শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

তিনি আ.লীগের নীল নকশা বাস্তবায়নের ম্যানেজার

সিইসি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে ভিন্ন ধরনের নীল নকশা করছে বলে অভিযোগ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর। আর এই নীল নকশা বাস্তবায়নের প্রধান ম্যানেজার হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, অবৈধভাবে টিকে থাকার জন্য ২০১৪ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিহীনভাবে নির্বাচন করেছে আওয়ামী লীগ। ২০১৮ সালে মিড নাইট নির্বাচন করেছে। এইবার একটা অন্য ধরনের পরিকল্পনা তাদের আছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রধান ম্যানেজার হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। গতকাল সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন নামক একটি সংগঠনের উদ্যোগে বিগতদিনের আন্দোলনে বিএনপির গুম, খুন হওয়া পরিবারগুলোর সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা নিজেই একটি দুর্যোগ। দুর্যোগ হিসেবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন। দুর্যোগ বলেই তো গুম-খুনের পরিবার এখানে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন গুম ও ক্রসফায়ারের সংখ্যা বাড়বে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটবে। কারণ এই ধরনের সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলে রাখতে এমন কোনো হীন ও পাশবিক কাজ নেই যা তারা করবে না। অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তারা সকল অপকর্ম করবে।
তিনি বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সত্যিকার অর্থেই গণতান্ত্রিক সরকার ও জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মী দুনিয়া থেকে চলে যাবে কেনো? তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাবে না কেনো? তারা নিরুদ্দেশ হবে কেনো? তাদের পরিবার আজ হাহাকার করছে কেনো? তাদের আর্তচিৎকার-বুক ফাটা কান্না আমাদের শুনতে হচ্ছে কেনো? এজন্য সম্পূর্ণ দায়ী শেখ হাসিনা। দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কেউ যেন টু-শব্দ করতে না পারে সে জন্য শেখ হাসিনা এক ভয়ংকর পরিবেশ তৈরি করেছে। বিরোধী মতাদর্শের লোকজনদেরকে তিনি গুম করছেন, ক্রসফায়ার দিচ্ছেন। এসব করে অন্যদেরকেও ভয় দেখাতে চান তিনি। ‘নির্বাচনে কেউ তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ালে আপনার রাইফেল নিয়ে দাঁড়াবেন’ সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, এই নির্ববাচন কমিশনার শেখ হাসিনার একেবারে নিজস্ব কৃতদাস হিসেবে কাজ করছে। এটাই তিনি প্রমাণ দিচ্ছেন। দেশের সাংবিধানিক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান এই কথাটি কী করে বলতে পারেন? যত অবৈধ রাইফেল, বন্দুক, তলোয়ার সব তো আওয়ামী লীগের হাতে। ভোটাররা তো তলোয়ার, রাইফেল নিয়ে যায় না। তারা তাদের অধিকারটা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেই অধিকারটা হচ্ছে ভোট কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেবে। এই নিশ্চয়তা চায় ভোটাররা।
তিনি বলেন, সিইসির বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হচ্ছে একেবারে শেখ হাসিনার খাস মানসিক সন্তান। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে গোটা দেশটাকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য এবং আওয়ামী লীগকে একটি সন্ত্রাসী দল বানিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদেরকে বসিয়েছেন। তারা এখন তারই প্রতিনিধিত্ব করছেন।
তিনি আরো বলেন, তলোয়ার নিয়ে আসলে রাইফেল নিয়ে নামবেন এই কথাটা কেনো আসবে? আপনিতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে রয়েছেন। নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে মানুষের ভোটার অধিকার প্রয়োগে পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব তো নির্বাচন কমিশনের। যতটুক ক্ষমতা আছে তাতে আপনিতো এটা করবেন না। যেদিন আপনাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সেদিন থেকে সারা দেশের মানুষ জানে আপনি প্রধানমন্ত্রীর নীল নকশা বাস্তবায়ন করবেন।
রিজভী বলেন, আজকে জ্বালানি কেনার টাকা নেই, যা দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরির উপকরণ কেনা যাবে। ব্যাংকে পর্যন্ত টাকা নেই, যা আছে তার অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ও তাদের আত্মীয় স্বজন উত্তোলন করে বিদেশে পাচার করেছে। এই পরিস্থিতিতে জনগণ বেঁচে থাকতে পারবে কিনা সেই শঙ্কায় পড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের মুক্তি দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের দ্বারা খুন-হত্যা করে আপনি পার পেয়ে যাবেন, তা হবে না। আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা নয়, এদেরকে পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই দলীয় সরকার এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। নির্বাচন তখন সুষ্ঠু হবে যখন নির্দলীয় সরকার গঠিত হবে। বিএনপি সেই লক্ষ্যেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ বক্তব্য দেন এবং যুবদলের ইসহাক সরকার, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন