বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

প্রতিবছর দেশে ১৩ হাজার শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে

প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ক্যান্সার শিশুদের জন্য নীরব ঘাতক। প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ১৩ হাজার শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। পৃথিবীর ক্যান্সারাক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ৯০ ভাগই দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশে বসবাস করে। এসব শিশুর প্রতি ১০ জনের মধ্যে মাত্র ১ জন উন্নত চিকিৎসা পায়। সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর ২ লাখের কাছাকাছি শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। ভাইরাস, দূষণ আর বিকিরণের মাত্রা বৃদ্ধি ক্যান্সারের মূল কারণ। অধিক মাত্রায় অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও উন্নয়ন শিশুদের শরীরে ক্যান্সারের জন্ম দিচ্ছে। তাই সুস্থ ও ক্যান্সারমুক্ত প্রজন্ম গড়ার লক্ষ্যে পরিবেশবান্ধব নগরায়নকে প্রাধান্য দিতে হবে। আন্তর্জাতিক শিশু ক্যান্সার দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল বিভিন্ন আলোচনা সভা এবং কর্মসূচীতে বক্তারা এসব তথ্য দেন।
শিশুদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যু প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে গতকাল সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হেমাটোলজী এন্ড অনকোলজী বিভাগের উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়। গুরুত্বপূর্ণ এ র‌্যালিতে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান।
সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিমু পরিবহন, প্রত্যাশামাদক বিরোধী সংগঠন, গ্রীণ মাইন্ড সোসাইটি, গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা, অরুণোদয়ের তরুণ দল, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বংালাদেশ ট্রাস্ট যৌথ উদ্যোগে “শিশু ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন’ শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ক্যান্সার। পৃথিবীর ৯০টি দেশের ১৭৮টি জাতীয় সংগঠনের সম্মিলিত মঞ্চ ‘চাইল্ডহুড ক্যান্সার ইন্টারন্যাশনাল’ এর উদ্যোগে ২০০২ সালে এ দিবসটি প্রবর্তিত হয়। শিশুদের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণ এবং আক্রান্ত শিশুদের নিরাপদ চিকিৎসা ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করতে এ দিবসটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
গতকাল সকালে প্রেসক্লাবের কর্মসূচীতে একলাব এর প্রকল্প সমন্বয়কারী আব্দুল কাদের বলেন, দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। পেডিয়াট্রিক অনকোলজি ন্যাশনাল ডাটাবেইজ (পিওএনডি) সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ১২ হাজার আর সমগ্র দুনিয়ায় ২ লাখের কাছাকাছি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। জিনগত ক্যান্সার ছাড়াও নগরায়নের পরোক্ষ প্রভাবে শিশুদের মধ্যে ক্যান্সারের ঘটনা বাড়ছে। ভাইরাস, দূষণ আর বিকিরণের মাত্রা বৃদ্ধি ক্যান্সারের মূল কারণ। অধিক মাত্রায় অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও উন্নয়ন শিশুদের শরীরে ক্যান্সারের জন্ম দিচ্ছে। তাই সুস্থ ও ক্যান্সারমুক্ত প্রজন্ম গড়ার লক্ষ্যে পরিবেশবান্ধব নগরায়নকে প্রাধান্য দিতে হবে।
ডাবিøউবিবি ট্রাস্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে প্রত্যেককেই প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। ধূমপান এবং তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অর্থাৎ অতিরিক্ত চিনি, লবণ এবং চর্বি বিশেষ করে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ, কোমল পানীয় পান, অপর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম, দূষণজনিত সমস্যা ও অত্যধিক মদ্যপান অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে ক্যান্সোরের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠন এর সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ বলেন, ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের মাত্র ৫ শতাংশ বংশগত সূত্রে জিন মারফত আক্রান্ত হয়। বাকি প্রায় ৯৫ শতাংশ কিন্তু জন্ম পরবর্তীকালে পারিপার্শ্বিক কারণে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। জিনগত ছাড়াও প্রতিদিন শিশুরা যে খাবার খাচ্ছে বা শ্বাস নিচ্ছে তা থেকেও শরীরে ক্যান্সারের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। মেয়েদের গর্ভাবস্থায় লাইফ স্টাইল ও খাদ্যাভ্যাসের কারণেও শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, ক্যান্সার শিশুদের জন্য একটি নীরব ঘাতক হিসাবে চিহ্নিত। পৃথিবীতে ক্যান্সারে আক্রান্ত যত শিশু রয়েছে তার ৯০ ভাগই দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশে বসবাস করে। ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে মাত্র ১ জন উন্নত চিকিৎসা পায়। ক্যান্সার চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। কিন্তু ক্যান্সার প্রতিরোধ করাই কার্যকর এবং সাশ্রয়ী সমাধান। তাই আমাদের ক্যান্সার প্রতিরোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন