বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রোদের তাপে কমছে সিলেট বন্যার পানি : সংকটে বিশুদ্ধ পানির

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০২২, ৫:২৫ পিএম

সিলেট পানি উন্নয়ন জানিয়েছে আগামী ১০ দিনে কোন সতর্ক সংকেত নেই সিলেট বন্যার। গতকাল (শনিবার) সকাল থেকে মেঘমুক্ত নীল আকাশ ছিল সিলেটে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে রোদের তাপ। শনিবার (২ জুলাই) সকাল থেকে সিলেটের মেঘমুক্ত নীল আকাশ দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে রোদের তাপ। টানা চারদিন বৃষ্টির পর রোদের দেখায় কমতে শুরু করে নদনদীর পানিও। সিলেটের সবগুলো নদীরই পানিও কমেছে। পানি কমছে প্লাবিত এলাকাগুলো থেকেও। তবে এখনও নগরীর বাইরের বেশিরভাগ এলাকাই পানিমগ্ন হয়ে আছে। প্রায় ১৭ দিন ধরে পানিবন্দি থাকা মানুষের দুর্ভোগ সীমা ছাড়িয়েছে। এদিকে, স্মরণকালের এ বন্যার ভয়াবহতা এভাবে মোকাবেলা করতে হবে, তা স্বপ্নেও ভাবেননি এ অঞ্চলের মানুষ। এতে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়। বন্যা সিলেট নগরী ও জেলার ৮০ ভাগ এবং সুনামগঞ্জের ৯০ ভাগের ওপরে এলাকা প্লাবিত হয়। সেই সঙ্গে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এঅবস্থায় প্রাণে বাঁচা লোকজন পড়েন খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে। আর বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোর টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় খাবারের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির সংকট প্রকট হয়ে ওঠে। চারদিকে পানিতে থৈ থৈ করলেও খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দেয় সবখানে।
সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা কবলিত হয়ে ৮০ ভাগ নলকূপ পানিতে তলিয়ে যায়। মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে ২০ ভাগ নলকূপ পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, সরকারি নলকূপের হিসাবের বাইরে ব্যক্তি কেন্দ্রিক বসানো অন্তত ৫০ হাজার নলকূপ শুধু সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। যে কারণে সুপেয় পানির চরম সংকট দেখা দেয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ শেখ সাদি রহমত উল্লাহ বলেন, বিভাগে সরকারি ব্যবস্থাপনায় দেওয়া ৪৯ হাজার ১১০টি নলকূপ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। যার পরিমাণ ৮০ ভাগ হবে। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ২০ হাজার ২৩৪টি, সুনামগঞ্জে ২৭ হাজার, হবিগঞ্জে ১ হাজার ৫৯১ টি এবং মৌলভীবাজারে ২৮৫টি। এর বাইরে ব্যক্তি কেন্দ্রিক ৫গুন নলকূপ রয়েছে। এসব নলকূপের অন্তত ৫০ হাজার বন্যায় প্লাবিত হতে পারে, ধারণ করছেন তিনি। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন বলেন, সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলার ৯৯ টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। জেলায় ৩৫ হাজার নলকূপের মধ্যে ২৭ হাজার বন্যার পানিতে তলিয়েছে। আর বেসরকারি প্রায় ২ হাজার নলকূপ প্লাবিত হয়েছে। এদিকে, সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেটের দুটি নদীর পানি চারটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি কমছে। নদীর কোনো কোনো পয়েন্টে গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে গতকাল সকাল ৯টার ব্যবধানে পানি কমেছে দশমিক ২০ সেন্টিমিটার থেকে দশমিক শূন্য ২ সেন্টিমিটার। সূত্র জানায়, গত শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশিদ, শেওলা, কুশিয়ারা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে গত শুক্রবার সন্ধ্যার তুলনায় গতকাল সকাল ৯টায় অবস্থান করছে দশমিক ১০ সেন্টিমিটার কমে ১৩ দশমিক ২৪ সেন্টিমিটারে। নদীর সিলেট পয়েন্টে গতকাল সন্ধ্যার তুলনায় গতকাল সকাল ৯টায় দশমিক শূন্য ৭ সেন্টিমিটার কমে ১০ দশমিক ৬৬ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছে। কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পানি গত শুক্রবারের তুলনায় দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার কমেছে। শেওলা পয়েন্টে পানি দশমিক শূন্য ৫ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে দশমিক শূন্য ২ সেন্টিমিটার কমেছে।
সিলেট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় নদ-নদীর পানি কমছে, তবে অনেকটা ধীরগতিতে। আরও কয়েক দিন বৃষ্টি না হলে আরও কমবে পানি। তিনি বলেন, সিলেটে আগামী ১০ দিনের মধ্যে বন্যার আগাম নেই কোনো সতর্কতা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন