বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ইমেজ সঙ্কটে মৌলভীবাজারের এসপি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ কমপ্লেইন সেলে অভিযোগ তদন্তে উদ্ঘাটিত হবে ভয়াবহ তথ্য

ফয়সাল আমীন, সিলেট থেকে : | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০২২, ১২:২৭ এএম

প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারের স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, অবৈধ সম্পদ অর্জন, চাঁদাবাজি, নিয়োগ বাণিজ্যের ঘটনা ওপেন সিক্রেট। তার কারণে অতিষ্ট সেবাপ্রার্থীরা। পুলিশের কার্যক্রমে স্থানীয়রা আস্থাহীনতায় পড়েছেন। সেই সাথে অধীনস্থ পুলিশ সদস্যরা হারিয়ে ফেলছেন কর্মস্পৃহা। এই অবস্থার মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিচয়ে পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ কমপ্লেইন সেল গত ৮ জুন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে গত ১৫ জুন পৃথক একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগের অনুলিপি পাঠিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), ডিজিএফআই ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টাস এসোসিয়েশনে। অভিযোগকারী জনৈক ছালেক। এছাড়া রয়েছেন মৌলভীবাজার জেলাবাসী, কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাবৃন্দ।

অভিযোগকারীদের তথ্য মতে, পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়ার স্ত্রী রাষ্ট্রের স্পর্শকাতর একটি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সে কারণে তার অনিয়ম দুর্নীতির প্রত্যক্ষ পরোক্ষ সহযোগী স্ত্রীও। বেপরোয়া এই পুলিশ সুপার নতুন কর্মস্থলে যোগদান করলেই সাথে নিয়ে যান নিজ অনুগত পুলিশ কর্মকর্তা ও বডিগার্ডদের। নিরবে-নিরাপদে অতিকৌশলে অর্থ কামানেরা সকল প্রক্রিয়া তারাই সম্পন্ন করে পকেট ভারী করে যাচ্ছেন পুলিশ সুপারের।

অভিযোগে জানা যায়, মৌলভীবাজারের যোগদানের পরই আলাদিনের চেরাগ কপালে জুটে পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়ার। পোস্টিং হওয়ার জন্য এক মন্ত্রীকে দিয়েছেন তিনি কোটি টাকা। এরপর বিভিন্ন্ন অনিয়ম দুর্নীতি ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করে করে টাকা তুলতে ব্যস্ত হয়ে উঠেন। মাদককারবারী ও দুর্নীতিবাজ চক্রের সাথে যোগসাজশ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন। এছাড়া অধীনস্ত ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও থানাসহ সকল জায়গায় থেকে আদায় করেন মাসিক ও সাপ্তাহিক অর্থ। শুধু জুড়ি উপজেলায় কোটি টাকার বাণিজ্য করেন।

পুলিশ সুপার জাকারিয়ার গ্রামর বাড়ি বরিশালের কতোয়ালি থানার হেগলায়। সেখানে আত্মীয় স্বজনের নামে বেনামে জমি ক্রয় ও লন্ডনে প্রচুর টাকা পাচার করেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আত্মীয় স্বজনের নামের বিভিন্ন ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করা আছে তার। গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বর নিয়োগ বাণিজ্যের কোটি টাকা লন্ডনে পাচার করেছেন। নারায়ণগঞ্জে চাকরির সুবাদে ক্ষমতা অপব্যবহার করে অবৈধভাবে কয়েক কোটি টাকায় ফতুল্লায় থানার ভূঁইগড় এলাকায় তুলেছেন পাঁচ তলা বাড়ি। ৩/২১ ইকবাল রোড, ঢাকায় মোহাম্মদপুরে রয়েছে বিলাসবহুল এপার্টমেন্টে। এয়ারপোর্ট রোড, বাউনিয়ার ৪ তলা সুসজ্জিত বাংলো বাড়ি রয়েছে এসপি জাকিরের। মিরপুর টোলার বাগে রয়েছে শশুড়ের নামে ২ দুই কাঠা জমির উপর ৪ তলা বাড়ি।

অপরদিকে, মৌলভীবাজারের জেলার ৭টি থানার ওসিদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা মাসোহারা আদায় করে নিচ্ছেন তিনি। বিশেষ করে গত অক্টোবরে তার শ্বশুর বাড়ির এলাকার এক ইন্সপেক্টরের কাছে থেকে ৬০ লাখ টাকার বিনিময়ে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি পদে পোষ্টিং দফারফা করেছেন এই পুলিশ সুপার। সৎ ও যোগ্য অফিসারদের বঞ্চিত করে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন থানায় পোষ্টিং করান। চার মাস আগে ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে ওসি পদে পদায়ন করা হয়েছে কমলগঞ্জ থানাতেও। মাদক ও চোরাকারবারীদের কাছ থেকে প্রতিমাসে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা চাঁদা আদায় করতেন। এছাড়া বালু ও পাথর মহাল থেকে প্রতিমাসে কোটি টাকার চাঁদা পকেটে নেন তিনি। সঙ্গত কারনে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশ সদস্য বলেন, অভিযোগ অনেক। বলার মতো ভাষা নেই, জায়গা নেই। জায়গা থাকলেও ঊর্ধ্বতনদের হাত অনেক উপরে। সবকিছু ম্যানেজ ও টেক্কা দিয়ে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Siraj talukdar ৪ আগস্ট, ২০২২, ৩:৫৪ এএম says : 0
পুলিশ হচ্ছে জনগণের বন্ধু, কিন্তু সারা বাংলাদেশ জুরে পুলিশের চাদাবাজি,খুন ঘুমের হয়রানি হতে হচ্ছে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের। এর সমাধান চাই????আমাদের ও বেচে থাকার অধিকার আছে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন