শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

করোনার সংক্রমণ ১১০ দেশে বাড়ছে : ডব্লিউএইচও

বিশ্বজুড়ে একদিনে সোয়া ৭ লাখ শনাক্ত, মৃত্যু প্রায় দেড় হাজার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০২২, ৮:২৯ পিএম

করোনা মহামারি এখনো শেষ হয়নি জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্কতা জারি করে বলেছে, ১১০টি দেশে ফের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ডবিøউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস বলেন, করোনা নিয়ে গবেষণা হুমকির মুখে পড়েছে। কারণ, করোনার জিনোম সিকোয়েন্স কমে গেছে। ফলে ওমিক্রন এবং ভবিষ্যতে করোনার নতুন ধরনগুলো চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়বে। গেব্রেয়াসুস বলেন, করোনা অনেক জায়গায় বিএ.৪ ও বিএ.৫-এ রূপ নিয়েছে। ১১০টি দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। ফলে পুরো বিশ্বে করোনার সংক্রমণ ২০ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ছয়টি অঞ্চলের মধ্যে তিনটিতে মৃত্যু বেড়েছে। তবে তুলনামূলকভাবে বিশ্বে মৃত্যু হার স্থিতিশীল আছে বলে জানান তিনি। করোনা ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ইস্যুতে গণমাধ্যমে দেওয়া ব্রিফিংয়ে গেব্রেয়াসুস কমপক্ষে ৭০ শতাংশ জনগণকে টিকা দিতে সব দেশের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। গত দেড় বছরে বিশ্বব্যাপী ১ হাজার ২০০ কোটিরও বেশি টিকা বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ডবিøউএইচওর প্রধান গেব্রেয়াসুস বলেন, নিম্ন আয়ের দেশগুলোর কয়েক লাখ মানুষ, হাজারো স্বাস্থ্যকর্মী ও বয়স্ক ব্যক্তিরা টিকার বাইরে রয়েছেন। এর অর্থ হলো, তারা করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। মাত্র ৫৮ শতাংশ দেশ ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পেরেছে বলে জানান গেব্রেয়াসুস। নিম্ন আয়ের দেশগুলোর এই লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ নয় বলে জানান তিনি। উদাহরণ হিসেবে রুয়ান্ডার কথা বলেন তিনি। দেশটিতে করোনার দ্বিতীয় টিকা নেওয়ার হার ৬৫ শতাংশের নিচে। এ সময় মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ নিয়েও উদ্বেগ জানান গেব্রেয়াসুস। গেব্রেয়াসুসকে উদ্ধৃত করে ডবিøউএইচও এক টুইটে বলেছে, গেব্রেয়াসুস মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ, এটি অন্তঃসত্ত¡া ও শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে তিনি নাইজেরিয়ার কথা বলেন। ২০১৭ সাল থেকে দেশটিতে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এ বছর সেখানে আরও বেশি সংক্রমণ দেখা গেছে। ইতিমধ্যেই ৫০টিরও বেশি দেশে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে। সামনে আরও অনেক দেশেই মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়বে। ডবিøউএইচও প্রধান বলেন, নিম্ন-আয়ের দেশগুলোর লাখ লাখ স্বাস্থ্যকর্মী এবং বয়স্ক মানুষসহ বহু মানুষ এখনও টিকা পাননি। এর মানে তারা ভাইরাসের ভবিষ্যৎ ঢেউয়ের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেন, মাত্র ৫৮টি দেশ ৭০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে। তবে কেউ কেউ বলেছেন, নিম্ন আয়ের দেশগুলোর পক্ষে এটি সম্ভব নয়। চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ১৫০০ মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় সোয়া ৭ লাখে। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য, জাপান, তাইওয়ান, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া ও রাশিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৫ কোটি ১৬ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৩ লাখ ৫৫ হাজার। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৪৬৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দেড়শো। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৩ লাখ ৫৫ হাজার ৯৯৪ জনে। একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ২২ হাজার ১৮২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩৪ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫ কোটি ১৬ লাখ ১ হাজার ৫৫১ জনে। এনডিটিভি, রয়টার্স।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন