উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন ভেঙ্গে দেয়া থেকে শুরু করে হিন্দু-মুসলমান দ্বন্দ্বের সূচনা করেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। পুরো ভারতবর্ষ দখল করে হিন্দু-মুসলমানের একে অপরের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়েছিল ইংরেজরা। অথচ হাজার বছর ধরে হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে ধর্ম নিয়ে বিরোধ-বিভেদ কখনো দেখা যায়নি। ইংরেজরাই তা সূক্ষ্মভাবে এটা সৃষ্টি করে। এ কাজে তারা বেছে নেয় একশ্রেণীর গোড়া হিন্দুকে। তাদেরকে ক্ষমতার লোভ এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও প্রলোভন দেখিয়ে ‘মুসলমান তাদের শত্রু’ এমন ধারণা ঢুকিয়ে দেয়। তারাও তা লুফে নেয়। মূলত সেখান থেকেই হিন্দু-মুসলমান বিরোধের বীজ বপিত হয়। ’৪৭-এর পর বিভিন্ন সময়ে যারা ভারতের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে, তাদের দ্বারা কোনো না কোনোভাবে মুসলমানরা নিপীড়ন, নির্যাতন ও চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছে। এখনও হচ্ছে। দীর্ঘ সময় কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকলেও মাঝে মাঝে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপিও ক্ষমতাসীন হয়েছে। বিজেপি যখনই ক্ষমতাসীন হয়েছে, তখনই ভারতীয় মুসলমানরা সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর যখন মুঘল আমলের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়, তখন বিজেপি ক্ষমতায় ছিল না, ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। ঘটনার দিন অযোধ্যায় বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ প্রভৃতির করসেবকরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ধুলোয় মিশিয়ে দেয় মসজিদ। পরে দাঙ্গায় প্রায় দুই হাজার মানুষ মারা যায়, যাদের প্রায় সবাই ছিল মুসলমান। ২০১৪ সালে বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতাসীন হয়। প্রধানমন্ত্রী হন ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় ইন্ধনের অভিযোগ উঠা মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অথচ ভারতের মুসলমানরা একাট্টা হয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়ে বিজয়ে সহায়তা এবং নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছিল। বিজেপিকে তারা বিশ্বাস করেছিল। তাদের এ বিশ্বাস যে ভুল ছিল, তা এখন তারা নিপীড়ন, নির্যাতন, জীবন দিয়ে তা টের পাচ্ছে। বলা যায়, ভারতের শাসনাতিহাসে এমন উগ্র সাম্প্রদায়িক মনোভাবসম্পন্ন সরকার আর কখনো আসেনি।
দুই.
রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যখন একটি দেশে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নিপীড়ন, নির্যাতন, খুন এবং দেশছাড়া করার পদক্ষেপ নেয়া হয়, তখন সে দেশের কী দুরবস্থা হয়, তার জ্বলন্ত উদাহরণ এখন ভারত। ইংরেজরা তো ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতি অবলম্বন করেছিল, তার চেয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে বিজেপি ভারতের মাটি থেকে মুসলমান এবং ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার নীতি অবলম্বন করেছে। ভারতের মাটিতে ইসলামের নাম-নিশানা বলে কিছু থাকবে না বলে পোড়ামাটি নীতি অনুসরণ করছে। সরকারিভাবে মুসলমানদের ধর্ম-কর্ম পালনে বাধা দেয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও মাঠে ঈদের জামাত ও জুমার নামাজ আদায়, কোথাও আজান দেয়া এমনকি মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলমান নারীদের হিজাব পরা বন্ধ করা, গরুর গোশত ফ্রিজে রাখা নিয়ে হত্যা করা থেকে শুরু করে নির্যাতনের এমন কোনো পদক্ষেপ নেই, যা নেয়া হচ্ছে না। গত বছর কর্ণাটকের এক প্রি-ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মুসকান খান হিজাব পরে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথে গেরুয়া পোশাকধারী একদল উগ্র হিন্দু ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিয়ে তাকে হিজাব খুলে ফেলতে বলে। তবে মুসকান ‘আল্লাহুআকবর’ বলে এর প্রতিবাদ করে, যা বিশ্ব মিডিয়ায় স্থান করে নেয়। এর আগে আসামে এক মুসলমানকে হত্যা করে তার মৃতদেহের উপর এক ফটোগ্রাফারের নৃত্যের দৃশ্য ভারতে মুসলমানদের ওপর কি বিভৎসভাবে নিপীড়ন চালানো হয়, তার চিত্র বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। সবচেয়ে বিভৎস ঘটনাটি ঘটে ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গুজরাট দাঙ্গায়। সে সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। অযোধ্যা থেকে একটি ট্রেন গুজরাট ফিরছিল। এতে বেশিরভাগই ছিল তীর্থযাত্রী। প্ল্যাটফর্মে এক যাত্রী ও ফেরিওয়ালার মধ্যে ঝগড়াঝাটি শুরু হয়। এর মধ্যেই কোনো এক অজ্ঞাত কারণে ট্রেনের চারটি বগিতে আগুন ধরে যায়। এতে ৫৯ তীর্থযাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনাকে মুহূর্তে ছড়িয়ে দেয়া হয় মুসলমানরা ট্রেনে আগুন দিয়েছে। গুজব ছড়ানো হয় সেখানের মুসলমানরা পাকিস্তানি এজেন্টদের সহযোগিতা করে ট্রেনে আগুন লাগিয়েছে। মুসলমানরা হিন্দু মহিলাদের অপহরণ ও ধর্ষণ করেছে বলে পত্র-পত্রিকাগুলো ভুয়া সংবাদ পরিবেশন করতে থাকে। এর মধ্যে নরেন্দ্র মোদির উত্তেজনাকর বক্তব্য বিষয়টিকে আরও বিস্তৃত করে। পরদিন রাজ্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মোবাইল ফোনে গুজব ছড়ানো এবং মুসলমানদের বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তালিকাসহ লিফলেট প্রকাশ করা হয়। ট্রাকে করে গেরুয়া পোশাকধারীরা তলোয়ারসহ অন্যান্য অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মুসলমানদের বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে ও পুড়িয়ে ধুলিস্যাত করে দেয়। পাশের হিন্দুবাড়িগুলো অক্ষত থেকে যায়। আক্রান্ত মুসলমানরা পুলিশে ফোন করলে সেখান থেকে বলা হয়, তোমাদের রক্ষার জন্য আমাদের কাছে কোনো অর্ডার নেই। মুসলমানরা এক অসহায় পরিস্থিতে পড়ে যায়। উগ্র হিন্দুরা এতটাই নির্মম হয়ে উঠে যা কোনো সভ্য মানুষের পক্ষে সহ্য করা কঠিন। তারা ২৫০ মুসলমান নারীকে গণধর্ষণ করে, গর্ভবতী মায়ের পেট কেটে বাচ্চা করে পিঁষে হত্যা করে, ছোট ছোট বাচ্চাদের পেট্রোল গিলিয়ে আগুনে পুড়িয়ে মারে, মেয়েদের উলঙ্গ করে রাস্তায় হাঁটায় এবং হত্যা করে, অনেক মুসলমানকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে থেতলে মারে, বাবা-মায়ের সামনে সন্তানকে হত্যা করে। এভাবে শত শত মুসলমানকে তারা নৃশংস ও বর্বরভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে এই দাঙ্গায় উসকানি দেয়ার অভিযোগে নরেন্দ্র মোদিকে অভিযুক্ত করা হলেও ২০১২ সালে তাকে এ অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়া হয়। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে মোদির ওপর নিষেধাজ্ঞাও দেয়া হয়েছিল। এমন এক ব্যক্তি ও তার দল বিজেপি যখন ভারতের শাসন ক্ষমতায় আসে তখন সেখানের মুসলমানদের নিরাপত্তা কতটুকু থাকতে পারে, তা ব্যাখ্যা করে বলার কিছু নেই। প্রতি মুহূর্তে মুসলমানরা ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে তাদের দিনাতিপাত করতে বাধ্য হচ্ছে।
তিন.
২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় এসেই ভারতকে একটি হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করার পরোক্ষ নীতি অবলম্বন করে। তার লক্ষ্য হচ্ছে, ভারতে অন্য কোনো ধর্মাবলম্বী থাকতে পারবে না। তারা শুরুতেই টার্গেট করে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মাবলম্বী মুসলমানদের। মুসলমান নির্মূল করতে পারলে বাকি ধর্মাবলম্বীরা এমনিতেই নির্মূল হয়ে যাবে, এমন একটি নীতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এজন্য যতভাবে পারা যায়, মুসলমানদের ভারত থেকে উচ্ছেদ ও বিতাড়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ কাজে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে, বিজেপি সমর্থক উগ্র হিন্দু সংগঠন আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের বিভিন্নভাবে সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে। তারা বিভিন্ন রাজ্যে সংঘবদ্ধ হয়ে মুসলমানদের নিপীড়ন, নির্যাতন, হত্যা করছে। শুধু মুসলমানদের হত্যাই নয়, ইসলামের যত ঐতিহাসিক নিদর্শন, স্থাপনা, মসজিদ রয়েছে সবকিছুই ধ্বংস করে দেয়ার মিশনে নেমেছে। যেসব রাজ্যের নাম মুসলমানদের নামে হয়েছে সেগুলো থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটের নামও পরিবর্তন করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম তাজমহলের নাম পরিবর্তন করে ‘তেজো মহালয়’ করার জন্য মামলা করেছে। তাদের দাবী ‘তেজো মহালয়’ নামে এক প্রাচীন শিবমন্দিরের উপর তাজমহল নির্মিত হয়েছে। এছাড়া ইসলামী নামের সঙ্গে যা কিছু যুক্ত ‘ভারতীয়করণে’র উছিলায় নাম পরিবর্তন করে ‘হিন্দুত্বকরণ’ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এলাহাবাদের নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছে প্রয়াগরাজ। ফৈজাবাদ জেলার নাম পাল্টে করা হয়েছে অযোধ্যা। মুজাফফরনগরের নাম বদলে ‘লক্ষ্মীনগর’, আহমেদাবাদের নাম ‘কর্ণাবতী’, আগ্রার নাম ‘অগ্রবন’ করার দাবী করা হচ্ছে। ঐতিহাসিক কুতুব মিনারের নাম পরিবর্তন করে ‘বিষ্ণু স্তম্ভ’ করার দাবী তোলা হয়েছে। অথচ নব্বই দশকে রামমন্দির আন্দোলন তীব্র হলে ১৯৯১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নরসিংহ রাও সরকার ধর্মস্থান আইন পাস করে। তাতে বলা হয়, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তির দিন দেশের যেখানে যে ধর্মস্থান ছিল, তা অপরিবর্তিত থাকবে। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল অযোধ্যার বাবরি মসজিদ রাম জন্মভূমি। আইনটি করা হয়েছিল যাতে ভবিষ্যতে ধর্মস্থান বা ঐতিহাসিক স্থাপত্য ঘিরে অনর্থক বিতর্ক সৃষ্টি না হয়। মোদি সরকারের আমলে এই আইনের কোনো তোয়াক্কাই করা হচ্ছে না। বরং ভারতের মাটি থেকে মুসলমান ও ইসলামের চিহ্ন মুছে ফেলার নিরন্তর প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। এমনকি বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যসভা নির্বাচনে আর কোনো মুসলমান প্রার্থী দেবে না। গত ১০ জুন অনুষ্ঠিত উচ্চকক্ষ নির্বাচনে যে ২২ জন প্রার্থী বিজেপির নমিনেশন পায় তাতে একজনও মুসলমান প্রার্থী নেই। এতদিন রাজ্যসভায় বিজেপির তিনজন এমপি ছিলেন। তারা হলেন মুক্তার আব্বাস নকভি, সৈয়দ জাফর ইসলাম ও এমজে আকবর। তাদেরকে বাদ দেয়া হয়েছে এবং কোন মুসলমান প্রার্থী দেয়া হয়নি।
মোদির বিগত ৮ বছরের শাসনামলে মুসলমান নিশ্চিহ্ন করে ভারতকে একটি হিন্দু দেশে পরিণত করার যে অবিরাম প্রক্রিয়া ও মেরুকরণ চলছে, একইভাবে শত শত বছর ধরে ভারতকে শাসন করা মুসলমান শাসকরা যদি চাইতেন, ভারত শুধু মুসলমানের দেশ হবে, তাহলে তা তারা সহজে করতে পারতেন। তাদের পক্ষে ভারতের মাটি থেকে হিন্দু উচ্ছেদ ও নির্মূল করা কোনো ব্যাপার ছিল না। তারা এ কাজটি করেননি। গত কিছুদিন ধরে ইন্টারনেটে ভারতের কলকাতা থেকে প্রকাশিত একটি ইতিহাসভিত্তিক ভিডিও ইউটিউবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একবছর আগে প্রকাশিত এই ইউটিউবের সাংবাদিক ভারত বর্ষে মুসলমান শাসকদের ইতিহাস তুলে ধরে বলেছেন, ভারতবর্ষে যে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা চলেছে, তারা যদি চাইত তাহলে ভারতে কি একজনও হিন্দু থাকত? ভিডিওতে পুরো ভারতবর্ষে মুসলমান শাসকদের ইতিহাস নির্মোহভাবে তুলে ধরা হয়েছে। অথচ বিজেপি ক্ষমতায় এসেই ‘হিন্দুরা বিপদে আছে’ এমন এক কাল্পনিক শ্লোগান দিয়ে ভারত থেকে মুসলমান তাড়ানো ও উচ্ছেদে পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে অভিযানে নেমেছে। মুসলমানদের দেশছাড়া করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নাগরিকত্ব আইন (এনআরসি) করেছে, যার উদ্দেশ্যই হচ্ছে ভারত থেকে মুসলমানদের বিতাড়িত করা। শুধু তাই নয়, ভারতে মুসলমান শাসকরা হিন্দুদের অত্যাচার করেছে বলে নানা অপবাদ দিচ্ছে। কোনো কোনো শাসকের বিরুদ্ধে মন্দির ভাঙ্গার অপবাদ দিয়ে মসজিদ ভাঙ্গার অজুহাত তুলেছে। মুগল সম্রাট আওরঙ্গজেব মন্দির ভেঙ্গেছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। ভিডিওতে বলা হয়, আওরঙ্গজেব একটি মন্দির ভেঙ্গেছিলেন। তবে এ কথাও সত্য, তিনি কামরুককামাখ্যা, বৃন্দাবনসহ আরও বেশ অনেক জায়গায় মন্দির স্থাপনের জন্য জমি দিয়েছিলেন। বিজেপি ও তার উগ্র হিন্দু সমর্থকরা এ সত্য স্বীকার করে না। বিজেপি যে ঘোর মুসলিমবিদ্বেষী দল তার সর্বশেষ প্রমাণ রেখেছে মহানবী হযরত মুহম্মদকে (স.) নিয়ে তার মুখপাত্র নুপুর শর্মার কটূক্তির মধ্য দিয়ে। তার এ কথা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছে বিজেপির নবীন জিন্দাল। এ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমান দেশ ওআইসিসহ সারা মুসলিম জাহান তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। ভারতের মুসলমানরাও এর তীব্র প্রতিবাদ করছে। তারা বিজেপিকে ক্ষমা চাইতে বলেছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে ভারতীয় পণ্য বর্জন করেছে। বাংলাদেশের মুসলমানরাও এর তীব্র প্রতিবাদ করছে। এতদসত্ত্বেও বিজেপি ক্ষমা বা দুঃখ প্রকাশ করেনি।
চার.
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, মোদি ভারতকে একটি হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার যে, উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে শেষ পর্যন্ত দেশটির পুরো মানচিত্র বদলে যেতে পারে। তিনি ভারতকে একটি মন্দিরে পরিণত করতে চাচ্ছেন, আর এ মন্দিরের আমৃত্যু পুরোহিত হতে চাচ্ছেন। এজন্য হিন্দু জাতীয়তাবাদের জিগির তুলেছেন। ভারত, ইন্ডিয়া নামের পরিবর্তে হিন্দুস্থান হিসেবে অভিহিত করছেন। মোদি বা বিজেপি’র এ কর্মপ্রক্রিয়াকে আত্মঘাতী বলে অভিহিত করেছেন পর্যবেক্ষকরা।
darpan.journalist@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন