ব্যাটে রান খরা, অধিনায়কত্বে নেই ঝাঁজ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের উপর আর আস্থা রাখতে পারছে না বিসিবি। নেতৃত্ব তো বটেই, দল থেকেও বাদ পড়ার শঙ্কায় আছেন এই তারকা। আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাই সাকিব আল হাসানকে অধিনায়ক করেই এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে সব পরিকল্পনা। বিসিবির নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাহমুদউল্লাহর অধিনায়কত্বের পথচলায় ছেদ পড়তে যাচ্ছে। তার জায়গায় সীমিত ওভারের নেতৃত্বেও ফিরতে যাচ্ছেন সাকিব।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পর বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন সাকিব। সেখানে সীমিত ওভারের নেতৃত্বে আসার সায় দেন তিনি। তবে সাকিবের ইচ্ছা আগামী এশিয়া কাপ থেকে দলের দায়িত্ব নিতে। বিসিবি চায় জিম্বাবুয়ে সফর থেকেই দায়িত্ব নিন সাকিব। জিম্বাবুয়ে সফরে আবার আগে থেকেই ছুটি নিয়ে রেখেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সাকিব জিম্বাবুয়ে না গেলেও মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে থাকার সম্ভাবনা কম। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান। সাকিবকে অধিনায়ক করা হলে সোহানকে করা হতে পারে সহ-অধিনায়ক। আর সাকিব জিম্বাবুয়েতে কেবল টি-টোয়েন্টি সিরিজটা খেলতে যেতে রাজী হলে আর কোন সমস্যাই থাকে না। এক প্রভাবশালী বোর্ড পরিচালক এই ব্যাপারে বলেন, ‘আমাদের টি-টোয়েন্টি দলটার অবস্থা একবারেই নাজুক। এই অবস্থায় বিশ্বকাপে যাওয়া যায় না। বিশ্বকাপকে ঘিরে তাই নতুন করেই ভাবতে হচ্ছে।’
সাকিবকে অধিনায়ক ও সোহানকে সহ-অধিনায়ক করে এরমধ্যে জিম্বাবুয়ে সফরের একটি স্কোয়াডও ঠিক করে ফেলা হয়েছে। সেখানে নেই মুশফিকুর রহিমও। এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে সফরটিতে টি-টোয়েন্টি থেকে বিশ্রামে রাখার চিন্তা চলছে। অধিনায়কত্ব হারানোর পাশাপাশি দলেও জায়গা হারাতে চলেছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে জিম্বাবুয়ে সফরের স্কোয়াডে এখনো স্বাক্ষর করেননি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে মাহমুদউল্লাহ ফেরার পর আগামী ২১ জুলাই তার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি। সেই আলোচনার পরেই আসতে পারে চূড়ান্ত ঘোষণা। তাতে মাহমুদউল্লাহর টিকে থাকা নির্ভর করবে কেবলই বিসিবি সভাপতির উপর। জানা গেছে, টিম ম্যানেজমেন্টের কেউই এখন আর মাহমুদউল্লাহকে অধিনায়ক হিসেবে চাইছে না। মাঠে তার উপস্থিতি, মাঠের বাইরে দলকে ইতিবাচক বার্তা দিতে না পারা। নিজের ব্যাটিং ফর্ম। সব মিলিয়ে তার পাশে নেই কেউ। অন্য কারো সমর্থন না পেলে মাহমুদউল্লাহকে টিকিয়ে রাখা কঠিন বোর্ড সভাপতির পক্ষেও।
আলোচনা আছে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ঘিরেও। শীর্ষ অলরাউন্ডার সাকিব মুমিনুল হককে সরিয়ে টেস্ট নেতৃত্ব পাওয়ার সময়ই তিন সংস্করণে নেতৃত্ব পাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। টেস্টের পর টি-টোয়েন্টিতে সেই বাস্তবতা তৈরি হলেও ওয়ানডের ক্ষেত্রে তা কঠিন। কারণ তামিম ইকবালের নেতৃত্বে ওয়ানডেতে ভালো করছে বাংলাদেশ। তার অধীনে সাতটি ওয়ানডে সিরিজের ছয়টিতেই এসেছে জয়।
টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহ নেতৃত্বে আসার আগে দায়িত্বটা ছিল সাকিবের কাঁধেই। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ছিলেন তিনি। তবে ২০১৯ সালে জুয়াড়ির তথ্য গোপন করে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হন তিনি। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর নেতৃত্বের আলোচনায় না থাকলেও অন্যদের খারাপ ফলের কারণে ফের নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে সাকিবকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন