শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মস্কোকে সামুদ্রিক বীমা বাজার থেকে নিষিদ্ধের পরিকল্পনা বিলম্বিত

মুদ্রাস্ফীতি ও জ¦ালানি ঝুঁকিতে রাশিয়ার তেলে নরম সুর পশ্চিমাদের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০২২, ১২:১৬ এএম

ইউরোপ, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে মুদ্রাস্ফীতি ও জ্বালানি ঝুঁকির মুখে সরকারগুলো রাশিয়ান তেলের বাণিজ্য রোধ করার প্রচেষ্টা পিছিয়ে দিয়েছে। ইইউ লন্ডনের অত্যাবশ্যক লয়েডস অফ লন্ডন সামুদ্রিক বীমা বাজার থেকে মস্কোকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা বিলম্বিত করেছে, অপরিশোধিত তেলের মূল্য বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক জ্বালানির সরবরাহে কঠোরতার আশঙ্কার মধ্যে কিছু আন্তর্জাতিক চালানের অনুমতিও দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রিটিশ সরকারের সাথে সমন্বিত পদক্ষেপের প্রত্যাশা করে দুই মাস আগে রাশিয়ান তেল বহনকারী জাহাজগুলোকে সামুদ্রিক বীমা প্রদানের বিষযে বিশ্বব্যাপী নিষেধাজ্ঞার জারি করেছিল। তবে, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে জুলাইয়ের শেষের দিকে ব্রাসেল্স রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রাশিয়ান কোম্পানিগুলোর সঙ্গে লেনদেনের কিছু নিষেধাজ্ঞা সংশোধন করেছে। এদিকে, ব্রিটেন এখনও অনুরূপ নিষেধাজ্ঞা প্রবর্তন কনা করলেও, সামুদ্রিক বীমার উপর ইইউ’র সাথে একটি যৌথ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে যাচ্ছে, যা রাশিয়ার তেলের উপর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যাপক বিধিনিষেধ, যা মস্কোর তেল রপ্তানির জন্য বৈশ্বিক ট্যাঙ্কার বহরের বেশির ভাগ সুবিধাগুলোকে রদ করবে। জুলাইতে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট অনুমোদিত সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞাটি শুধুমাত্র ৩১ ডিসেম্বরের কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। ব্রিটেনের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, দেশ রাশিয়ান তেল বহনকারী জাহাজের বীমা প্রদান নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু রাশিয়া থেকে অন্য দেশে চালানের পরিষেবার বিধান নিষিদ্ধ করেনি।

মার্কিন কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে সামুদ্রিক বীমার উপর অবিলম্বে বিশ্বব্যাপী নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ার অশোধিত তেল এবং পেট্রোলিয়ামে লাখ লাখ ব্যারেল বাজার থেকে সরিয়ে নিলে দাম বাড়বে। লয়েডস মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের আন্ডাররাইটিং ডিরেক্টর প্যাট্রিক ডেভিসন বলেন, ‘রাশিয়ান তেলের বৈশ্বিক চালানকে প্রভাবিত করে এমন কোনও বর্তমান নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাজ্যের নেই। বীমা শিল্পের বৈশ্বিক প্রকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে, ইইউ বিধিনিষেধের অস্তিত্ব লন্ডনে রাশিয়ান তেলের চাহিদাকে ভালভাবে প্রভাবিত করতে পারে’।

ব্রিটিশ ট্রেজারি বলছে যে, এটি এখনও সর্বোত্তম পদক্ষেপের অন্বেষণ করছে। তারা বলেছে, আমরা রাশিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য প্রস্তুত আছি এবং রাশিয়ার অর্থনীতিতে সর্বাধিক প্রভাবের সাথে এটি প্রয়োগ করা যায় কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমাদের মিত্রদের সাথে গতিতে কাজ করছি। ইইউ-এর বীমা নিষেধাজ্ঞা ৪ জুন চালু করা হয়েছিল এবং তা বহাল রয়েছে। এটি পশ্চিমা জোটের কোম্পানিগুলোকে যে কোনও জায়গায় রাশিয়ান তেল বহনকারী কোনও জাহাজের জন্য নতুন বীমা করতে বাধা দেবে। বিদ্যমান বীমাগুলো ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈধ থাকবে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য প্রথমে তেলের দাম কমাতে চায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে পেট্রোলের দাম কমাতে আগ্রহী। নিষেধাজ্ঞার আইনজীবীরা বলেছেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ান তেলের বৈশ্বিক প্রবাহকে আটকানোর জন্য তার প্রচেষ্টাতে ঢিল দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে এবং বিশ্বব্যাপী বীমা নিষেধাজ্ঞার প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন অনিশ্চয়তা রয়েছে। এইচএফডব্লিউ’র অংশীদার সারাহ হান্ট বলেন যে, ট্রেডিং হাউসগুলো ইইউ-এর বাইরের দেশগুলোতে পাঠানোর জন্য রোসনেফ্ট তেল কেনা বৈধ কিনা, তা অনুসন্ধান করছে। নতুন ইইউ’র নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকরভাবে ইউরোপীয় সংস্থাগুলোকে রাশিয়ান অশোধিত তেল উত্তোলনের অনুমতি দেয়। আমরা এতে দ্বারা বিস্মিত।’ সূত্র : ফাইনান্সিয়াল টাইম্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন