বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

গারো পাহাড়ে বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা

এস. কে সাত্তার, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২২, ১২:০২ এএম

সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলার গারো পাহাড়ে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বাড়ছে কামাদের ব্যস্ততা। অবশ্য প্রত্যেক কোরবানির ঈদেই হাতুড়ির পিটুনিতে টুং টাং শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে যায় গোটা দেশের বিভিন্ন জেলার কামার পাড়াগুলোয়। ব্যাপকভাবে বেড়ে যায় কামারদের ব্যস্ততা। হাতুড়ি পেটা শব্দে মুখর এখন শেরপুর জেলা ও গারো পাহাড়ের কামার বাড়িগুলোতে। রাত দিন তপ্ত আগুণে পুড়ে লাল টুকটুকে ইস্পাত গলিয়ে পিটিয়ে চলছে, দা, বটি, ছুরি তৈরির কাজ। দম ফেলার ফুসরত নেই কামারদের। কাজের চাপে ভুলে যাচ্ছেন খাওয়ার কথা। সাতসকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে টুং টাং শব্দে কাজ করে চলেছেন কামারা। গা এবং কপাল ঘামায় বারবার মুছছেন গামছায়। হাতুড়ি পেটানোর শব্দে মুখরিত কামার বাড়ি। একজন বড় ভারি হাতুড়িতে পেটাচ্ছেন অন্যজন পেটাচ্ছেন ছোট হাতুড়িতে। এক ধ্যানে পেটিয়ে যাচ্ছেন আগুণে পুড়া লাল টকটকে লোহার খন্ড। কাজের ফাঁকে কথা হয় এক কামারের সাথে। তিনি বলেন, না ভাই নতুন কাম কমই। বেশিরভাগ মানুষ ভোঁতা দা, ছুড়ি, চাকুতে ধার (শান ) দিয়ে নিচ্ছেন। তাই রোজগারও কম। হলে কি হবে। এটাইতো সিজন। এর পরতো বসে বসে কাটাতে হবে দিন। এক হাতে হাপর টানছেন অন্য তপ্ত লাল টকটকে লোহা পেটাচ্ছেন মাঝে মধ্যে ঘাম মুছে নিচ্ছেন। আর অন্যজন হাতুড়ি পেটানোর ফাঁকে ফাঁকে কয়লা ও বাতাস দিচ্ছেন। হাট-বাজার ঘুরে কামারদের ভাসমান দোকানে দেখা যায় ক্রেতাভীড়। দা, ছুরি, চাকু, বটি বিক্রি বেড়েছে বহুগুণ। ওই কামার আরো বলেন, পরিশ্রমের তুলনায় লাভ কমই হচ্ছে। দিনভর আগুনের পাশে বসে কাজ করতে হয়। তাই রাতে ব্যথার টেবলেট খেয়ে ঘুমাতে হয়, তা ছাড়াও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। অর্থাৎ লাভের ধান টিয়াই খায়। ভাসমান এক কামার বলেন, সারা বছর বেচাকেনা মোটামুটি হয়। কোরবানির ঈদ সামনে বেশি বিক্রি হয়। তৈরি চাহিদা বাড়ায় লাভ হয় কমই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঝিনাইগাতী উপজেলার এক কামার বলেন, কোরবানি ঈদে প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের উপকরণ তৈরি করেন। বাজারে লোহা ও কয়লার দামও বেড়েছে। সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। এছাড়া আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব পণ্য তৈরির বেশকিছু প্রযুক্তি নির্ভর হওয়ায় কামার সম্প্রদায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে। তাদের আশা সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পেলে এ শিল্পটি ঘুরে দাঁড়াবে।

কয়েকজন ক্রেতা বলেন- কুরবানি ঈদের আগেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম না কিনলে কাছাকাছি সময়ে দাম বেড়ে যায়। তাই আগেই কিনে ফেলছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন