ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবাসিক ভবন যমুনার নিচ তলার গ্রিল কেটে শিক্ষকের বাসায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিকিউরিটি ইনচার্জ আবদুস সালাম সেলিম। এ নিয়ে আতঙ্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে প্রায়ই ঘটে চুরির মত ঘটনা। উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা না থাকায় বারবার একই ঘটনা ঘটছে। সামাজিক মাধ্যমেও এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
সিকিউরিটি ইনচার্জ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক যমুনা ভবনের নিচ তলায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোররা ভবনের পিছনের বেলকুনির গ্রিল কেটে ভেন্টিলেটর ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে রুমের সব তছনছ করে ফেলে। রুমের ট্যাপগুলো চুরি করে নিয়ে যাওয়ায় পুরো রুম পানিতে ভেসে গেছে। ঈদের ছুটি উপলক্ষে তারা বাসায় না থাকায় কী কী জিনিসপত্র চুরি হয়েছে তা জানা যায়নি। ওই ভবনে থাকতেন ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এইচ.এ.এন.এম এরশাদ উল্লাহ। তবে কবে নাগাদ চুরির ঘটনা ঘটেছে বিষয়টি জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে এর আগে গত ৩ জুলাই দুইজন চোর ধরা হয়েছিল। পরে তাদের থানায় নেওয়া হয়। আর চুরি না করার শর্তে লিখিত দিয়ে তাদের স্থানীয় চেয়ারম্যান ছাড়িয়ে নেন। ওইদিন রাতেই এদের মাধ্যমে এই চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তথ্য সূত্রে জানা যায়, যমুনা ভবনের ২য় তলায় বিশ্ববিদ্যালয় সিকিউরিটি ইনচার্জ ও একই ভবনের চতুর্থ তলায় বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম থাকেন। তারা সেখানে অবস্থান করা সত্ত্বেও কবে নাগাদ চুরি হয়েছে বা কারা চুরি করেছে এ বিষয়ে তারা অবগত ছিলেন না বলে জানা গেছে। ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, মাইকিং করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত ২ জুলাই ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে শান্তিডাঙ্গা ও শেখপাড়া এলাকায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এছাড়াও ক্যাম্পাসের ভিতরে প্রায়ই ঘটে চুরির ঘটনা। এসব ঘটনা ঘটলেও অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ক্যাম্পাসে মাইকিং করে বহিরাগত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা কিছু শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের পাশেই মেসে অবস্থান করছি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করা যায়না। মাঠে খেলতে যাওয়ার অনুমতি নেয়ার জন্য কতো না কাহিনি। মনে হচ্ছিল ইবিকে চার-পাঁচ স্তরের হাই সিকিউরিটিতে সাজানো হয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীদের প্রবেশে এত নিয়ম তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে চুরির মত ঘটনা কিভাবে ঘটে? তাহলে কী ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাহীনতা প্রশ্নবিদ্ধই থেকে যায়।
গত ৩ জুলাই দুইজন চোর আটক করা হয়েছিল। তাদের নামে মামলা হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইবি থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মামলা হওয়ার কথা ছিল তাদের দু’জনের নামে। প্রক্টরিয়াল বডির ৪ জন এসে মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের আবাসিক ভবনে চুরির ঘটনাটি গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শুনেছি। পরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। নীচ তলায় অবস্থানরত শিক্ষক ঢাকাতে অবস্থান করছেন। এজন্য ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সঠিক কিছু বলা যাচ্ছে না।
মুচলেকা দিয়ে আটক দুই চোরকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আটককৃতদের একজন ছোট ছিল, তারা ভ্যানচালক। তাদের কাছে কোন মালামাল ছিল না। পরে তাদের মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বাররা উপস্থিত হয়ে পরবর্তীতে ক্যাম্পাসে না ঢুকার শর্তে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। তাদের সঙ্গে জিকু নামে আরেকজন ছিলো। তার নামে এজহার করা। সে ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু হল পকেট গেট দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন