শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

উদ্বোধনী মঞ্চ হচ্ছে পদ্মা সেতুর আদলেই

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২২, ১০:৪০ এএম

স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আর মাত্র দুই দিন বাকি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই সেতুর আদলেই তৈরি করা হচ্ছে মঞ্চ। এগারোটি পিলারের ওপর দশটি স্প্যান বসিয়ে তৈরি করা হচ্ছে মঞ্চ। মঞ্চের ঠিক সামনে পানিতে ভাসতে থাকবে বিশাল আকৃতির একটি নৌকা। দেখে মনে হবে পদ্মা সেতুর পাশ দিয়ে বড় একটি নৌকা চলছে। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঐতিহাসিক রূপ দিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
সরেজমিন বাংলাবাজার ঘাটের উদ্বোধনী মঞ্চ এলাকায় দেখা যায়, সভাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিশাল এ আয়োজন ঘিরে পদ্মা পাড়ের মানুষের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরেই এখন সব ব্যস্ততা। প্রায় প্রতিদিনই সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেতু এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন। অনুষ্ঠান সফল করতে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জনসভা ঘিরে তিন বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে আলোকসজ্জার কাজ করছেন শ্রমিকরা। মঞ্চের চারপাশে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হচ্ছে এই মঞ্চ। তারা অস্ত্র হাতে সার্বক্ষণিক স্পটে থাকছেন। এ ছাড়াও যেকোনও ধরনের নাশকতা এড়াতে গোয়েন্দা বাহিনীর কর্মকর্তারাও তৎপর রয়েছেন।

প্রস্তুত জনসভাস্থল : উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে একসময়ের পদ্মাপাড়ে অবহেলিত অঞ্চল শিবচরে বইছে উৎসবের আমেজ। শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ২৫ জুন শনিবার পদ্মা সেতুর দুই প্রান্ত মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীরে এসে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন। শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় জনসভায় যোগ দেবেন। জনসভাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রায় ১৫ একর জমির ওপর ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য মঞ্চের ভেতরে ও বাইরে বসানো হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। থাকবে দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা। র‌্যাব, পুলিশ, সেনা সদস্য, এসএসএফসহ নানা বাহিনীর তৎপরতায় এ এটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে রূপ নেবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। সভাস্থলে ৫০০ অস্থায়ী শৌচাগার, ভিআইপিদের জন্য আরও ২২টি শৌচাগার, সুপেয় পানির লাইন, তিনটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল, নারীদের আলাদা বসার ব্যবস্থা, প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার আয়তনের সভাস্থলে দূরের দর্শনার্থীদের জন্য ২৬টি এলইডি মনিটর, ৫০০ মাইকের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া নদীপথে আসা মানুষের জন্য ২০টি পন্টুন তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভ্রাম্যমাণ মোবাইল টাওয়ার নির্মাণ করছে।

তিন বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে আলোকসজ্জার কাজ চলছে : জনসভার মঞ্চ তৈরির কাজ করছে ক্যানভাস বাংলাদেশ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নকর্মী কবির হোসেন জানান, ব্যতিক্রমী এই মঞ্চ তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। কয়েকদিন ধরে তারা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। অনেকটা সেতুর আদলেই তৈরি করা হবে উদ্বোধনী মঞ্চ। এ ছাড়াও কয়েক স্তরের নিরাপত্তা শেড থাকবে। মঞ্চের সামনে পানি থাকবে। তার ওপর ছোট-বড় বেশ কয়েকটি নৌকা ভাসতে থাকবে। এখন চলছে সাজসজ্জার কাজ। পুরো কাজের প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। শনিবারের আগেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।’
জনসভাস্থলের দুই বর্গকিলোমিটার জায়গা তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পেয়েছে পিয়ারু সরদার অ্যান্ড সন্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মোজ্জামেল হক বলেন, ‘সভাস্থলে ওয়াচ টাওয়ার, এলইডি মনিটরসহ নিরাপত্তাবিষয়ক সব ধরনের কাজ তারা শেষ করেছেন। স্মরণকালের সেরা আয়োজন হবে এখানে। জনসভায় আসা অতিথিদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।’

এগারোটি পিলারের ওপর দশটি স্প্যান বসিয়ে তৈরি করা হচ্ছে মঞ্চ : মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ মোল্লা বলেন, ‘পদ্মা সেতু দক্ষিণ অঞ্চলের একুশ জেলার মানুষের প্রাণের দাবি ছিল। অনেক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশ সরকার সেতুটি করেছে। আগামী ২৫ জুন সেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সারা বাংলাদেশেই আনন্দমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। বিশেষ করে, দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আনন্দ বেশি বিরাজ করছে। সেতুটি উদ্বোধন হলে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি মিলবে। কৃষকরা তাদের পণ্য দ্রুত রফতানি করতে পারবেন। আগামী শনিবার আমরা শিবচর থেকে প্রায় এক লাখ মানুষ জনসভায় যাবো। ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন ইউনিয়নে ও ওয়ার্ড পর্যায়ে মিটিং করেছি। আমাদের সব প্রস্তুতি শেষের পথে।’
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জনসভায় ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। তাদের সব ধরনের সুবিধা দিতে জেলা প্রশাসন প্রস্তুতি নিয়েছে। এ ছাড়া ২০ শয্যার একটি এবং ১০ শয্যার আরও দুটি ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাকেন্দ্র খোলা হয়েছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও থাকবে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা। জরুরি স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য পুনর্বাসন এলাকায় থাকা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো ব্যবহার করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
jack ali ২৩ জুন, ২০২২, ১:২৮ পিএম says : 0
আমাদের কষ্টের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে এরকম অপ্রয়োজনীয়' খরচ করা হচ্ছে এর জন্য আল্লাহ গজব পড়বে আপনাদের উপর কে আপনাদের কে অধিকার দিয়েছে আমাদের ট্যাক্সের টাকা এইভাবে খরচ করা
Total Reply(0)
jack ali ২৩ জুন, ২০২২, ১:২৭ পিএম says : 0
মানুষের বিবেক বলে যে মানুষকে সহায়তা করো এই পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে নিকৃষ্ট সেইসব ব্যক্তি যারা তাদের বিবেককে কাজে লাগায় না বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ এখন বন্যার মত না খেয়ে না দিয়ে রয়েছে তাদের দিকে না তাকিয়ে উনারা এখন পদ্মা সেতুর জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে উদ্বোধন করবে আরে টাকা কাদের টাকা এটাকি আমাদের প্রাইম মিনিস্টার এর ব্যক্তিগত টাকা না আমাদের কষ্টে অর্জিত ট্যাক্সের টাকা আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে এখনো সময় আছে এসব বাদ দেন জনগণকে জনগণের টাকা দিয়ে সাহায্য করুন
Total Reply(0)
মোঃ মহোসীন কবির ২৫ জুন, ২০২২, ৯:০৪ পিএম says : 0
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মঞ্চ, টয়লেট এবং সর্বমোট কত টাকা খরচ হয়েছে?
Total Reply(0)
মোঃ মহোসীন কবির ২৫ জুন, ২০২২, ৯:০৭ পিএম says : 0
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মঞ্চ, টয়লেট এবং সর্বমোট কত টাকা খরচ হয়েছে? দয়া করে উত্তর দিবেন .
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন