নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সাহসের আইকন। সাহস থাকলে কি হয়-পদ্মা সেতু এর প্রমান; যা ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। আমরা জাহাজ 'এমভি সমৃদ্ধি' হারিয়েছি। আমরা আরো জাহাজ সংগ্রহ করে সমৃদ্ধ হব। সাহস ও মনোবল হারাবেন না। অফিসার ও নাবিকরা আবার কর্মক্ষেত্রে যোগদান করবেন। বাংলাদেশের এম্বাসেডর হিসেবে কাজ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখবেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে বিএসসি ভূমিকা রাখবে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী রাজধানীর দৈনিক বাংলাস্থ বিএসসি’র আঞ্চলিক কার্যালয় বিএসসি টাওয়ারে এমভি সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মরহুম মো. হাদিসুর রহমানের পরিবার এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও নাবিকদের ৭ মাসের বেতনের সমপরিমান ক্ষতিপুরণের চেক প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকেপড়া এম.ভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মৃত্যুবরণকারী জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মরহুম মো. হাদিসুর রহমানের পরিবার এবং অন্যান্য কর্মকর্তা-নাবিকদের বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি)’র পক্ষ হতে ক্ষতিপুরণের চেক প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মরহুম মো. হাদিসুর রহমানেরপরিবারকে ৫,০৫,০০০ (পাঁচ লক্ষ পাঁচ হাজার) মার্কিন ডলার এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও নাবিকদের ৭ মাসের বেতনের সমপরিমান ক্ষতিপুরণের চেক বিতরণ করা হয়। এটি বাংলাদেশ তথা বহির্বিশ্বের মেরিটাইম সেক্টরে নজীরবিহীন।
থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মরহুম মো. হাদিসুর রহমানের পরিবার এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও নাবিকদের ক্ষতিপুরণ বাবদ প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়া ইঞ্জিনিয়ার নিহত মরহুম মো. হাদিসুর রহমানের ভাইকে বিএসসিতে চাকুরী দেয়া হয়েছে।
বিএসসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর এসএম মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, জাহাজের বীমাকারী প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান। অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন, বীমা ব্রোকার টাইজার এন্ড কোম্পানির বাংলাদেশ প্রতিনিধি এবং বিএসসি'র উর্দ্ধতনকর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজ তুরস্কের ইরেগলী বন্দর হতে কার্গো ডিসচার্জ করে গত ২১ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করে। জাহাজটি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কার্গো লোডিং এর নিমিত্তে অলভিয়া বন্দরের ইনার এ্যাংকরেজে প্রবেশ করে। জাহাজ অলভিয়া বন্দরের ইনার এ্যাংকরেজে অবস্থানকালীন ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। বন্দরের প্রবেশমুখে মাইন স্থাপন করে রাখা এবং বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়াতে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় জাহাজ অলভিয়া বন্দরের ইনার এ্যাংকরেজ থেকে বের করে আনা সম্ভব হয়নি এবং পরবর্তীতে ২ মার্চ ইউক্রেনের স্থানীয় সময় আনুমানিক বিকাল ৫.১০ মিনিটে জাহাজে ক্ষেপনাস্ত্র আঘাত হানে। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পোল্যান্ড এবং রোমানিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশী দূতাবাসের সহায়তায় এবং বিএসসি'র সার্বিক প্রচেষ্টায় গত ৯ মার্চ জাহাজে অবস্থানরত ২৮ জন নাবিককে সর্বোচ্চ দ্রুততার সাথে দেশে প্রত্যাবর্তন করানো হয়। ১৪ মার্চ তারিখে মরহুম হাদিসুর রহমানের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং যথাযোগ্য মর্যাদায় তার নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, হাদিসুরকে আমরা ফিরে পাব না। দুর্ঘটনার পর আমার সাথে টেলিফোনে" হাদিসুরের বাবা বলেছিলেন, হাদিসুর আমাদের একমাত্র অবলম্বন। আমরা কোথায় যাব"। এ চেকটি একটা অবলম্বনের পথ খুঁজে দিল।হাদিসুরের ভাইকে বিএসসিতে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরবর্তিতে তার যোগ্যতা অনযায়ি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কোন সংস্থায় স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন