বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

লাইফস্টাইল

পেয়ারা চর্মরোগে উপকারী

| প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

বর্ষাকালের ফলের মধ্যে পেয়ারা হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় ও উপকারী। কিন্তু এই ফল পাওয়া যায় মাত্র কয়েক মাস। অবশ্য কোনো কোনো জাতের পেয়ারা সারা বছর হয়। বৈজ্ঞানিক নাম সিডিয়াম গুয়াজাভা। দারুণ পুষ্টিসমৃদ্ধ এই পেয়ারাকে অনেকে মনে করেন শিশু-কিশোরের খাবার। এ ধারণা সঠিক নয়। পেয়ারা ভিটামিন সি, পেকটিন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের অন্যতম উৎস। একমাত্র আমলকি ব্যতীত অন্যসব ফল-শাকসবজির চেয়ে টাটকা পেয়ারায় ভিটামিন সি বেশি থাকে। আমরা প্রতিদিন ২৫ গ্রাম পেয়ারা (ছোট একটি পেয়ারা) খেয়ে পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষের দৈনিক ভিটামিন ‘সি’-এর অভাব পূরণ করতে পারি। তবে বেশি খেলে অসুবিধা নেই।

অরুচি ও অজীর্ণতায় কাঁচা পেয়ারা সিদ্ধ করে চটকিয়ে বীজ ছাড়িয়ে ছেঁকে একটু লবণ ও চিনি মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। কচি পেয়ারার পাতা পেটের অসুখের জন্য ভালো। পেয়ারার কচি পাতা পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি নিয়ে কুলি করলে দাঁতের ব্যথা, পুঁজ পড়া, রক্ত পড়া রোগের উপশম হয়। পেয়ারার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ রয়েছে । আর ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে ক্যালরিও রয়েছে অনেক। আমাদের অনেকে পেয়ারার বাইরের খোসা ফেলে দিয়ে খায়। আবার কেউ ভেতরের অংশ খায়। কিন্তু অনেকে জানে না যে, পেয়ারার বাইরের খোসায় প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। তাই বলতে হয় পেয়ারা শুধু ভালো করে ধুয়ে কেটে বা কামড়ে খোসাসমেত খাওয়া ভালো। তাহলে ভিটামিন পুরোটাই পাওয়া যাবে।

পেয়ারায় প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় আমাদের দেহে কোনো ক্ষত থাকলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। ত্বকের সজীবতা বাড়ায়। মুখের ত্বকে ভাঁজ থাকলে তা টান টান হয়ে যায়। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তারা প্রতিদিন একটা পেয়ারা খেলে এই সমস্যা দূর হয়। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা যেন পাকা টসটসে পেয়ারা না খান। খেলে সুগার বেড়ে যাবে। যাদের দাঁতের মাঢ়ি ফোলে ও রক্ত পড়ে তারা পেয়ারা খেলে উপকার পাবেন। রক্ত পড়া বন্ধ হবে। পেয়ারা খেলে পুরুষের শুক্র সজীব ও শক্তিশালী হয়। মেয়েদের ডিম্বাণু সতেজ হয়। মানবদেহের কোষ গঠনে পেয়ারা যথেষ্ট সহায়ক বলে চিকিৎসাশাস্ত্র বলে।

পেয়ারায় আরো রয়েছে ভিটামিন ই ও কে। এ দুই ভিটামিন আমাদের ত্বককে সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে। পেয়ারায় আছে খনিজ, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ। এগুলো দেহের লবণ ও অম্ল খারের পরিমাণ সঠিক রাখে। এ ছাড়া দাঁত ব্যথা, ক্ষুধামন্দা, অরুচি, আমাশয়, বমি ও পাতলা পায়খানা, পাইরিয়া পোড়া ঘা নিরাময়ে অত্যন্ত সহায়ক। তাই বলা হয়- আমলকী অরবরই পেয়ারা ভিটামিন সি-এর রাজা।

তাই আসুন ছোট-বড় সবাই এই সময়ে দৈনিক অতন্ত একটা পেয়ারা খাই। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউিটের তথ্য অনুসারে খাদ্যোপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারার পুষ্টিমান নিম্নে দেওয়া হলো- জলীয় অংশ- ৮২.৮ গ্রাম, মোট খনিজ পদার্থ ০.৬ গ্রাম, প্রোটিন ১.৪ গ্রাম, শর্করা ১৫.২ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২০ মিলিগ্রাম, আয়রন ১.৪ মিলিগ্রাম, ফ্যাট ১.১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.০২১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.০৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ২১০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন ‘এ’ ৩৩৩.৩৩ আইইউ, খাদ্যশক্তি ৭৬ কিলোক্যালরি। এই পুষ্টিমান পেয়ারার জাত, উৎপাদনের স্থান ও পরিপক্বতার জন্য কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।

মো: লোকমান হেকিম
শিক্ষক ও কলামিস্ট, মোবা: ০১৭১৬-২৭০১২০

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
ATM ATAUR RAHMAN RANJU ৬ আগস্ট, ২০২২, ৪:১৯ পিএম says : 0
THANKS A LOT.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন