কুমিল্লার বরুড়ায় শিক্ষকের বেত্রাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে মো. সিহাব উদ্দিন (১৪) নামের একজন মাদরাসা ছাত্র চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। নিহত মাদরাসা ছাত্র কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের শশইয়া গ্রামের শুক্কুর আলীর ছেলে। সে ওই ইউনিয়নের মেড্ডা আল মতিনিয়া নূরানী মাদরাসার ছাত্র।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক) ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত মাওলানা আবদুর রব একই ইউনিয়নের মেড্ডা আল মতিনিয়া নূরানী মাদরাসার শিক্ষক। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ওই মাদরাসার শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। রাত পৌনে ৮টায় থানার ওসি ইকবাল বাহার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মাদরাসা ছাত্র সিহাবের ভাবি সাবিকুন নাহার ঝুমুর সাংবাদিকদের বলেন, তার দেবর সিহাব আবাসিক ছাত্র হিসেবে ওই শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে নূরানী শিক্ষা গ্রহণ করছিল। গত কয়েক দিন আগে মাদরাসার শিক্ষক আবদুর রব তাকে বেত্রাঘাত করেন। এতে সিহাব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষকরা বিষয়টি গোপন রেখে তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু সে সুস্থ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) মাদরাসা থেকে ফোন করে সিহাবের অসুস্থতার খবর পরিবারকে জানানো হয়। পরে পরিবারের লোকজন মাদরাসায় গিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে।
ঝুমুর জানান, সিহাবের শরীরে জ্বরসহ প্রচণ্ড ব্যথায় অবস্থার অবনতি হওয়ায় শুক্রবার সকালে তাকে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। সিহাবকে কুমেক হাসপাতালে আনার পর দুপুরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
সিহাবের বাবা শুক্কুর আলী বলেন, ছেলেকে আরবি শিক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলাম, শিক্ষকের নির্মমতায় ছেলেকে হারাতে হলো।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই ব্যাপারে জানতে পারি। পরে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থলসহ ওই মাদরাসা ছাত্রের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়। বাড়ি থেকে ওই ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার কুমেক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদরাসার শিক্ষক আবদুর রবকে আটক করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন