ময়মনসিংহে শুটিং হয়েছে রায়হান রাফি পরিচালিত ত্রিভূজ প্রেমের গল্পের সিনেমা ‘পরাণ’। তাই এ সিনেমাটি নিয়ে বাড়তি আগ্রহ ছিল ময়মনসিংহের দর্শকদের। ফলে ট্রেলার প্রকাশের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা আঁচ করা যাচ্ছিলো। ফলে ফেসবুকে প্রশংসায় ভাসিয়েছে পরাণ-এর তিন অভিনয়শিল্পী বিদ্যা সিনহা মিম, শরীফুল রাজ ও ইয়াশ রোহানকে।
দর্শক চাহিদা বিবেচনায় ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহ দিয়েই সিনেমার প্রচারণা শুরু করার কথা ছিল সিনেমাসংশ্লিষ্টদের। কথা মত ঈদের দ্বিতীয় দিন শনিবার (১১ জুলাই) বিকেল সাড়ে তিনটায় ময়মনসিংহ নগরীর পূরবী সিনেমা হলে হাজির পরাণ টিম।
ফলে মিম, রাজ ও রোহানদের সঙ্গে সিনেমা দেখতে ৩ টার আগেই হাউজফুল হয়ে যায় সিনেমা হল। এসময় সিনেমা হলে কাউন্টারের সামনে টিকিট নিয়ে উচ্ছসিত দর্শকদের মাঝে হূড়াহুড়ির ঘটনাও ঘটে।
এরপর সাড়ে ৩ টার দিকে হলে বসে সিনেমা দেখতে দর্শক সারিতে যান মিম-রাজরা। এসময় হলে নায়ক-নায়িকাদের কাছে পেয়ে যেমন উচ্ছ্বসিত ছিল দর্শকরা, তেমনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে মিম-রাজদেরও। দীর্ঘদিন পর হল এমন হাউজফুল দেখে আনন্দিত হল কর্তৃপক্ষও।
বিদ্যা সিনহা মিম বলেন, পরাণ সিনেমার গল্পটা খুবই সুন্দর একটি গল্প। যার পুরোটাই শুটিং হয়েছে ময়মনসিংহে। ঈদের দিন ঢাকার সিনেমা হলগুলো ঘুরে দেখেছি সেগুলোতে প্রচুর দর্শক হয়েছে। আজকে পর্যন্ত সবগুলো টিকিটই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আর আজকে ময়মনসিংহে এসে এত দর্শক দেখে আমি খুবই হ্যাপী। হল মালিক জানালেন তিন বছর পর এই পরাণে হাউজফুল দর্শক পেয়েছেন। এভাবে কয়েকটি সিনেমায় দর্শকপ্রিয়তা পেলে হলগুলো বাঁচানো যাবে। উনার মুখ থেকে এমন কথা শুনতে পেয়ে আমাদের খুবই ভাল লাগছে। কারণ এই ছবিটার পেছনে আমরা খুবই কষ্ট করেছি।
নিজের চরিত্র নিয়ে মিম বলেন, আমার চরিত্রটা খুবই চঞ্চল একটি মেয়ের। অনন্যা তার নাম। তার মধ্যে শিশুসুলভ একটি বিষয় রয়েছে। সে একজন কলেজ পড়ুয়া। এই বয়সের মেয়েরা যেমন হয়, ডিসিশান নিতে ভুল করে, একটু আবেগী থাকে বেশী। এমন মিষ্টি একটি চরিত্র।
অনেকে মিন্নির সাথে মিমের চরিত্রকে তুলনা করছেন। এ ব্যাপারে মিমের অভিমত, আমরা গল্পে বলিনি যে কাউকে কেন্দ্র করে। তবে এটা ঠিক যে একটি সত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের গল্প। আমাদের আশেপাশে এমন অনেক সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই আমাদের সিনেমাগুলো হয়।
সিনেমার পুরো শুটিং হয়েছে ময়মনসিংহে। এখানকার পরিবেশ আর আথিতিয়তা নিয়ে মুগ্ধতার কথা বলে গেলেন এ গ্ল্যামার গার্ল। তিনি বলেন, এবারই প্রথম ময়মনসিংহে শুটিং করেছি। ময়মনসিংহ যে এতটা সুন্দর তা কাজ করতে না এলে বুঝতে পারতাম না। তার থেকে- বেশী ভাল হচ্ছে ময়মনসিংহের মানুষজন। এখানকার মানুষ খুবই অতিথিপরায়ন। কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে এটি আমার পুরোনো স্মৃতিময় একটি শহর। খুবই সাপোর্ট পেয়েছে এ কাজটাতে।
চিত্রনায়ক শরীফুল রাজ বলেন, আমরা যে পরিমাণ সাড়া পাচ্ছি দর্শকের এতটা আসলে আমরা আশা করিনি। যে পরিমাণ রিভিউ পাচ্ছি এবং হলগুলোতে হাউজফুল থাকছে, ময়মনসিংহে- প্রচুর ক্রাউডেট। তাতে সিমেনাটা নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত এবং আশাবাদী। প্রথমে ১১ টা হলে মুক্তি দেয়া হয়েছে। দর্শকের যেমন সাড়া দেখছি তাতে মনে হচ্ছে পরের সপ্তাহ থেকে আরো কিছু হল আমরা পাবো।
হল ব্যবস্থাপক শেখ মাসুম বলেন, আমরা অনেক খুশী দীর্ঘদিন পর এমন দর্শক দেখে। এই সিমেনার সুবাদে আমরা মিম-রাজদেরও হলে পেয়েছি। করোনার পর থেকে আমাদের ব্যবসা খুবই খারাপ যাচ্ছিল। আমরা হল বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনাও করছিলাম।
কিন্তু এই সিনেমা আবারো আমাদের আশা জানিয়েছে। এমন সিনেমা তৈরি হলে আমরা হল মালিকরা বাঁচবো। দর্শক ফিরবে আবারও হলে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন