ডলারের খোলাবাজারে তৈরি হওয়া অস্থিরতার সুযোগে সিলেটের মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে কারসাজির অভিযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর প্রেক্ষিতে নগরীর মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোতে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার (৩ ও ৪ আগস্ট) তদারকিমূলক অভিযান চালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ টিম।
এ অভিযানের রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে দাখিলের পর সত্যতা পেলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হবে যথাযথ ব্যবস্থা, জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যবহার শুরু হয় ডলারের। এতে সিলেটহ সারা দেশে ডলারের খোলাবাজারে তৈরি হয় অস্থিরতা। জ্বালানি তেল, ভোগ্যপণ্য ও জাহাজ ভাড়া বেড়ে যাওয়াই এর অন্যতম কারণ। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ রসদ জুগিয়েছে এ অস্থিরতায়। দেশীয় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো ডলারের দাম বাড়িয়ে এ সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেন। এমন পরিস্থিতিতে ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া মূল্যকে গুরুত্ব না দিয়ে সিলেটের এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীরা চলছেন ইচ্ছেমতো। অনেকে বাড়িয়ে দিয়েছেন দাম। আবার অনেকে ‘ডলারের দাম সামনে আরও বাড়বে’ এমন গুজব সৃষ্টি করে ইচ্ছাকৃতভাবে ডলার মজুদ করছেন। এ অবস্থায় বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গত বুধবার থেকে সিলেটে তদারিকমূলক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের টিম। এ বিষয়ে ব্যাংকের পরিচালক এ কে এম এহসান বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিকালে বলেন, গতকাল ও আজ ডলারের বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত মূল্য ১০২ টাকা। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে- সিলেটে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত মূল্যের বাইরে অনেকে বেশী মূল্যে ডলার বিক্রি করছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিলেটে বাংলাদেশ ব্যাংকের টিম দুদিন থেকে অভিযান পরিচালনা করছে। টিমের তদন্ত রিপোর্ট আমরা এখনও হাতে পাইনি। রিপোর্ট পাওয়ার পর যদি নির্দিষ্ট কোনো মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তবে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ কে এম এহসান আরও বলেন, আমাদের তথ্যমতে- সিলেটে ১৪টি লাইসেন্সধারী বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান আছে কি-না, সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই। এ বিষয়েও আমরা খোঁঁজ নিচ্ছি। থাকলে এগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সিলেটে অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের সংখ্যা ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গজিয়েছে। প্রবাসী অধ্যূষিত হওয়ায় বিরাট লাভজনক মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসা। যে যেমন পারছে সেই ব্যবসায় জড়িতরা গ্রাহকদের জিম্মি করে ফায়দা লুঠছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন