বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং রমরমা চার্জার লাইট-ফ্যানের বাজার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০২২, ১২:০২ এএম

বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির জেরে বিদ্যুৎ-সঙ্কট মোকাবিলায় দেশব্যাপী এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত জানানোর পর চাহিদা বেড়েছে চার্জার লাইট, ফ্যান, আইপিএস ও পাওয়ার ব্যাংকের। চাহিদা বাড়ায় দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। জ্বালানি তেলের সঙ্কট কমাতে সরকার এক থেকে দুই ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের ঘোষণার পরই বাজারে এই চাহিদা ও দাম বেড়ে যায়।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমে লোডশেডিংয়ের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ চার্জার লাইট, ফ্যান কিনতে ভিড় করছেন। বায়তুল মোকাররম মার্কেটের অন্য যেকোনো দোকানের তুলনায় ইলেকট্রনিকস পণ্যের দোকানে বেশি ভিড় দেখা গেছে।

ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রচÐ গরম আর লোডশেডিংয়ের হাত থেকে বাঁচতে চার্জার ফ্যান, লাইট, মোবাইলে চার্জ দেয়ার জন্য পাওয়ার ব্যাংক কিনছেন তারা। অন্যদিকে যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো, তারা কিনছেন আইপিএস। সকাল থেকেই মার্কেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে ইলেকট্রনিকসের এসব দোকানে ছিল ক্রেতাদের ভিড়।

চাহিদা থাকায় দাম বাড়ানোর বিষয়ে দোকানিদের ভাষ্য, আমদানিকারকরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়ায় তারাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। রাজধানী ইলেকট্রনিকস দোকানের ম্যানেজার মো. ইব্রাহিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী লোডশেডিংয়ের ঘোষণার পরই আমদানিকারকরা প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আগে পাঁচ কার্টন মাল চাইলে তাই দিত। আর এখন পাঁচ কার্টন মাল চাইলে দেয় এক কার্টন। বেশি দাম দিয়েও মাল পাওয়া যায় না। এ কারণে আমাদেরও মাল বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি জানান, চার্জার জাতীয় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। প্রতিদিনই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন আমদানিকারকরা।
গত দুই সপ্তাহে কোনো কোনো পণ্যের দাম এক হাজার টাকা বেড়েছে। চাইনিজ একটা চার্জার ফ্যান ছয় মাস আগে ছিল ৩ হাজার টাকা, সেটি এখন ৪ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বায়তুল মোকাররমের বাইরে ফুটপাতের দোকানদাররা জানান, কয়েক দিন ধরে বেচাবিক্রি বেড়েছে। তবে দাম তেমন বাড়েনি। ইলেকট্রনিকস বড় পণ্যের দাম বাড়লেও ছোট ছোট পণ্যের দাম তেমনটা বাড়েনি। এসব দোকানে ৩০০ টাকা থেকে সাড়ে চার হাজার টাকার পণ্য রয়েছে।

চার্জার ফ্যান কিনতে যাওয়া ক্রেতারা বলেন, যে গরম পড়ছে, তার মধ্যে লোডশেডিং শুরু হয়েছে। ঘরে থাকতে চার্জার ফ্যানের বিকল্প নেই। এ জন্য চার্জার ফ্যান কিনতে আসছি। এই গরমে তো বেঁচে থাকতে হবে। ফ্যান-লাইট থেকে শুরু করে যাবতীয় ইলেকট্রনিক্ট পণ্যের দাম অনেক বেশি বলে অভিযোগ তাদের।

আকারভেদে চার্জার ফ্যান ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বায়তুল মোকাররমে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের চার্জার লাইট বিভিন্ন রকমের দামে বিক্রি হচ্ছে। রাজধানী কাফরুলের বাসিন্দা আবু নাসের বলেন, প্রচÐ গরমে লোডশেডিং শুরু হয়েছে। ঘরে ছোট বাচ্চা আছে। তাই রহিমআফরোজ থেকে একটি আইপিএস বুকিং দিয়েছি। ৩৯ হাজার ৯০০ টাকার আইপিএসে তিনটি ফ্যান ও তিনটি লাইট দুই ঘণ্টা সার্ভিস দেবে। লোডশেডিংয়ের এ সময়টা এখন এভাবে চালাতে হবে।

বিদ্যুৎ সংকটে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্তের কথা গত সোমবার জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী। তিনি জানান, লোডশেডিং হতে পারে দিনে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত। একই সঙ্গে সপ্তাহে এক দিন বন্ধ থাকবে পেট্রল পাম্প।
গতকাল থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। অবশ্য এটি সাময়িক সিদ্ধান্ত। বিশ্ব পরিস্থিতির উত্তরণ হলে আগের অবস্থানে ফিরে আসবে বলেও জানানো হয়।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন