দেশে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে মসজিদে এসি বন্ধ রাখার এক নির্দেশনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল বিতর্ক চলছে। ফেসবুকে অনেকেই এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
সোমবার (১৮ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী। একইসঙ্গে জ্বালানি সাশ্রয়ে মসজিদে এয়ার কন্ডিশনার বা এসি ব্যবহার বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানান।
মসজিদে এসি ব্যবহার বন্ধ রাখার ওই নির্দেশনা দেওয়ার পরই ফেসবুকে এনিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। এনিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার ঝড় ওঠে সামাজিক মাধ্যমে।
পরবর্তীতে এই বিষয়েটি নিয়ে কথা বলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, মসজিদে এসি একেবারে বন্ধ রাখতে বলা হয়নি। শুধুমাত্র নামাজের সময় ছাড়া বাকি সময় বন্ধ রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুধু মসজিদ নয়, উপাসনালয়ের কথা বলা হয়েছে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা সব উপাসনালয়ে তারা যাতে সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন।
এনিয়ে জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘মসজিদে নামাজের সময় ছাড়া এসি চালানো হয় না। এ নিয়ে কথা বলে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টির সুযোগ করে দেয়া হলো।’’
সাংবাদিক শাহেদ শফি লিখেছেন, ‘‘মসজিদের এসি নয়!গ্লাস দিয়ে মোডানো ভবনগুলোর দরজা জানালা খোলার ব্যবস্থা করুন! বেঁচে যাবে শত কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল!!পান্থপথের পানি ভবনকে গ্লাস দিয়ে না মুড়িয়ে রেখে জানালাগুলো খুলে দেন। দেখবেন আল্লাহর দেয়া আলো-বাতাসে দিন চলে যাবে আরামে। এসি লাগবে না। এই ভবনে বসানো হয়েছে ২ হাজার ৪০০ টন ক্ষমতার শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র। প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১২ তলার পানি ভবনের জন্য প্রতি বছরে বিদ্যুৎ বিল গুনতে হচ্ছে ৩ কোটি টাকা। আমার মনে হয় ঢাকার সব মসজিদগুলোতেও এক বছরে এই বিল আসবে না। দেশের এমন যতো ভবন আছে সেগুলোর জানালা খুলে অফিস করার নির্দেশ দিন। বিদ্যুৎ অটো সাশ্রয় হবে!!’’
বিস্ময় প্রকাশ করে শাফায়েত উল্লাহ লিখেছেন, ‘‘দেশের শতকরা কত% মসজিদে এসি আছে? আর মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে কতক্ষণ এসি চলে? আল্লাহ আমাদের সকলকে ইসলাম, মসজিদ এবং মাদরাসার তথা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গী ও সন্মান প্রদর্শন করার মন-মানসিকতা তৈরী করে দাও আমিন।’’
রাসেল উদ্দিন রাসু লিখেছেন, ‘‘মসজিদে শুধুমাত্র নামাজে সময় এসি চালানো হয়। মসজিদে প্রতিদিন পাঁচবারে মাত্র ১ থেকে ১.৫ ঘন্টা এসি চলে। আর সিনেমা হল, মার্কেট এবং অফিসে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে দিনে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা এসি চলে। বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে হলে মসজিদের এসি বন্ধ করার আগে সিনেমা হল, মার্কেট, এবং সকল অফিসের এসি বন্ধ করতে হবে এবং সকল মন্ত্রী ও এমপিদের বাস ভবনে এসি বন্ধ করা হউক।’’
আসমা লাকী লিখেছেন, ‘‘মসজিদে প্রতি ওয়াক্তে নামাজ আদায়ে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট সময় লাগে, ২০ মিনিটের জন্য এসি অন করা যাবে না? তার চাইতে বরং সচিবালয় গুলোতে সিনেমা হলগুলোতে নামাজের সময় গুলো আধাঘন্টা এসি বন্ধ রাখুক সেই আধাঘন্টা মসজিদে এসি চালানোর অনুমতি দেয়া হোক। এসিতে আরাম করে সিনেমা দেখার ব্যবস্থা করার চাইতে শান্তিতে একটু আল্লাহর দরবারে সেজদা করে দেয়ার ব্যবস্থা করাটাই উত্তম।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন