশ্রয়’ পাওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, রাশিয়া পাসপোর্ট দেওয়া শুরু করে দিল তাদের দখল করা অংশে। রুশ-নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের খেরসন ও জাপুরিজিয়া অঞ্চলে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাসর্পোট দেওয়া হয়েছে। এক রুশ কর্মকর্তা বলেন, ‘খেরসনের মানুষকে প্রথম পাসপোর্ট দেওয়া হল। যারা সবার আগে রুশ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন, প্রথম দফায় তাদেরই দেওয়া হয়েছে।’
এক দিকে দখল করা অংশে সরকার গঠনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া, অন্যদিকে ইউক্রেনের বাকি অংশে যুদ্ধ জারি রেখেছে। শনিবার ইউক্রেন ও ব্রিটেন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, আরও বড় হামলার ছক কষছে রাশিয়া। গণহত্যা করতে পারে, এমন যুদ্ধাস্ত্র প্রস্তুত করছে তারা। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে থাকা খবর অনুযায়ী- রুশ বোমারু বিমানগুলো ১৯৬০-সালের জাহাজ-ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে ইউক্রেনে। কেএইচ-২২ ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধবিমান ধ্বংসেও ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এটি যদি জমিতে আঘাত করে, সে ক্ষেত্রে ভয়ানক ক্ষতি হবে। হতাহতের সীমা থাকবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন