লক্ষ্মীপুরে আলমগীর হেসেন নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় মেহেদী হাসান রুবেল ওরফে হাসিম (৩৪) ও ফয়েজ আহাম্মদ (২৭) দুইজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। একই মামলায় আদালত সিএনজি চালক সাগর নামে একজনকে বেকসুর খালাস দেন।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) দুপুরপ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। এ সময় আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী মেহেদী হাসান রুবেল ও খালাসপ্রাপ্ত সাগর উপস্থিত ছিলেন। মেহেদী ঘটনার পর থেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামী ফয়েজ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে।
মেহেদী হাসান রুবেল সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বটতলী গ্রামের মিয়াজান বেপারী বাড়ির সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। ফয়েজ আহম্মদ একই এলাকার কাঠালী বাড়ির আবদুল্লার ছেলে। হত্যার শ্বিকার আলমগীর রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের সাইচা গ্রামের মৃত বশির উল্যার ছেলে।
জেলা জজ আদালতের সরকারী কৌঁশুলী অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ২০০৯ সালের ২০ আগষ্ট রাতে আসামী মেহেদী হাসান তার ব্যবসায়ীক সঙ্গী আলমগীরের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নিতে ফয়েজ আহম্মদের সহায়তায় তাকে চুরিকাঘাত করে হত্যা করে। আদালত স্বাক্ষ প্রমান ও আসামীদের জবানবন্দির ভিত্তিতে তাদের দুইজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রদান করে।
আদলত সূত্র জানায়, ঘটনার পর আলমগীরের ভাই হুমায়ুন কবির বাদি হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা তদন্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মো. আলমগীর হোসেন এবং মেহেদী হাসান রুবেল ব্যবসায়ীক পার্টনার ছিলেন। তারা ইট, বালু, সয়াবিন ও সুপারীসহ বিভিন্ন মালামালের ব্যবসা করতো।
দুইজনের মধ্যে সুপারীর ব্যবসা কেন্দ্রীক টাকা লেনদেন ছিলো। তবে মেহেদী হাসান আইপিএলে জুয়া খেলে ৮ লাখ টাকা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এক পর্যায়ে দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিল। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধারদেনা করে সে গুলো পরিশোধ করতেও হিমশিম খাচ্ছিলো মেহেদী। ব্যবসায়ীক সঙ্গী মো. আলমগীর হোসেন তার কাছ থেকে ১৫ লাখ ৩১ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। টাকার জন্য অন্য পাওনাদারের পাশাপাশি চাপ দিচ্ছিলো সে। তাই তাকে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মেহেদী হাসান। তবে সাথে পরিকল্পনা আঁকে- টাকা দেওয়ার পর অন্য আরেকজনকে দিয়ে সেগুলো ছিনতাই করিয়ে আরেক দেনাদারকে দিবে। তাই ঘটনার দিন তাকে ডেকে এনে টাকা দিয়ে সিএনজি অটোরিকশায় করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ সড়কের কাজিরদিঘির পাড় এলাকায় নিয়ে হত্যা করে মৃতদেহ পুকুরে ফেলে দেয়। এ সময় আলমগীরের কাছে থাকা টাকা এবং মোবাইল ফোন চিনিয়ে নেয় হত্যাকারীরা।
মামলার বাদি হুমায়ুন কবির রায়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে বলেন, আসামীরা যাতে আপিল করে বের হয়ে যেতে না পারে, আমি সরকারের কাছে সে অনুরোধ জানাই। আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসির আদেশ দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন