কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার এবং প্রশাসন নিরপেক্ষ না হলে কোনোভাবেই নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব নয়। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সব রাজনৈতিক-সামাজিক শক্তি ঐকমত্য পোষণ করবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। একই সাথে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে গতকাল দলের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তাঁর নেতৃত্বে দলের ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়। সংলাপে অংশ নিয়ে কাদের সিদ্দিকী ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বঙ্গবীর বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের জন্য ২ ঘণ্টা করে সময় বরাদ্দ এবং অন্য দলের জন্য একঘণ্টা সময় দেওয়ার সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। বড় দল ছোট দল এভাবে বিভাজন ভোটার ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, আগের কমিশনগুলো সংলাপে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নিদারুণভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। রাকিব কমিশন উপহার দিয়েছে ১৫৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বীহীন সংসদ সদস্য। নূরুল হুদা কমিশন নির্ঘুম নৈশ ভোটের প্রহসনের মাধ্যমে পুরো জাতি এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বকে হতাশ করেছে। এ দুটো কমিশনই বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও দেশের সাধারণ মানুষ ভোটারাধিকারসহ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের যথাযথ দায়িত্ব প্রদানে আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসির অসহায়ত্ব এবং বিভিন্ন অসংলগ্ন কথাবার্তা দেশের মানুষকে করেছে বিস্মিত। ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অতি উৎসাহ এবং অকল্পনীয় পুরস্কারের ঘোষণা ক্ষমতাসীনদের তল্পিবাহক হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়, যা জনগণকে ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে সন্দিহান করে তুলেছে।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, হতাশার কালোমেঘ চারদিকে ছড়িয়ে থাকলেও আমরা আশায় বুক বাঁধতে চাই। তাই আশা করি, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সব রাজনৈতিক-সামাজিক শক্তি ঐকমত্য পোষণ করবেন এবং বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের বোধোদয় হবে এবং এদেশে আবারও একটি নিরপেক্ষ, নিরাসক্ত সর্বজনীন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব হবে, অবসান ঘটাবে বিভক্তি আর পশ্চাৎপদতার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন