সুনামগঞ্জের ছাতকে দোলারবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১৪টি দোকান ভস্মিভূত হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনের লেলিহান দেখে স্থানীয় মসজিদে ঘোষণা দিলে ঘুমন্ত মানুষ জাগ্রত হয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে উপজেলা দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে। জালালপুরে একটি কালভার্ট ভাঙা থাকায় দমকলবাহিনীর সদস্যরা গাড়ি নিয়ে দ্রুত পৌঁছতে বিলম্ব হয়। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় দমকল বাহিনীর সদস্যরা রোববার সকাল ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হন। ততক্ষণে সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
সরজমিন ঘুরে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী লোকজনের সাথে আলাপ করে জানা যায়, শনিবার (১৬ জুলাই) রাতে দোলারবাজারের সকল ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান। ঘনঘন বজ্রপাত আর ঘুরি ঘুরি বৃষ্টিতে এলাকার মানুষ যখন ঘুমে আচ্ছন্ন তখন হঠাৎ পাটিয়ার নদী (বর্তমান মরাখাল) পাড়ে অবস্থিত বাজারের একটি গলির দক্ষিন পাশ থেকে আগুনের সুত্রপাত ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে ভয়াবহ আগুন গলির প্রতিটি দোকানে ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিকান্ডে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থরা হলেন, জটি গ্রামের শহিদুল হক ছায়াদ মিয়ার মেসার্স আমেনা এন্টারপ্রাইজ, মহব্বতপুরের জাকির মেশিনারিজের তাজুল ইসলাম, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার শাহজালাল ইঞ্জিনিয়ারীং ওয়ার্কসপ এর কামাল আহমদ, কল্যাণপুরের মিনহাজ আহমদের টায়ার, ওয়ার্কসপ, বারগোপির মিলন নাথের জুয়েলারি, কুমিল্লার ইব্রাহিম খলিলের ফার্মেসী, বারগোপির খালেদ আহমদের টেলিকম ও স্টেশনারিজ, বারগোপির নেপাল বদ্যের সেলুন, আবু বক্করের বেবীসপ, বাগইন গ্রামের সজল দের পূজা ফার্মেসী, বারগোপি গ্রামের শঙ্কর বদ্যের পঙ্কজ সু-স্টোর, কল্যাণপুরের এমরান আহমদের ভেরাইটিজ স্টোর, মনিরজ্ঞাতি গ্রামের ইহাদ আলীর মা টেলিকম। এছাড়া বারগোপি গ্রামের রেদ্বওয়ান আহমদ এর ভেরাইটিজ স্টোর ও নজরুল ইসলামের পোলটি ফার্ম অল্পের জন্য রক্ষা হলেও তারা আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্থ শহিদুল হক ছায়াদ মিয়া জানান, অগ্নিকান্ডে তার দোকান পুড়ে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাজুল ইসলাম বলেন, তার ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ মূল্যের মালামাল। কামাল আহমদ জানান, সব মালামাল পুড়ে তার ১২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৪টি দোকান পুড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় কোটি টাকা। সব হারিয়ে এসব ব্যবসায়ীরা এখন পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। বিভিন্ন এনজিও ও ব্যাংক থেকে তারা লোন তুলে এখন বিপাকে পড়েছেন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী আবদুল কাহার, বাবুল পাল, ব্যবসায়ী আবদুল কুদ্দুছ, ফজর আলীরা জানান, দোলার বাজারের পূর্বগলির দক্ষিনের মিনহাজের দোকান রয়েছে। মসজিদের মাইকে ঘোষণা ও মোবাইল ফোন পেয়ে ঘুম থেকে উঠে তারা বাজারে আসেন। অগ্নিকান্ডের অনেক আগ থেকে বিদ্যুৎ ছিলনা। গলির দক্ষিনের মিনহাজের দোকানসহ আশপাশের দোকানগুলোতে আগুন দেখতে পেয়ে দমকল বাহিনীকে খবর দেয়া হয়। এর মধ্যে এলাকার মানুষ জড়ো হয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। মুহুর্তের মধ্যে পুরো গলিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় আধাঘন্টার মধ্যে গলির ১৪টি দোকান পুড়ে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ছাতক দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেড় ঘন্টা চেষ্টার পর সকাল ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে যাওয়ার ঘটনাটি স্থানীয় অনেকের ধারণা এটি কেউ পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। বৈদুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটতে পারে বলে কেউ কেউ ধারণা করছেন। ##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন