ব্যাপক সামাজিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া বামপন্থি সাবেক গেরিলা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করা এক ধনকুবেরের মধ্যে একজনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিতে যাচ্ছে কলম্বিয়া। জনমত জরিপগুলোতে একসময়কার এম-১৯ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্য গুস্তাভো পেত্রো ও টিকটক ভিডিওর মাধ্যমে সমর্থন জোগাড় করা রডলফো হার্নান্দেজকে একে অপরের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে দেখা যাচ্ছে। রাজধানী বোগোটার সাবেক মেয়র ও বর্তমান সেনেটর পেত্রো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগ, পেনশন সংস্কার ও অনুৎপাদনশীল জমির ওপর উচ্চ কর আরোপসহ নানান পদক্ষেপের মাধ্যমে অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি নতুন তেল ও গ্যাসের খনি অনুসন্ধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বলছেন। তার এ প্রতিশ্রুতি অনেক বিনিয়োগকারীরই চোখ কপালে তুলে দিয়েছে। নতুন অনুসন্ধান বন্ধ করে দিলেও আগের সব চুক্তি বহাল রাখারও আশ্বাস দিয়েছেন পেত্রো। “আমাদের সমগ্র জীবন আমরা যে জন্য অপেক্ষা করেছি, সেই সত্যিকারের পরিবর্তন থেকে আমরা মাত্র এক কদম দূরে। কোনো সন্দেহ নেই, আছে নিশ্চয়তা। আমরা ইতিহাস গড়তে যাচ্ছি,” ভোটের আগে টুইটারে লিখেছেন বামপন্থি এ রাজনীতিক। এ নিয়ে তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়া পেত্রো রোববারের ভোটে জিতলে তিনিই হবেন দেশের ইতিহাসের প্রথম বামপন্থি প্রেসিডেন্ট; কলম্বিয়াকে যুক্ত করবেন দক্ষিণ আমেরিকার সেসব দেশের তালিকায়, সা¤প্রতিককালে যারা প্রগতিশীলদের নেতৃত্বে বসিয়েছে। ৬২ বছর বয়সী এ রাজনীতিক একসময় বলেছিলেন, গেরিলা বাহিনীর সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় সেনাবাহিনী তাকে আটক করে ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছিল। যে কারণে তিনি প্রেসিডেন্ট হলে দেশটির সামরিক বাহিনীতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বুকারমাঙ্গার মেয়রের দায়িত্ব পালন করা হার্নান্দেজ পেদ্রোর তুলনায় অত পরিচিত রাজনীতিক না হলেও প্রথম দফার ভোটে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন। দুর্নীতি দূর করতে সামাজিক কর্মসূচিতে অর্থায়ন ও সরকারের আকার ছোট করার প্রতিশ্রুতি আছে তার। অবশ্য তার নিজের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ছেলের পছন্দের এক কোম্পানিকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত একটি টেন্ডারে সুবিধা পাইয়ে দিতে তার হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্তও চলছে। হার্নান্দেজ অবশ্য কোনো ধরনের অন্যায় করার কথা অস্বীকার করেছেন। পেত্রোর মতো তিনিও ২০১৬ সালে ফার্ক গেরিলাদের সঙ্গে হওয়া শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ও এখনও সক্রিয় ইএলএন গেরিলাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই ইএলএন গেরিলারাই ২০০৪ সালে তার মেয়েকে অপহরণ ও হত্যা করেছে বলে হার্নান্দেজ অভিযোগও করে আসছেন। ইএলন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, হার্নান্দেজের মেয়েকে অপহরণের সঙ্গে তাদের কোনো ধরনের যোগসাজশ নেই। হার্নান্দেজের মেয়ের মৃতদেহ না মেলায়, তার মৃত্যুর বিষয়টিও এখনও রহস্যাবৃত। পিপলস ডেচপাস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন