চারদিকে থৈ-থৈ যমুনার পানি। নৌকা ছাড়া পায়ে হেঁটে কোথায় যাওয়ার সুযোগ নেই। বয়সের ভারে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না তিনি। পরিবারের লোকজনদের মাধ্যমে উঠ বস করতে হচ্ছে তার। বসত-বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করায় উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য দৌঁড়ঝাপ বানভাসিদের। অভাব-অনটনে চরম অসহায়ত্বের পেটে পাথর বেঁধেই খোলা আকাশের নিচে শুয়ে আছেন তিনি। তার বয়স ৮৫ হলেও মেলেনি বয়স্ক ভাতা।
বলছি টাঙ্গাইলের ভূঞাপর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের যমুনা চরাঞ্চলের খানুরবাড়ি গ্রামের মৃত হাছেন আলীর স্ত্রী জয়গন বেগমের কথা। বানভাসিদের সংবাদ সংগ্রহে গেলে এমন চিত্র দেখা যায়।
জয়গন বেগমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বন্যার পানি তার বাড়িতে প্রবেশ করেছে। তার সন্তানরা ঘরসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র সরানোর কাজে ব্যস্ত। কিন্তু জয়গন বৃদ্ধা হওয়ায় তিনি ঠিকমতো হাঁটা চলা করতে পারে না। তাই তিনি চৌঁকির উপরে অসহায়ের মতো শুয়ে আছেন। কপালে নানা দুশ্চিন্তায় ভাজ পড়েছে। ঠিকমতো কথাও বলতে না পারায় নিরবে চোখের পানি ফেলছেন।
স্থানীয় জোয়াদ্দার হোসেন জোয়াদ জানান, জয়গনের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। তার স্বামী প্রায় ২৬ বছর আগে মারা যায়। ছেলেই তাকে দেখাশুনা করছে আসছে। শেষ বয়সে এসেও তিনি এখন পর্যন্ত বয়স্ক ভাতাসহ কোন ধরণের কার্ড পায়নি। শুধু তাই নয়, তার নিজস্ব বসতবাড়ি নেই। স্থানীয় মেম্বার ও ইউপি চেয়ারম্যানের থেকেও পায়নি কোন ধরণের সাহায্য-সহযোগিতা।
এ ব্যাপারে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার জানান, বৃদ্ধ বয়সেও সে কেন বয়স্ক বা বিধবা ভাতা পায়নি সেটা মেম্বারদের থেকে জেনে দ্রুত বয়স্ক ভাতা কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শহিদুজ্জামান মাহমুদ জানান, বয়স্ক ভাতার বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা তালিকা করে। তবে, বৃদ্ধাটির বিষয়ে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমাকে তার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন