পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে গ্রাহক কিস্তির টাকা না পরিশোধ না করায় জামিনদারকে ডেকে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে মির্জাগঞ্জ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে।
ঘটনা জানাজানি হলে সোমবার (৪ জুলাই) মারধরের শিকার জামিনদাতা মোঃ জলিল আকন বলেন,উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের তালতলী গ্রামের নুরু মৃধার ছেলে আবুল হোসেন মৃধা কিছুদিন পূর্বে মির্জাগঞ্জ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি থেকে চার লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি চেক জমা দিয়ে তার জামিনদাতা হন। আবুল হোসেন দু-তিন মাস অসুস্থ থাকায় বরিশাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি ছিলেন। এই কারণে সে কিস্তি দিতে পারেননি। কিস্তির টাকা পরিশোধ না করায় সমিতির পরিচালক পরিষদের সদস্য জাকির মোল্লা গত শনিবার (২৫ জুন) সন্ধ্যা ৮ টার দিকে সমিতির ভিতরে ডেকে নিয়ে টাকা চায়। আমি কেন টাকা দেবো জানতে চাইলে অতর্কিতভাবে কিল,ঘুষি ও লাথি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এসে আমাকে উদ্ধার করে।
আরেক জামিনদাতা মিলন মাঝি বলেন, সরকারি চেক জমা রেখে তার চাচাতো ভাই এই সমিতি থেকে ঋণগ্রহণ করে তাতে সে জামিনদাতা হন। ঋণগ্রহণের পর থেকেই নিয়মিত কিস্তি দিয়ে আসছিল। সুদের হার বেশি হাওয়ায় মাঝখানে তার ভাই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে। গত রমজান মাসে তাকে ডেকে সমিতির ভিতরে নিয়ে যান। এ সময় বেল্লাল নামের সমিতির কর্মচারী কেন টাকা পরিশোধ করে না জানতে চেয়ে তাকে চড়,থাপ্পড়,লাথি ও কিল-ঘুসি দিতে শুরু করে। সমিতের সভাপতি প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তারা বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে সব টাকা পরিশোধ করে সেখান থেকে চলে আসে।
জানা যায়, মির্জাগঞ্জ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গ্রাহককে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, টাকা পরিশোধ করে অনেক সময় তাদের হয়রানির শিকার হতে হয়। অধিক হারে সুদ গ্রহণ করার পরেও অনেক সময় কিস্তির টাকা পরিশোধ করলেও কাগজপত্রে সেটি জমা না করে তাদের হয়রানি করে দ্বিতীয় বার আবার টাকা নেওয়া হয়। অনেক গ্রাহকের মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, মাহিন্দ্রা আটকে রেখে জোড়-জবরদস্তি করে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়।
অভিযোগের বিষয় মির্জাগঞ্জ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির পরিচালক পরিষদের সদস্য জাকির মোল্লা ও কর্মচারী বেল্লালের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উভয় ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মির্জাগঞ্জ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আল-আমিন হোসেন জানান, জলিল আকনের কাঠের দোকানে জাকির মোল্লা কাঠ কিনে কিছু একটা বানাতে রেখে আসছিল, সেটা নিয়ে তাদের মধ্যে বাইরে বসে ঝগড়া হলে এখানে ডেকে এনে সেভেন আপ খাইয়ে সালিশ মীমাংসা করে মিটমাট করা হয়েছে।
আর মিলন মাঝির বিষয়ে তিনি বলেন,তার সাথে এমনিতে কথার কাটাকাটি হয়েছে পরে টাকা-পয়সা পরিশোধ করে তারা চেক নিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন বিষয়টি এখন আমি শুনিনি এবং কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ তানিয়া ফেরদৌউস বলেন এরকম কোন অভিযোগ পাইনি। যদি এরকম কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন