মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী হবেন খালেদা জিয়া

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৭ নেতাকে আমন্ত্রণ, বিএনপির প্রত্যাখ্যান সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী হবেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। যিনি তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার অবর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি বলেন, বিএনপিতে নেতৃত্বের সংকট নেই। বরং আওয়ামী লীগে নেতৃত্বের সংকট রয়েছে। আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ নেই। শেখ হাসিনা চলে গেলে কি যুদ্ধ হবে তা কেবল তারাই (আওয়ামী লীগ) বলতে পারবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কে সরকার প্রধান হবেন সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল বুধবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশে আর কোন নির্বাচন হবে না। তাকে সরে যেতে হবে। পরে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। তখনই না কেবল প্রশ্ন আসবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন।

সরকারের পক্ষ থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আপনারা যাবেন কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা মানুষ হত্যা করে, এদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মায় ডুবিয়ে মারতে চায়, যারা এদেশের সবচেয়ে প্রতিথযশা এবং বড় সম্মান অর্জন করে আনা ব্যক্তি, যিনি গোটা পৃথিবীতে নন্দিত মানুষ ড. মুহাম্মদ ইউনুস তাকে চুবিয়ে চুবিয়ে মারতে চায় তাদের আমন্ত্রণে বিএনপির কোনো নেতা বা কোনো কর্মী কখনোই যেতে পারে না।

সকালে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের উপসচিব দুলাল চন্দ্র সূত্রধর পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মহাসচিবসহ ৭ নেতার নামে আমন্ত্রণ কার্ড দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে হস্তান্তর করেন। আমন্ত্রণ পাওয়া অন্য নেতারা হলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম থান ও ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

পদ্মাসেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সত্যের অপলাপ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রেস কনফারেন্সে আবার পূর্বের মতোই তার স্বভাবসুলভ বক্তব্যের মধ্যে তিনি যে মিথ্যাচার করেন তার আবার প্রমাণ রেখেছেন। এর মধ্যে আছে ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার মাওয়া প্রান্তে সেতুর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এবং জাপান সরকারকে পুনরায় মানিকগঞ্জের আরিচা প্রান্তে সেতুর জন্য সমীক্ষা করতে বলেন। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে- জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সির পূর্ণাঙ্গ ফিজিবিলিটি রিপোর্ট যেটা হচ্ছে, মাওয়া এবং জাজিরা প্রান্তের বর্তমানে আছে। এই রিপোর্টের কপিও আছে আমাদের কাছে, আপনারা চাইলে দেখতে পারেন। এই রিপোর্টটি ২০০৪ সালে মার্চের ৩ তারিখ সাবমিট করা হয়েছিলো। এটা হচ্ছে ইন্টারিম রিপোর্ট অন দ্যা ফিজিবিলিটি স্টাডি অব পদ্মা ব্রিজ।

তিনি বলেন, একটা ফিজিবিলিটি রিপোর্ট অফিসিয়ালি দেয়ার পরেও কী করে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলতে পারেন যে, বিএনপি গভর্মেন্ট আসার পর এটাকে বন্ধ করে দেয় এবং এটা কোনো কাজ করেনি। এই ফিজিবিলিটি রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই তারা পরবর্তিকালে কাজ করেছেন। তখনই এডিবি, বিশ্বব্যাংক ও জাপান যোগাযোগ করে যে ফান্ড তার জন্য আলোচনা করা হয়েছিলো। কিন্তু সময়ের অভাবে সেটা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। অথচ তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সমানে বলে যাচ্ছেন বিএনপি সরকার এটা বন্ধ করে দিয়েছিলো।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কাজ শুরু করার পরে বিশ্বব্যাংক যখন ফান্ড বন্ধ করে দিলো দুর্নীতির কথা বলে তখন থেকেই সমস্যাটা শুরু হয়েছে। সেটার জন্য তিনি বিএনপি ও ড. ইউনুসকে দায়ী করেন। কোথায় পেলে তিনি? কিভাবে দেখলেন তিনি যে, দুর্নীতির কথা বিএনপি বা ড. ইউনুস তুলেছে। বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির কথা তোলার পরে দেশবাসী জানল, আমরা জানলাম সেখানে দুর্নীতি হচ্ছে। আজকে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট এখন ৩০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সত্যের অপলাপ এবং বিএনপিকে জনগণের সামনে হেয়-প্রতিপন্ন করার চেষ্টা-এগুলোর কোনটাই কাজ হবে না। কারণ দেয়ার আর টুলস এন্ড ডুকমেন্টস।

মির্জা ফখরুল সমীক্ষার বিবরণী তুলে ধরেন বলেন, এই সমীক্ষার সামারীতে বলা হয়েছে যে, এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৫৮ কিলো মিটার, প্রস্থ ২৫ মিটার, পাইলের সংখ্যা ২৬৮টি, নদী শাসন ১৬ দশমিক ৩০ কিলোমিটার, সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য (উভয় পার্শ্বে) ১২ দশমিক ১৬৩ কিলো মিটার, প্রকল্পের (মাওয়া-জাজিরা অবস্থানে) ইআইআরআর ১৪ দশমিক ৮০% রেলসহ, বিসিআর ১ দশমিক ৩৮, ভূমির পরিমান ৭৯০ দশমিক ৫০ হেক্টর (অধিগ্রহন-৬১৬ দশমিক ৫ হেক্টর, হুকুম দখল ১৭৪ দশমিক ০ হেক্টর), ক্ষতিগ্রস্থের সংখ্যা ৭০সিআর ১ দশমিক ৩৮, ভূমির পরিমান ৭০ থেকে ৮০ হাজার। ২০১৫ সালে মাওয়া-জাজিরা অবস্থানে পদ্মাসেতু দিয়ে দৈনিক ২১ হাজার ৩০০ টি যানবাহন পারাপার করবে এবং ২০২৫ সালে হবে ৪১ হাজার ৬শ টি। এই সেতুর নির্মাণ কাজ ২০০৮ সালের অক্টোবর নাগা; শুরু এবং ২০১৩ সালের মার্চ নাগাদ শেষ হবে। এটাকেই কেন্দ্র করে তারা পদ্মাসেতুর পরবর্তি কাজ করেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সমীক্ষা অনুযায়ী মাওয়া-জাজিরা অবস্থানে পদ্মাসেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৮৭ দশমিক ৭৭ কোটি টাকা। বিস্তারিক নকশা প্রনয়ন, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ ও জমি অধিগ্রহনসহ অন্যান্য প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করার পর ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে এই সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে আশা করা যায়। এই সেতু নির্মাণে সময় লাগবে প্রায় ৫৪ মাস। সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
আবুল ২৩ জুন, ২০২২, ১:৩৫ এএম says : 0
বিএনপি পুরনো এক দল। তাদের অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এমনকি এখন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন হলে তারা জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
Total Reply(0)
আবুল ২৩ জুন, ২০২২, ১:৩৭ এএম says : 0
বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া নয়তো তারেক রহমান হবে । এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই
Total Reply(0)
ইমরান ২৩ জুন, ২০২২, ১:৩৮ এএম says : 0
মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশে আর কোন নির্বাচন হবে না। তাকে সরে যেতে হবে। পরে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। তখনই না কেবল প্রশ্ন আসবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন।
Total Reply(0)
ইমরান ২৩ জুন, ২০২২, ১:৪০ এএম says : 0
আমাদের দেশের নেতারা এক টেবিলে বসে না, এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। তারা এক থাকলে এ দেশ অনেক আগেই উন্নত হয়ে যেতো। দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সবাই এক থাকা দরকার
Total Reply(0)
Syed Rahman ২৩ জুন, ২০২২, ৯:৫২ এএম says : 0
Of Course Khaleda will be prime minister.
Total Reply(0)
Mohmmed Dolilur ২৩ জুন, ২০২২, ৫:৫২ এএম says : 0
আপনারা আওয়ামী লীগ বিএনপির কয়েক জন কে পদ্মা সেতু উদ্বোধনীতে যেতে বলেছেন,কিন্তু যদি ঠুস করে ফেলে দেন,আপনারা সেটি করবেন না,তার বিশ্বাস কি,এত এব নেতারা সেখানে যাবে না।
Total Reply(0)
jack ali ২৩ জুন, ২০২২, ৬:১০ পিএম says : 0
আমরা কুরআন দিয়ে দেশ শাসন করতে চাই আমরা মুসলিম আমরা কাফেরদের মানব রচিত আইন গণতন্ত্রকে মানি না কেননা এটা হচ্ছে খুব বড় কুফরী আর যারা এটা মানে তারা হচ্ছে কাফের
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন