শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গা নির্যাতন

বেপরোয়া সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুরতার পক্ষে সু চি’র বক্তব্য নিয়ে নানা প্রশ্ন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে নিজ ঘরে পরবাসী রোহিঙ্গা মুসলিমরা এখন দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন। জঙ্গি দমনের নামে সেনাদের চালানো অব্যাহত অভিযানে এরই মধ্যে সেখানকার বহু মুসলিম প্রাণ হারিয়েছেন। স্বজন হারানো উদ্বিগ্ন অনেকে জ্বালিয়ে দেয়া বাড়িঘরের কাছে খোলা আকাশে রাত কাটাচ্ছেন। মিয়ানমারে নিরীহ রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনী অবাধ নির্যাতন সহ্যের সকল সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে দেশটির গণতন্ত্রকামী নেত্রী ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি’র নীরবতা স্পষ্ট। এটা সবারই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁর এই নীরবতাকে এক রকমের নিষ্ঠুরতা বলে অনেকেই মনে করছেন। অং সান সু চি বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী যা করছে তা আইনসিদ্ধভাবেই করছে। তার এই বক্তব্যে নানামুখী প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকেই এটাকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সু চি’র চরম নিষ্ঠুরতা বলে অভিহিত করেছেন।
গত অক্টোবরের শুরুর দিকে রোহিঙ্গাদের ওপর এই নির্যাতন শুরু। তখন বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা মুসলিম-অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়িতে সন্ত্রাসী হামলায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিহত হন। এরপরই অভিযানে নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। প্রথমদিকে স্থলবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অভিযান সীমিত থাকলেও অতি সম্প্রতি তাতে যোগ হয়েছে হেলিকপ্টার গানশিপ। রাখাইন রাজ্যে নিষিদ্ধ রয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও ত্রাণকর্মীদের প্রবেশও। ফলে প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে পরিষ্কার কিছু জানা না গেলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছেন নারী ও শিশুদের ওপর গণধর্ষণ, নির্বিচারে হত্যা ও গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করছে সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের ইতিহাসের এটা সাম্প্রতিকতম অধ্যায়। মিয়ানমারে ১০ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস। তবে বিপুলসংখ্যক এই মুসলিম জনগোষ্ঠীকে দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রদায় অবৈধ অভিবাসী বলে বিবেচনা করে তাঁদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করে থাকে। দীর্ঘ সেনাশাসন ও পরে সেনাসমর্থিত সরকারের ক্ষমতার অবসান ঘটিয়ে মিয়ানমারে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়ী হয় সু চির নেতৃত্বাধীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর সু চি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দেশের নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তাঁর হাতে। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে, কী করছেন তিনি?
কার্যত গোটা মিয়ানমারের এই নেতা বলতে গেলে এখন নীরব। গত মাসে জাপান সফরে যাওয়ার সময় অবশ্য তিনি চলতি সহিংসতার ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের প্রতিশ্রুতি দেন। তবে সে সময়ও সেনাবাহিনীর সমালোচনা করা থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন। আর রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের উত্তেজনাপূর্ণ রাজনীতির গতিধারায় আটকে আছেন তিনি।
মিয়ানমারে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মর্যাদাও নেই এই রোহিঙ্গাদের। দেশটির ১৯৮২ সালের এক আইনবলে নাগরিকত্বের স্বীকৃতি পেতে ১৮২৩ সালের আগে থেকে সেখানে বসবাসের প্রমাণ হাজির করতে হয় ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সদস্যদের। জাতিসংঘ বলছে, রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা মুসলিমরা বিশ্বের সবচেয়ে বঞ্চিত সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর একটি। আর তাদের অধিকাংশের বসবাস মিয়ানমারের দারিদ্র্যপীড়িত পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে। দেশের ভেতর চলাচল ও কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের রয়েছে বিধিনিষেধ। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা বলছে, ২০১২ সালে ধর্মীয় সহিংসতা শুরুর পর রাখাইন থেকে পালিয়ে গেছেন ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। সাগরের দুর্গমযাত্রা উপেক্ষা করে তাঁদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রবণতা চলছে এখনো। এএফপি, ওয়েবসাইট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
আরমান ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ৭:৫০ এএম says : 0
সুচির নোবেল প্রত্যাহার করা হোক এবং তাকে গনহত্যার জন্য বিচারের আওতায় আনা হোক।
Total Reply(1)
Habibur Rahman Chowdhury ৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৭:৩৫ পিএম says : 4
সুচির নোবেল প্রত্যাহার করা হোক এবং তাকে গনহত্যার জন্য বিচারের আওতায় আনা হোক।
২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১০:৩৫ এএম says : 3
এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন মুসলিম হত্যা বন্ধ করতে হবে
Total Reply(0)
Nasim Ahmed ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৩১ পিএম says : 0
কোথায় আজ মানবাধিকার সংস্থা গুলো। চুপ কেন?? সংখ্যা লগু হওয়া কি তাদের অপরাধ, না কি মুসলিম হওয়া তাদের অপরাধ। ইসালামিক দেশ গুলো কেন তাদের পাশে দাড়াচ্ছে না? হে আল্লাহ তুমি তাদের কে জালেমদের হাত থেকে রক্ষা কর। তুমি ছাড়া তাদেরকে রক্ষা করার আর কেও নেই।
Total Reply(0)
Tarequl Islam ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৩৫ পিএম says : 0
মনে হচ্চে মানবাধীকার সংস্থা মুসলমানদের জন্য না। তাই চুপ করে বসে আছে। আজ যদি মুসলিম বাদে অন্য কেউ মারা পড়তো তখন দেখতেন কত সংস্থা হাজির হতো।
Total Reply(0)
Bayejid Khan ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৩৮ পিএম says : 1
avaba ar kotodin cholba....ar ki protikar nai...
Total Reply(0)
Manir Uz Zaman ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৩৯ পিএম says : 1
Stop stop Stop stop Stop stop Stop stop killing
Total Reply(0)
আলআমিন ৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৩:০৭ পিএম says : 0
হে আল্লাহ তোমি মুসলমানদের রক্ষা কর আর বৌদ্ধদেরকে হেদায়েত দাও
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন