বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

পূর্বে চীন-রাশিয়ার উপস্থিতি, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে দক্ষিণ চীন সাগর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০২২, ৭:২২ পিএম

চীন প্রায়ই দক্ষিণ চীন সাগরের দেশগুলোর আঞ্চলিক জলসীমা লঙ্ঘন করছে। শুধু তাই নয়, সন্দেহ করা হচ্ছে বেইজিং এই অঞ্চলে বর্তমানে রাশিয়ার সহায়তায় সামরিক কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। দক্ষিণ চীন সাগরে দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইর বরাত দিয়ে জি-৫ ডটকম এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এশিয়ান লাইট ইন্টারন্যাশনালের একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, গত ৪ জুলাই বিতর্কিত পূর্ব চীন সাগর দীপপুঞ্জের আশপাশের আঞ্চলিক জলসীমার বাইরে চীন এবং রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ কয়েক মিনিটের জন্য অবস্থান করতে দেখেছে।
জাপান দাবি করেছে যে সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ ঐতিহাসিকভাবে এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তাদের ভূখণ্ডের একটি অন্তর্নিহিত অংশ। জাপান সরকার তাদের ভূমি, আঞ্চলিক জলসীমা এবং আকাশপথ রক্ষার বিষয়গুলো শান্ত ও দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করবে।
এদিকে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান দাবি করেছেন যে জলসীমার কাছাকাছি চীনা জাহাজের কার্যক্রম বৈধ এবং ন্যায়সঙ্গত।
চীন বিরোধী মনোভাব এবং নিরাপত্তা হুমকির ইঙ্গিতের মধ্যেই ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে চীনের সঙ্গে জাপানের সম্পর্কের অবনতি ঘটছে।
সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ (চীনা ভাষায় দিয়াওয়ু দ্বীপপুঞ্জ) চীন নিজেদের বলে দাবি করায় ইতোমধ্যে জাপানের মানুষ অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক গ্রুপ গ্লোবাল স্ট্র্যাট ভিউ বলেছে, সেনকাকু জাপান নিয়ন্ত্রিত জনবসতিহীন একটি দ্বীপপুঞ্জ। এখানকার টহলের যে কৌশল চীনও তাইওয়ান প্রণালীতে তেমনি কৌশল ব্যবহার করছে।
চীন ও তাইওয়ান এই দ্বীপপুঞ্জের ওপর দাবি করেছে। যার ফলে তাইওয়ানের নিকটবর্তী ইয়োনাগুনি দ্বীপপুঞ্জে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বাড়াতে বাধ্য হয়েছে জাপান।
গত বছর জাপানের ২৪ নটিক্যাল মাইলের সংলগ্ন অঞ্চলের বাইরে প্রায় ৭০টি চীনা জাহাজ দেখার খবর পাওয়া গেছে। একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জাপান মে মাসে বিতর্কিত সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ থেকে চীনা ও রাশিয়ান জাহাজ পরিচালনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করেছে।
পূর্ব চীন সাগরে চীন ও জাপানের মধ্যে দুটি বিষয় নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এগুলো হলো সেনকাকু বা দিয়াওয়ু দ্বীপপুঞ্জ এবং পূর্ব চীন সাগরে সামুদ্রিক সীমানা সংক্রান্ত সার্বভৌমত্বের বিরোধ।
ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশ চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনের মুখোমুখি হওয়ায় তাদের সামরিক বাজেট এবং ব্যয় বাড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগর অঞ্চলের দেশগুলো টহল ও প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে অবাধ ও নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে এবং চীনা সামরিক বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে।
একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের মে মাসে টোকিও সম্মেলনের সময়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতসহ কোয়াড জোট একটি মুক্ত এবং উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের লক্ষ্যে একটি উপগ্রহ-ভিত্তিক সামুদ্রিক সুরক্ষা উদ্যোগ চালু করতে সম্মত হয়েছিল, যা ছোট দেশগুলোকেও সাহায্য করতে পারে। এমনকি তাদের সার্বভৌমত্ব এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করতে পারে।
ফিলিপাইনের সার্বভৌম অধিকার এবং এখতিয়ারের দাবি সত্ত্বেও জলসীমায় মাছ ধরার ওপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চীন। ভিয়েতনামের মাছ ধরা এবং অন্যান্য জাহাজও ২০১৩২০১৪ থেকে শুরু করে এবং ২০১৯ ও ২০২০ সালে ঘন ঘন চীনের আক্রমণের শিকার হয়েছে।
চীন, তাইওয়ানের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। রাশিয়ার চেয়ে তাইওয়ানকে ছাড়িয়ে যাওয়া চীনের জন্য সহজ। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর মধ্যে ঢুকে পড়ায় চাপে পড়েছে চীন। চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসন তাইওয়ানের জনগণকে অজানা ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করেছে। যদিও একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান এখনও হতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন