মাগুরা জেলার ৪ উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে জিংকসমৃদ্ধ বিরি- ৬২ ধানের আবাদ। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর বিজ্ঞানীরা এ ধান উদ্ভাবন করেছে। দেশী ধানের সাথে পরাগায়নের মাধ্যমে এ জাতের ধান উদ্ভাবনে সহায়তা করেছে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিরি), যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হারভেস্ট প্লাস্ট ও আর্ন্তজাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে মাগুরা জেলায় বিরি-৬২ জাতের এ ধানের আবাদ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন এ ধানের আবাদ হয়েছে এবার মাগুরা জেলার ৪ উপজেলায় ১ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে। অন্যান্য ধানের মধ্যে যেখানে সাধারণত প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ১০ মিলিগ্রাম ফরটিফায়েড ও ৬ শতাংশ প্রোটিন থাকে। সেখানে বিরি-৬২ ধানের প্রতি কেজিতে ১৯ মিলিগ্রাম জিংক ও ৯ শতাংশ প্রোটিন রয়েছে। এ জাতের ধান থেকে মানুষের শরীরের আয়রন ও প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সক্ষম বলে জানান বিজ্ঞানীরা। তা ছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম এ ধানের চাল। কৃষি বিভাগ জানায়, মাগুরা সদর উপজেলায় ৩৭০ হেক্টর, শ্রীপুর উপজেলায় ৪০ হেক্টর, মহম্মাদপুর উপজেলায় ৬১০ হেক্টর ও শালিখা উপজেলায় ৩০০ হেক্টর জমিতে জিংকসমৃদ্ধ বিরি-৬২ জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। গত আমন মৌসুমে এ ধানের বীজ কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করে প্রচারাভিযান চালায় কৃষি বিভাগ। প্রদর্শনী প্লটে চাষ করে কৃষকরা ভাল ফলন পাওয়ায় চলতি মৌসুমে মাঠ পর্যায়ে আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমন মৌসুমের জাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম সময়ে ১০৫ দিনের মধ্যে এ ধান উৎপাদিত হয়। চাল হয় মাঝারি আকারের। উৎপাদন হয় প্রতি হেক্টরে ৪ দশমিক ২ মেট্রিকটন। মাগুরার মহম্মাদপুর উপজেলার ঘুল্লিয়া গ্রামের চুন্নু মিয়া, রাজাপুর গ্রামের মিলন সরকার, বালিদিয়া গ্রামের সামছেল বিরি- ৬২ জাতের ধানের আবাদ করে লাভবান হয়েছে বলে জানান। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম সাহা বলেন, বিরি-৬২ ধান হাই ব্রীড নয়, এটি উচ্চ ফলনশীল। মানুষের শরীরের আয়রন ও প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। এ ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেলে এক দিকে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে কীট নাশকের ব্যবহার হ্রাস এবং মানুষের শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ ও প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন