দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন-এর বিরুদ্ধে মাদারীপুরে দায়েরকৃত মানহানি মামলা অবশেষে স্থগিতাদেশ প্রদান করেছে আদালত। হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের উপর মাদারীপুরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গতকাল বৃহম্পতিবার দুপুরে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে গত ৯ জুন মামলার ধার্য্য তারিখে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের জাবেদা নকল উপস্থাপন করা হলে তা পরবর্তী শুনানীর জন্য দিন ধার্য্য রাখেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক। গতকাল সকাল ১১টায় বিচারক মামুনুর রশীদ মামলার বাদীর উপস্থিতিতে এবং ইনকিলাব সম্পাদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট আবুল হাসান সোহেলসহ একাধিক আইনজীবীর পূর্ণাঙ্গ শুনানী শেষে হাইকোর্টের রুল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত রাখার আদেশ দেন। মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২০ ফেব্রæয়ারি শাজাহান খানের একমাত্র মেয়ে ঐশী লন্ডন থেকে ছুটিতে বাংলাদেশে আসেন। ওই বছর ২৬ জুলাই বিমানে ইংল্যান্ড যাওয়ার কথা ছিল তার। করোনাভাইরাসের কারণে তিনি যেতে পারেননি। এর দু’দিন আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আইসোলেশন সেন্টারে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা করান ঐশী। একদিন পর তার করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু ইমিগ্রেশনে যাচাইয়ের সময় অনলাইনে তাকে করোনাভাইরাস পজিটিভ হিসেবে দেখানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ওই বছরের ২৭ জুলাই শাজাহান খান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা চান। পরে সংবাদ সম্মেলনে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি অ্যান্ড রেটারেন্স সেন্টারের পরিচালক ভুলের দায় স্বীকার করেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তাদের ডাটা অপারেটরের ভুলের কারণে ওই সমস্যা তৈরি হয়। যার জন্য শাজাহান খান বা তার মেয়ে মোটেও দায়ী নন। ২৮ জুলাই ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদকীয়তে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাজাহান খানকে নিয়ে অসত্য তথ্য লেখা হয় বলে দাবি করা হয়। শাজাহান খানের বিরুদ্ধে পত্রিকায় ‘করোনা ভাইরাস সনদ জালিয়াতির’ তথ্যে অসত্যের অভিযোগ এনে মাদারীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই বছর ৩১ আগস্ট দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়। শাজাহান খানের রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয় না হলেও ঘনিষ্ঠজন হিসেবে মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া হাওলাদার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ।
এর প্রেক্ষিতে দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালক (এডমিন এ্যান্ড মার্কেটিং) মো. আবদুল কাদের ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট মাদারীপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ এর আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হলে আদালত ৫ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হ্ইাকোর্ট ডিভিশনে মামলার কার্যক্রম স্থগিতাদেশ চেয়ে ফৌজদারী বিবিধ ২৯৭৪৯/২১ নং মামলা দায়ের করলে প্রথমে ৪ মাসের জন্য স্থগিতাদেশ প্রদান করে এবং পরবর্তীতে চলতি বছর ১লা মার্চ হাইকোটের দ্বৈত বেঞ্চে পূর্ণাঙ্গ শুনানী হলে বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিক এবং বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী মাদারীপুরের মানহানি মামলাটি রুল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। এদিকে দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে মাদারীপুরে দায়েরকৃত মানহানি মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ হওয়ার সংবাদে স্থানীয় সমমনা সাংবাদিকরা আনন্দ প্রকাশ করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন