শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বাইডেনকে আগুন নিয়ে না খেলতে হুঁশিয়ারি জিনপিংয়ের

শ্রীলঙ্কার সঙ্কট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান চীনের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০২২, ১২:০৮ এএম

বৃহস্পতিবার বেইজিং সময় সন্ধ্যায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। এ সময় তারা চীন-মার্কিন সম্পর্ক এবং পারস্পরিক উদ্বেগের বিষয় নিয়ে খোলামেলা মতবিনিময় করেন।
ফোনালাপে শি জিনপিং বলেন, বর্তমানে বিশ্বে অশান্তি ও পরিবর্তনের দুটি ধারা বিকশিত হচ্ছে এবং উন্নয়ন ও নিরাপত্তার অভাব দেখা যাচ্ছে। এই অশান্ত বিশ্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিশ্বের মানুষ আশা করে যে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকবে এবং বৈশ্বিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
শি জিনপিং তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের নীতিগত অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, তাইওয়ান ইস্যুর ইতিহাস পরিষ্কার, এবং তাইওয়ান প্রণালীর উভয় তীর যে চীনের অন্তর্গত—তাও স্পষ্ট। ‘তিনটি চীন-মার্কিন যৌথ ইস্তাহার’ উভয় পক্ষের রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং ‘এক-চীন নীতি’ হলো চীন-মার্কিন সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তি। চীন দৃঢ়ভাবে ‘স্বাধীন তাইওয়ানের’ নামে বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং তাইওয়ানে বহিরাগত শক্তির হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করবে। তাইওয়ান ইস্যুতে চীনা সরকার ও চীনা জনগণের অবস্থান এক। চীনের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভূখন্ডের অখণ্ডতাকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করতে ১৪০ কোটি চীনা জনগণ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
শি জিনপিং আরও বলেন, আগুন নিয়ে খেললে নিজেকেই সেই আগুনে পুড়তে হয়। আশা করা যায়, মার্কিন পক্ষ এটি পরিষ্কার বুঝতে পারছে। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ‘এক-চীন নীতি’ এবং ‘তিনটি চীন-মার্কিন যৌথ ইস্তাহার’ মেনে চলা।
শি জিনপিং জোর দিয়ে বলেন, কৌশলগত প্রতিযোগিতার দৃষ্টিকোণ থেকে চীন-মার্কিন সম্পর্ককে দেখা ও সংজ্ঞায়িত করা এবং চীনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিপক্ষ ও সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসাবে বিবেচনা করা, চীন-মার্কিন সম্পর্কের ভুল ধারণা ও চীনের উন্নয়নের ভুল ব্যাখ্যার সামিল। এতে দুই দেশের সম্প্রীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হবে বিভ্রান্ত। তাই, উভয় পক্ষের উচিত, সকল স্তরে যোগাযোগ বজায় রাখা, বিদ্যমান যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর ভাল ব্যবহার নিশ্চিত করা, এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানো।
ফোনালাপে জো বাইডেন বলেন, আজকের বিশ্ব একটি সঙ্কটময় সময় অতিক্রম করছে। চীন-মার্কিন সহযোগিতা শুধু দুই দেশের জনগণের জন্যই নয়, অন্যান্য দেশের জনগণের জন্যও কল্যাণকর। যুক্তরাষ্ট্র চীনের সাথে সংলাপ বজায় রাখতে, পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে, ভুল বোঝাবুঝি কমাতে, অভিন্ন স্বার্থের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে, এবং মতভেদ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের ‘এক-চীন নীতি’ পরিবর্তিত হয়নি ও পরিবর্তন হবেও না এবং মার্কিন প্রশাসন ‘স্বাধীন তাইওয়ান’ ধারণাকেও সমর্থন করে না। ফোনালাপে দুই প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন সঙ্কট নিয়েও মতবিনিময় করেন। তারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতেও সম্মত হন।
এদিকে, সম্প্রতি কতিপয় মার্কিন কর্মকর্তা শ্রীলঙ্কার সঙ্কটের জন্য চীন-শ্রীলঙ্কা সহযোগিতাকে অপবাদ দিয়েছেন। এর জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র চাও লি চিয়ান বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার এখনকার সমস্যা মোকাবিলা, ঋণের দায় কমানো ও টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নে সাহায্য করবে বলে সবাই প্রত্যাশা করে।
যুক্তরাষ্ট্রকে সব-সুযোগ কাজে লাগিয়ে অন্য দেশের ওপর নিজের দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়া ও অপবাদ দেয়া বন্ধ করার আহ্বানও জানান মুখপাত্র। তিনি বলেন, চীন-শ্রীলঙ্কার বাস্তব সহযোগিতায় বরাবরই কোনো অতিরিক্ত রাজনৈতিক শর্ত নেই, তা শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনগণের জন্য বাস্তব কল্যাণ নিয়ে আসছে। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র নিজকে জিজ্ঞেস করতে পারে, শ্রীলঙ্কার মত উন্নয়নশীল দেশসমূহের টেকসই উন্নয়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কি কি করেছে? যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা অর্থনৈতিক নীতি ও পররাষ্ট্র নীতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য কত ক্ষয়ক্ষতি বয়ে এনেছে? তাও তারা খতিয়ে দেখতে পারে। সূত্র : সিআরআই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন