শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

পণ্যমূল্যে স্বস্তি নেই

মো. জাহিদুল ইসলাম : | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২২, ১২:০১ এএম

আকাশছোঁয়া বাজারে প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে প্যাকেট ময়দার দাম কেজিতে বেড়েছে ৭ টাকা, গুঁড়ো দুধের দাম বেড়েছে কেজিতে ৬০ টাকা পর্যন্ত। শুধু তাই নয়, নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে-চাল, আটা, সয়াবিন, পাম অয়েল, পেঁয়াজ, মুরগি, আদা-জিরাসহ অন্তত ডজনখানেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে পণ্যমূল্যের এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা গত সপ্তাহে যে ময়দা ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন, এ সপ্তাহে সেই ময়দা বিক্রি করতে হচ্ছে ৭২ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ কেজিতে ময়দার দাম বেড়েছে ৭ টাকা। একটু কম মানের ময়দার দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। এদিকে সরকারের হিসাবেও এ সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে প্যাকেট ময়দার। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে প্যাকেট ময়দার দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে প্যাকেট আটাও। কেজিতে তিন টাকা বেড়ে ৫৫ টাকা কেজি দরের আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা করে।

ফ্রেশ গুঁড়ো দুধ গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৬৩০ টাকা কেজি। এ সপ্তাহে ক্রেতাদের একই গুঁড়ো দুধ কিনতে হচ্ছে ৬৯০ টাকা কেজি। অর্থাৎ কেজিতে দাম বেড়েছে ৬০ টাকা। তবে কোথাও কোথাও ৬০০ টাকা কেজি দরের ফ্রেশ গুঁড়া দুধ ৫০ টাকা বেড়ে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খোলা সয়াবিনের দাম লিটারে ছয় টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহে ১৮৬ টাকা লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি করলেও গতকাল তা বিক্রি হচ্ছে ১৯২ টাকা লিটার। ৫ লিটার ওজনের সয়াবিন তেলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৯৮৫ টাকা। গত সপ্তাহে এই একই বোতল তেল বিক্রি হয়েছিল ৯৭০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। এছাড়া এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৫ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহে ২০০ টাকা লিটারের সয়াবিন বর্তমানে ২০৫ টাকা লিটার বিক্রি করছেন। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা দেশি পেঁয়াজের কেজি এখন ৪৫ টাকা। গত সপ্তাহে এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ টাকা কেজি। অর্থাৎ কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। টিসিবির হিসাবে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

এছাড়া আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। গত সপ্তাহে আদা পাওয়া গেছে ১০০ টাকায়, এ সপ্তাহে সেই আদা কিনতে হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে। টিসিবির হিসাবে, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে আদার দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এছাড়া সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, রাজধানীতে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।

বাজারে চালের দামও বেড়েছে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা। গত সপ্তাহে যে চাল ৭২ টাকা কেজি ছিল, এ সপ্তাহের সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে যে চালের দাম ছিল ৫৮ টাকা, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকা কেজি দরে।

রাজধানীর কাওরান বাজার, তেজগাঁও এবং মগবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি ও খুচরা বাজারে রসুনের দামে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। এক সপ্তাহ আগেও আমদানি করা বড় রসুনের দাম ছিল পাইকারিতে প্রতি কেজি ১৬০-১৭০ টাকা। পাইকারিতে একই রসুনের দাম প্রতি কেজি ১২০-১২৫ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম কমেছে কেজিতে ৪০-৪৫ টাকা। খুচরা বাজারে আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকায়, বাজেটের আগে যা ছিল ১৮০-১৯০ টাকা কেজি। দেশি রসুন পাইকারি ও খুচরায় মিলছে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। টিসিবির হিসেব অনুযায়ী, বাজারে আমদানি করা রসুনের দাম ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা।

দুই সপ্তাহ আগে আলুর দাম একদফায় কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছিল। এখন সেই আলু ২৫ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও প্রতি হালি ডিম ৪৫ টাকা দরে কিনতে হয়েছে। এখন খুচরা বাজারে ডিমের হালি ৫ টাকা কমে ৪০ টাকা হয়েছে।

রাজধানীর মালিবাগ বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৪০-১৫০ টাকায়। মগবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম কমেছে। কেজিতে এই মুরগির দাম কমেছে ৪০ টাকা পর্যন্ত। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা। সবজির বাজারে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতোই গাজর বিক্রি করছেন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া শসা ৪০ টাকা, পাকা টমেটো ৮০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি।

মাছ বাজার ঘুরে যায়, তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং মাছের কেজি বিক্রি ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা, শোল মাছের কেজি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, কৈ মাছের কেজি ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন