শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আ.লীগের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া একেবারেই বাতুলতা

আলোচনা সভায় সাত দলের নেতারা বলেন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২২, ১২:০১ এএম

এখন আর মানুষকে ভোট দিতে হয় না। আর ভোট দিলেও ফলাফল ঘোষিত হয় সরকারের ইচ্ছায়। তাই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া একেবারেই বাতুলতা ও হাস্যকর ব্যাপার। জাতীয় প্রেসক্লাবে গতকাল এক আলোচনা অনুষ্ঠানে সাত সংগঠনের (গণতন্ত্র মঞ্চ) নেতারা এসব কথা বলেন। ‘৭০ সালের মতো সংবিধান (সংস্কার) সভার নির্বাচন কেন প্রয়োজন?’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আওয়ামী লীগ দুবার একতরফাভাবে ক্ষমতায় এসেছে। এবার আর পুরোপুরি পারছে না, বিদেশিদের চাপ আছে। আর আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন করা যে একেবারেই বাতুলতা ও হাস্যকর ব্যাপার, তা সবাই জানে। কুমিল্লার নির্বাচনে সেটা আবারও প্রমাণ হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, সংবিধানের ক্ষমতা কাঠামো বদলানো ছাড়া এই সঙ্কটের আর কোনো সমাধান নেই। এটা স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট ক্ষমতা কাঠামো। এর পরিবর্তনের জন্য একটি গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে হবে। এই ফ্যাসিবাদি সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এই সরকার ১৪ সালের পর থেকে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে সব বিরোধীদলকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। গোটা নির্বাচন ব্যবস্থা একটা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আর কোনো ব্যবসায় এত বেশি লাভ করা সম্ভব না। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনকালীন নির্বাচন কমিশন কতটা অসহায় সেটা কুমিল্লাহ দেখা গেছে। এ নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন যেখানে একজন এমপিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, সেখানে জাতীয় নির্বাচনের সময় পুরো ৩০০ এমপির সরকারকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে?
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সংবিধানের আমূল একটা সংস্কার করতে হবে। সংবিধানে অনেক চমৎকার কথা আছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদ তৈরি হওয়ারও অনেক সুযোগ আছে। পদ্মা সেতুর জন্য সবাই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিচ্ছে। উনাকে ধন্যবাদ দিতে হবে কেন? এটাতো উনার দায়িত্ব।
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, এখন আর মানুষের ভোটের প্রয়োজন হয় না। জনগণ যেন ভোট দিতে পারে তার জন্য দরকার অন্তবর্তীকালীন সরকার।
তিনি বলেন, আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও ভোটের অধিকারের জন্য আন্দোলন করতে হয়। দেশ এখন পাকিস্তান আমলের মতো হয়ে গেছে। ব্যক্তি স্বাধীনতা নেই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। আজকে কথা বললেই মামলা দেয় সরকার। ১৬টি মামলা হয়েছে আমার নামে। মামলা এখন সরকার একটা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। মানুষকে জিম্মি করে সরকার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। আজকে একজন ইমাম কী মোনাজাত করবেন সেটাও এ ফ্যাসিস্ট সরকার নির্ধারণ করে দিচ্ছে।
নুর বলেন, আমাদের একটা গণ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে। অনেক দেশ, অনেক এজেন্সিও সরকারকে ফেলতে চায়। কিন্তু সরকার আছে পদ্মা সেতু নিয়ে সিরিজ নিউজ করার তালে। অতএব একটি গণ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন করতে হবে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, নির্বাচন বিষয়টিকে আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। ১৯৭২ সালের সংবিধানে ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, বিকেন্দ্রীকরণ হয়নি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা মানে জবাদিহিতা, বিকেন্দ্রীকরণ প্রতিষ্ঠা করা। আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি সেটা কখনোই পারবে না।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মিডিয়া ও প্রচার সমন্বয়ক সৈয়দ হাসিব উদ্দীন হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন