মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সেই মুস্তাফিজই এখন অসহায়

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

পেসার হয়েও স্পিনারদের মতো তার বল গ্রিপ করে ব্যাটসম্যানদের ধাঁধায় ফেলত বলে মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং দেখে ক্যারিয়ারের শুরুতে অনেকে তাকে বলতেন, ‘জোর বল করা বাঁহাতি স্পিনার’! বিস্ময় জাগানিয়া অভিষেকের পর বেশ কিছুদিন এক চমকের নামই হয়েছিল বাংলাদেশের এই পেসার। তবে সময়ের ফেরে মুস্তাফিজের সেই সুবিধা উপমহাদেশের বাইরে গেলে হয়ে যাচ্ছে অসুবিধার কারণ!
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সবশেষ ১০ ইনিংসে তার উইকেট স্রেফ ৫টি, গড় ৫২.২০। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৮.১১। ঘরের বাইরে ফ্ল্যাট উইকেটে সবশেষ ১২ ম্যাচে তার উইকেট কেবল ৩টি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও ভাল বল করতে পারেননি মুস্তাফিজ। ৪ ওভার বল করে ৩৭ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। যেসব উইকেটে স্পিনাররা সুবিধা পান, অর্থাৎ যেসব উইকেট কিছুটা মন্থর ঘরানার, যেখানে বল গ্রিপ করে সেখানে ঝাঁজালো বল করতে পারেন মুস্তাফিজ। কিন্তু উইকেট গতিময়, বাউন্সি হলেই উল্টো নির্বিষ হয়ে যেতে হয় তাকে। মুস্তাফিজ কারণ হিসেবে খুঁজে পেয়েছেন উইকেটকেই।
সবশেষ ম্যাচটি কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই হারার পেছনে খারাপ বোলিংকে সেদিন দায় দিয়েছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে শেষ ম্যাচে নামার আগে গায়ানায় টিম হোটেলে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে এই প্রসঙ্গ উঠতেই মুস্তাফিজ বললেন, ‘এখানে উইকেটটা ভাল। অন্য দল হলেও দুইশো রান হতো।’ এশিয়ার বাইরে তিনি কেন এত বিবর্ণ, উত্তর খুঁজতে হাঁটলেন সহজ যুক্তিতে, ‘এশিয়ার উইকেট এক রকম, এশিয়ার বাইরের উইকেট আরেক রকম। এশিয়ার বাইরে উইকেট বেশি ভালো থাকে। এশিয়ার মধ্যে দেখবেন টি-টোয়েন্টিতে ১৫০ রান করতেই কষ্ট হয়। আর এশিয়ার বাইরে দুই শ’ রানও নিরাপদ নয়। আমার ইকোনমি রেট বাড়ার এটা একটা কারণ হতে পারে।’
কিন্তু উইকেট ব্যাটিং বান্ধব হলেই তো নিজেকে প্রমাণের চ্যালেঞ্জটা বেশি। অনেক পেসারকেই ভাল উইকেটে রান আটকে রাখার কাজটা করতে দেখা যায়। মুস্তাফিজ জানান এসব পরিস্থিতিতে কি করতে হবে তা শেখার চেষ্টায় আছেন তিনি, ‘অস্ত্রোপচার করানোর পর হয়তো এক-দেড় বছর আমার পারফরম্যান্স ভালো ছিল না। এরপর তো...তবে শেখার শেষ নেই। প্রতিদিনই শেখা যায়। আমিও চেষ্টা করছি আরও উন্নতি করতে... বিশ্বের অন্য ভালো বোলারদের মতো কীভাবে হওয়া যায়। ফিটনেসে উন্নতি আনা বলেন, কোচদের পরামর্শ নেওয়া বলেন- সবভাবেই শিখছি।’
যার কাছ থেকে এসব কন্ডিশনের তালিম নেওয়া যায় সেই অ্যালান ডোনাল্ড আছেন হাতের কাছে। তবে নানান ব্যস্ততায় ডোনাল্ডের সঙ্গে এখনো বড় সেশন হয়ে উঠেনি তার, ‘সাদা বলে আমি মাত্র দুটি সেশন করেছি (ডোনাল্ডের সঙ্গে), বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি নিয়ে। আর ওয়ানডের জন্য কাজ করেছি দক্ষিণ আফ্রিকায়। খুব বেশি দিন এখনো ওনাকে পাইনি। তবে কোচের পরিকল্পনাগুলো খুব ভালো লাগছে।’
উইকেট যে অনেক সময় বোলিংয়ের জন্য কঠিন থাকে এই সংস্করণে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। মুস্তাফিজের কাছে প্রত্যাশা তো সেখানেই বেশি। বৈচিত্র আর অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রতিকূলতা জয় করবেন, পেস আক্রমণকে নেতৃত্ব দেবেন, দলকে আশা জোগাবেন। তবে সেসব আপাতত হচ্ছে সামান্যই। সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি আজ রাতেই। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে অনায়াস জয়ে সিরিজে এগিয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন