মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম শীর্ষ সংগঠক, ইতিহাসখ্যাত চার খলিফা'র অন্যতম, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম পরিকল্পক-রূপকার, বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান, বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ও স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক শাজাহান সিরাজের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল বৃহস্পতিবার। আজ বুধবার পরিবাবের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে ২০২০ সালের এই দিনে আজ বৃহস্পতিবার ৭৭ বছর বয়সে ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। শাজাহান সিরাজের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শাজাহান সিরাজ ফাউন্ডেশন, কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজ এবং শাজাহান সিরাজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। সকালে ঢাকার বনানী কবরস্থানে মরহুমের কবর জিয়ারত এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। ঢাকা ও টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে কোরান খানি, দুঃস্থ শিশুদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ, কালিহাতীর মসজিদ ও মন্দির গু০লোতে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া শাজাহান সিরাজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের পক্ষ থেকে সকালে কালিহাতীতে মরহুমের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। মরহুমের জীবন ও কর্মের উপর কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজের পক্ষ থেকেও এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
শাজাহান সিরাজ ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে শাজাহান সিরাজ ছাত্র-রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৬৪-৬৫ এবং ১৯৬৬-৬৭ দুই মেয়াদে তিনি দুইবার করটিয়া সা’দাত কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। একজন সক্রিয় ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে জনাব সিরাজ সাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস এ যোগ দেন। ১৯৭০ এর ৬জুন গভীর রাতে শাজাহান সিরাজ এর তৎকালীন ইকবাল হলের কক্ষে সৃষ্টি হয় হয় ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রথম পতাকা।
১৯৭১ সালের ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে বিশাল এক ছাত্র জনসভায় বঙ্গবন্ধুর সামনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেছিলেন শাজাহান সিরাজ। পরে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি বাংলাদেশ লিবারেশনফোর্স’ (বিএলএফ) বা মুজিব বাহিনীর কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। শাজাহান সিরাজ ১৯৭০-৭২ মেয়াদে অবিভক্ত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালেজাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠন করেন। তিনি জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শাজাহান সিরাজ ১৯৯৪ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে তিনি পলিথিন নিষিদ্ধকরণ, টু স্ট্রোক ইঞ্জিন বন্ধ, ইটের ভাটার দূষণ রোধের মাধ্যমে পরিবেশ আন্দোলন নতুন প্রাণ সঞ্চার করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন