শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

আরএসও বিলুপ্ত, এর কোনো কার্যক্রম নেই : রোহিঙ্গা নেতা

বার্মিজ সরকার যা বলেছে সবই মিথ্যা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বার্মিজ সরকার এ পর্যন্ত যা বলছে তা সবই মিথ্যা বলে মন্তব্য করেছেন একজন রোহিঙ্গা নেতা। ব্রিটেনে বসবাসরত রোহিঙ্গা নেতা নুরুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, বার্মিজ সরকার এ পর্যন্ত যা বলেছে সবই মিথ্যা কথা, বিশ্বাসযোগ্যই না। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানের প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট পরিস্থিতির পেছনে আরএসওর বিদ্রোহী তৎপরতা অনেকাংশে দায়ী বলে মিয়ানমারের সরকার দাবি করছে। তবে আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গনাইজেশনের চেয়ারম্যান জনাব ইসলাম বলেন, ওই সংগঠন বিলুপ্ত। এর কোনো কার্যক্রমই নেই। বার্মার কর্তৃপক্ষের এ বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য না। রোহিঙ্গা এই নেতা বলেন, আরাকানে নতুন করে সংকট সৃষ্টির পর কমপক্ষে পাঁচশো মানুষ মারা গেছে। দেড়শোর বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণকে তারা ব্যবহার করছে অস্ত্র হিসেবে।
এদিকে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীদের নজরদারির মাঝেও মিয়ানমার থেকে গত কয়েকদিনে বহু রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশু কক্সবাজারের টেকনাফে ঢুকে পড়েছে। হাজার হাজার রোহিঙ্গা ঢোকার জন্য নাফ নদীর ওপারে জড়ো হচ্ছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। তবে জনাব ইসলাম বলেন,  বাংলাদেশের প্রশংসা করতে হবে। সেখানে অনেক রোহিঙ্গা ইতোমধ্যেই আছে। প্রায় ৪/৫ লাখ রোহিঙ্গা আছে সেখানে। সেখানকার লোকজনের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
তিনি বলেন, ২০১২ সালে যখন রোহিঙ্গারা আসতে চেষ্টা করেছিল, বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল। বাংলাদেশ কিন্তু পারেনি। পরে কিছু লোক ঠিকই ঢুকে গেছে এবং মানবপাচারের শিকার হয়েছিল।
রোহিঙ্গাদের সর্বসাম্প্রতিক সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন এই রোহিঙ্গা নেতা। বার্মিজ সরকার রোহিঙ্গাদের যেখানে জুলুম নির্যাতন করছে সেখানে তাদের আভ্যন্তরীণ কোনো সুরক্ষা নেই। এখন আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নাই, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে। নিরাপত্তা পরিষদে এটা আলোচনা করে এ বিষয়ে বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে হবে।
বাংলাদেশেও আসতে দিচ্ছেন না, বার্মাতে থাকতে পারছে না। তাহলে যাবে কোথায় তারা? প্রশ্ন তুলে রোহিঙ্গা এই নেতা বলেন, মংডু জেলায় তাদের জন্য একটি নিরাপদ জায়গা তৈরি করে দিতে হবে। সূত্র : বিবিসি।

রোহিঙ্গাদের সহযোগিতার অভিযোগে ৭ জনকে সাজা : আটক ১১৬
টেকনাফ উপজেলা সংবাদদাতা
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করার অভিযোগে ৭ দালালকে সাজা প্রদান করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় মিয়ানমারের ১১৬ রোহিঙ্গা মুসলমানকে আটকের পর স্বদেশে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি।  গতকাল বেলা ১১ টার দিকে টেকনাফের কয়েকটি এলাকা থেকে বিজিবি ৬ ও টেকনাফ থানা পুলিশ সলিম উল্লাহ নামে একজনসহ ৭ দালালকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন, মিয়ানমারের রইক্ষ্যং-এর সুলতান আহমদের ছেলে সলিম উল্লাহ (৪০), টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়া এলাকার মৃত আব্দুস শুক্কুরের ছেলে মো. শফি উল্লাহ (৪২), একই এলাকার মৃত ওবাইদুর রহমানের ছেলে শামসুল আলম (৪৫), নাজির আহাম্মদ কালুর ছেলে সেকান্দর বাদশা (২৮), হ্নীলা নাইক্ষ্যংখালী এলাকার আবুল হাসিমের ছেলে মো. আলম (৪৫), দমদমিয়া এলাকার সালামত উল্লাহর ছেলে মো. জুবাইর (২২), একই এলাকার বাঁচা মিয়ার ছেলে মো. ইদ্রিস (২৪) ও হ্নীলা মোচনীপাড়া এলাকার নূরুল ইসলামের ছেলে মো. জালাল উদ্দীন (৩৩)।   
 জানা গেছে, নাফ নদীতে রোহিঙ্গা বোঝাই ৮ টি ট্রলারে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ১১৬ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার খবর পেয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। পরে হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা থেকে শিশুসহ ১১৬ জন রোহিঙ্গা নারী পুরুষকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি। বৃহস্পতিবার ভোরে এইচ কে আনোয়ারের প্রজেক্ট থেকে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। এর আগে তাদের মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তুষার আহম্মেদের নেতৃত্বে বিজিবি ও পুলিশের পৃথক যৌথ টাস্কফোর্স অভিযানে  ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আটক শফি উল্লাহ, শামসুল আলম, সেকান্দর বাদশাকে ২ মাসের এবং মো. আলম, মো. জুবাইর, মো. ইদ্রিস ও মো. জালাল উদ্দীনকে এক মাস করে সাজা প্রদান করা হয়। পরে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্তদের কক্সবাজার জেলে প্রেরণের জন্য টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
২ বর্ডারগার্ড ব্যাটেলিয়ান অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু জার আল জাহিদ জানান, টেকনাফ সীমান্তের নাফ নদীতে রোহিঙ্গা বোঝাই ১৪টি নৌকা প্রবেশের চেষ্টা করার খবর পেয়ে বিজিবির টহল টিমকে অবহিত করা হয়। এরপর সকালের দিকে বিজিবি সদস্যরা দেশীয় নৌসীমা থেকে নৌকাগুলোকে মিয়ানমারের দিকে ফেরত পাঠায়। তবে সীমান্ত পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত রয়েছে বলে জানায়।
এছাড়া সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন