বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সরকার জনগণের হাতে হ্যারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে

কেরানীগঞ্জে গয়েশ্বর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের হাতে হ্যারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের গুণকীর্তনের কোনো অভাব নেই। টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মিডিয়া ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অথবা চাকরি-জীবন বাঁচাতে সরকারের প্রশংসা সূচক কথা বলে থাকে। কিন্তু মাঠ বলে কী? যারা লাখ লাখ কোটি টাকা লুটপাট করল বিদ্যুৎ নিশ্চিত করল ২৬ হাজার মেগাওয়াট। আজকে বিদ্যুৎ না দিয়ে জনগণের সবার হাতে হ্যারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে এই সরকার।
গতকাল শনিবার জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ দক্ষিণ উপজেলা শাখার দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সোহেল রানার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. শাহীনের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা স্বেচ্চাসেবক দলের সভাপতি আব্দুর রহমান বাবুল, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান অভি প্রমুখ।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমি কয়েকটি কথা বলব, তা হচ্ছে আগে আমি দেশটাকে চিনি, এরপর বিএনপিকে চিনব। আমাদের নেতা স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার কথা ছিল, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। আমি ত্যাগ করি দেশের জন্য, কোনো ব্যক্তির জন্য নয়। যারা দেশের জন্য ও দলের জন্য রাজনীতি করেন তারাই দায়িত্ব নিবেন। নিজের সুবিধা বা ভোগের জন্য দল করতে চান তারা কেটে পড়েন। কারণ, বিএনপি কাউকে সুযোগ সুবিধা দিতে পারবে না। বিএনপি আপনাকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে পারবে।
আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এই সরকার বিদেশীদের নিয়ে আবার ভাগবাটোয়ারা করতে চায়। ভাগবাটোয়ারা আগেই করতে চায় তারা। কিন্তু সময় মতো ভাগবাটোয়ারা দিবে-অতীত তা বলে না। আমরা রাজনীতি করি গণতন্ত্রের জন্য, ভাগবাটোয়ারার জন্য নয়।
এ সময় তিনি আরো বলেন, জনগনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জাতীয় সংসদ ও সরকার গঠন করা হয়। এই সংসদ সদস্য নির্বাচন করবে দেশের মালিক, যার বয়স ১৮ বছর এবং ভোটার। পুলিশ, র‌্যাব অথবা সরকারি কর্মচারী, হুন্ডা-গুন্ডা-এরা জনগনের প্রতিনিধি নির্বাচন করার অধীকার রাখে না। অথচ, এরাই দিনের ভোট রাতে করে। এই লজ্জা থেকে আমরা মুক্তি পেতে চাই।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব, দিনের ভোট দিনে দেব, কেন্দ্রে গিয়ে নিরাপদে দেব-এই কথাই লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার বাবা জিয়াউর রহমানও বলতেন জনগণই ক্ষমতার উৎস, জনগণই দেশের মালিক।
তিনি বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, আমি আপনাদের ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করছি; আপনারা আমাকে ভোট না-ইবা দিলেন, কিন্তু ভোটাধিকারের লড়াইয়ে আমাকে সহযোগীতা করুন। তারেক রহমান বলেননি বিএনপি ক্ষমতায় যেতে চায়, তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে চান। বিএনপি ক্ষমতায় যাবে কি যাবে না তা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। কোন দল ক্ষমতায় যাবে, কে প্রধানমন্ত্রী হবেন তা নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ। তার আগে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরে পেতে হবে। ভোটের মাধ্যমে তার প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। এই ফয়সালা রাজপথে হতে হবে। রাজপথ ছাড়া এই ফয়সালা হবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার যাবে, কবে যাবে তা তারাই ভালো জানে। কারণ, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ। পালাতে চাইলেই পালানো যায় না। সেটা কিন্তু শ্রীলঙ্কা সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের দিকে তাকালেই বোঝা যায়।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সরকারের উচিত স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগনের কাছে ক্ষমা চেয়ে নির্বাচনে প্রস্তুতি নেয়া। আমরা সেই নির্বাচন দেখতে চাই। এর আগে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না। এবং এই সরকারের অধীনে বাংলাদেশে নির্বাচনের নামে কোনো প্রহসন করতে দেওয়া হবে না।
নেতাকর্মীদের মনে করিয়ে দিয়ে গয়েশ্বর বলেন, আন্দোলনে সহযোদ্ধার প্রতি দরদ না থাকলে যুদ্ধে জয়লাভ করা যায় না। যুদ্ধে জয়লাভ করতে হলে লোভ লালসা ত্যাগ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভোগ ভোগান্তি বাড়ায়; ত্যাগ মানুষকে মহৎ করে। আশা করি ত্যাগের মধ্যদিয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্ব সফল আন্দোলনে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে পারব। সেই কারণে আবার বলছি, তাড়াও হাসিনা, বাঁচাও দেশ; টেক ব্যাক বাংলাদেশ।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন