বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে অপরিবর্তিত রয়েছে টাঙ্গাইলের বন্যা পরিস্থিতি। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে ধলেশ^রী নদীর পানি। এখনও প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। জেলার নিম্নাঞ্চল, নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি, বসতঘর ও রাস্তাঘাট তলিয়ে আছে পানির নিচে। জেলার কয়েকটি নদীর পানি অপরিবর্তিত থাকায় বন্যা কবলিত উপজেলা গুলোতে বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি। বৃহস্পতিবার ২৩ জুন সরেজমিনে এ দৃশ্য দেখা যায়। তবে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে লাখেরও বেশি মানুষ।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার টাঙ্গাইল সদর উপজেলা, বাসাইল, নাগরপুর, কালিহাতী, ভুঞাপুর, গোপালপুর উপজেলার সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমির আউশ, পাট, তিল, বুনা আমন পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও বন্যা কবলিক এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, গোখাদ্য ও জ্বালানির তীব্র সংকট। অপরদিকে বন্যার পানি বাড়িঘরে প্রবেশ করায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে অনেকেই। পানি বৃদ্ধির কারনে অনেকেই আবার হারিয়েছে দিনমজুরের কাজ। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। তাদের অভিযোগ, সিলেটে বন্যা দেখা দেওয়ায় সবার নজর সেদিকে। কিন্তু আমরা এখানে মানবেতর জীবন যাপন করছি সে দিকে কারো কোন খেয়াল নেই। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোন প্রকার ত্রান সহায়তা পৌছায়নি। আমাদের ফসলি জমি পানির নিচে রয়েছে। বন্যার এই পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে আমাদের সব ফলস নষ্ট হয়ে যাবে। তখন আমরা খাবো কি। আমাদের সাহায্যের জন্য তো কেউ আসে না। এখন আমরা কি করবো।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, বন্যার পানি এক সপ্তাহের মধ্যে নেমে গেলে ফসলের কিছুটা ক্ষতি হবে। তবে সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে পুরোটাই ক্ষতি হবে। পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা করা হবে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। কয়েকটি এলাকায় নদী ভাঙনও দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙন রোধে যেসব জায়গায় কাজ করা সম্ভব সে সব এলাকায় কাজ করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন