বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, পকেট ভারি করার নাম রাজনীতি নয়, মানুষের জন্য কাজ করার নামই রাজনীতি। সরকার দেশে উন্নয়নের রোল মডেল বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু দেশের বাস্তব চিত্র খুবই ভয়াবহ। আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের দোহাই দিয়ে কুইক রেন্টালের নামে লুটপাট করেছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। আজ দেশের মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছেনা। সরকারী হাসপাতালে মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেনা। জনগণ আজ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বানভাসি মানুষদের জন্য যখন আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন তখন দেশে অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে। মূলত মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতির কারণেই দেশে আজ অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে। শুধু উন্নয়নের শ্লোগান দিয়ে চলতে পারে না একটি দেশ।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকালে সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার এলাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির উদ্যোগে ও মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহযোগিতায় এবং সিলেট জেলা বিএনপির তত্বাবধানে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সাবেক মন্ত্রী ড. মঈন আরও বলেন, সরকার উন্নয়নের জোয়ারে দেশ ভাসছে বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। উন্নয়নের জোয়ারে নয়, উজান থেকে আসা পানির জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চল। এই বন্যার জন্য সরকারের ব্যর্থ পরিকল্পনা ও প্রতিবেশী দেশের বাঁধ নির্মাণই দায়ী। আওয়ামী লীগ দেশে গুম খুন ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, কেড়ে নিয়েছে মানুষের কথা বলার অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করেছে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে। তাই আওয়ামী লীগের অধীনে কোনদিনই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া নির্বাচন তো দুরের কথা এই মেরুদন্ডহীন নির্বাচন কমিশনের আহবানে কোন সংলাপেও বিএনপি যাবে না।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, যুগ্ম সম্পাদক শাম্মি আক্তার, সহ সভাপতি নাজমুন নাহার বেবী, সহ সভাপতি সামিয়া চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, অবৈধ সরকারের দায়িত্বশীলদের শুধুমাত্র টেলিভিশনে দেখা যায়, বাস্তবে তাদের দেখা মিলেনা। আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী সিলেটে এসে হেলিকপ্টারে ঘুরে সার্কিট হাউজে যে ৭ জনকে ত্রাণ দিয়েছেন তাদের নাকি কোভিড টেস্ট করা হয়েছে। এই বন্যা প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ নয়, এটি মূলত কিশোরগঞ্জে দখলদার সরকারের রাষ্ট্রপতির বাড়িতে যাওয়ার জন্য অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত ৭৭ কি.মি রাস্তার জন্যই হয়েছে। আর আমরা বন্যার পানিতে ডুবতে ডুবছি। তাই এই জালিম সরকারের হাত থেকে বাঁচতে না পারলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও বাঁচা যাবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, বাংলাদেশের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা বার বার আপনাদের পাশে আসছি। আজ ২৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আপনাদেরকে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছেন। জনগণের এই দুঃসময়ে আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, এই সরকার জনগণের কথা চিন্তা না করে লুটপাটে ব্যস্ত। তারা ৪৪ লক্ষ বানভাসি মানুষের জন্য জনপ্রতি মাত্র ৬ টাকা ৫০ পয়সা করে বরাদ্দ দিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, নিশিরাতের সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। তাই জনবিচ্ছিন্ন এই সরকারকে বিতাড়িত করার কোন বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা বিএনপি নেতা ইশতিয়াক সিদ্দিকী, মাহবুবুল হক চৌধুরী, একেএম তারেক কালাম, শহীদ আহমদ চেয়ারম্যান, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ, জেলা বিএনপি নেতা মাহবুব আলম, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, সাধারণ সম্পাদক ফাহিমা আহাদ কুমকুম, যুগ্ম সম্পাদক মিলি আক্তার, দপ্তর সম্পাদক সুলতানা রহমান দিনা প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন