বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

রোহিঙ্গা নির্যাতনে দেশে দেশে ক্ষোভ

মালয়েশিয়া ইন্দোনেশিয়া থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ। মুসলিমদের সুরক্ষায় ব্যর্থতার জন্য সু চি’র বিরুদ্ধে অসন্তোষ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ক্রমবর্ধমান রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা, নিপীড়ন, নির্যাতন ও পাশবিকতার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠেছে বিভিন্ন দেশ। নির্যাতনের শিকার হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়ার ঘটনায় বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। গত শুক্রবার মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা রাখাইনের চলমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানানোর জন্য অচিরেই কুয়ালালামপুরে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করবে। তবে কবে এটা করা হবে তার সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নি। মিয়ানমারে সহিংসতার প্রতিবাদে একটি আঞ্চলিক টুর্নামেন্ট থেকে দল প্রত্যাহারের কথাও ভাবছিল মালয়েশিয়া, কিন্তু পরে সেই চিন্তা থেকে সরে আসে তারা। গত শুক্রবার কুয়ালালামপুরে শত শত রোহিঙ্গা মুসলমান একটি বিক্ষোভে যোগ দেয়। রাখাইন রাজ্যে আনুমানিক ১০ লাখ রোহিঙ্গার বাস। জাতিসংঘের ভাষায় এরা বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী। এমনকি বংশ পরম্পরায় হাজার বছর ধরে সেখানে বসবাস করে আসা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব পর্যন্ত প্রদান করে না মিয়ানমার সরকার। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা শব্দটি পর্যন্ত ব্যবহার করতে রাজি নয়। তারা এ সম্প্রদায়ের মানুষদের অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করে। অথচ বহু মানুষই মিয়ানমারে তাদের পূর্বপুরুষদের শিকড় প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। গত বুধবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছিল বাংলাদেশ। ঢাকায় গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ সমাবেশ এবং বিক্ষোভ মিছিল করে যাচ্ছে।  
একইভাবে প্রতিবাদ হয়েছে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক এবং ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায়। জাকার্তার বিক্ষোভকারীরা মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেতা অং সান সুচির নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবি জানায়। বার্তা সংস্থা বলছে, মিস সুচির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেভিড ম্যাথিয়েনসন বলছেন, রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলতে মিস সুচির ব্যর্থতার কারণে যারা তাকে মানবাধিকারের প্রতীক বলে মনে করত তারা বিভ্রান্ত হচ্ছে। তবে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সুচি মুখে কুলুপ এঁটে থাকায় কেউ কেউ বলছেন, এতে প্রমাণ হচ্ছে সেনাবাহিনীর উপর অং সান সুচির কোন নিয়ন্ত্রণই নেই। অপর এক খবরে বলা হয়, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে দেশটির সরকারি বাহিনী।
জীবন বাঁচাতে রাখাইন রাজ্যের হাজার হাজার রোহিঙ্গার দৃষ্টি এখন কিভাবে নরককু- থেকে বেরিয়ে আসা যায়?  যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে এক নারী জানান, তাদের সম্প্রদায়ের নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে, পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী যখন আসে তখন আমরা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাই। আমি জানি না আমার স্বামী জীবিত আছেন নাকি তিনি মৃত। তার গ্রামের বহু নারী সরকারি সেনাদের হাতে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। আমাদের গ্রাম যখন জ্বালিয়ে দেয়া হয় তখন আমরা অন্য গ্রামে চলে যাই। অব্যাহতভাবে অবস্থান বদলাতে থাকি। এভাবে আসতে আসতে আমরা নদীতীরে আসি। তিনি বলেন, এই আসার পথে অনেকেই তাদের পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন। বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
মিম ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ৩:০৪ এএম says : 0
মুসলীম বিশ্বের উচিত মায়ানমারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করা।
Total Reply(0)
আঃরহমান ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ৮:৩৮ পিএম says : 0
STOP KILLING ROHINGA MUSLIMS IN MYANMAR'S ... কি বলবো ভাষা হারিয়ে ফেলেছি! আল্লাহ তুমি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে তোমার কুদরতি হাত দারা হেফাযত কর।,,,,আমিন,,,
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন