বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

টাকা পাচারকারীরা রাষ্ট্র ও মানবতাবিরোধী : নতুনধারা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২২, ১০:৪২ পিএম

টাকা পাচার ও লোডশেডিং সমস্যা সমাধানের দাবিতে প্রতীকী টাকা মিছিল ও সমাবেশ আজ ৫ আগস্ট বেলা ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরানা পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবির চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদী। বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শান্তা ফারজানা, প্রেসিডিয়াম মেম্বার আবুল হোসেন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিপুন মিস্ত্রী, সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াজেদ রানা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এনডিবির যুগ্ম আহবায়ক রুবেল আকন্দ, ঢাকা মহানগর উত্তর এনডিবির সদস্য উজ্জল সানী প্রমুখ।

এসময় মোমিন মেহেদী বলেন, আমাদের দেশে মন্ত্রীরা বলছেন, ‘আমরা টাকা পাচারের জন্য আইন করিনি।’ এভাবে সরকার পাচারকারীদেরকে উৎসাহিত করছেন, যা সত্যিকার্থেই লজ্জাজনক। তর্ক-বিতর্কে একে অন্যকে দোষারোপ করতে দেখা যায়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সব স্তিমিত হয়ে যায়। ওদিকে নীরবে চলতে থাকে বাণিজ্যের নামে অর্থপাচার। ওদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য বিশ্লেষণ করে আমদানির কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে প্রতিবছর রেকর্ড গড়ার চিত্র দেখা যাচ্ছে।

জিএফআইয়ের তথ্যানুযায়ী, ২০০৩ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ২৭৫ কোটি মার্কিন ডলার। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৩৮১ কোটি মার্কিন ডলার। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৪২৬ কোটি মার্কিন ডলার। একই ধারায় ২০০৬ সালে ৩৩৭ কোটি, ২০০৭ সালে ৪০৯ কোটি, ২০০৮ সালে ৬৪৪ কোটি, ২০০৯ সালে ৫১০ কোটি, ২০১০ সালে ৫৪০ কোটি, ২০১১ সালে ৫৯২ কোটি, ২০১২ সালে ৭২২ কোটি, ২০১৩ সালে ৯৬৬ কোটি, ২০১৪ সালে ৯১১ কোটি এবং ২০১৫ সালে এক হাজার ১৫১ কোটি ডলার পাচার হয়। এরপর বাংলাদেশ থেকে আর কোনো তথ্য না পাওয়ার কথা জানিয়ে সংস্থাটি বলেছিল, বিগত বছরগুলোতে অর্থপাচারের ঘটনা অনেকাংশে বেড়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে ১ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়ে যায়। বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) বলছে, প্রধানত ১০টি দেশ এই অর্থপাচারের বড় গন্তব্যস্থল। দেশগুলো হলো সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া, হংকং ও থাইল্যান্ড। আর পাচার চলছে মূলত বাণিজ্য কারসাজি ও হুন্ডির মাধ্যমে।

এসময় নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, টাকা পাচারকারীরা রাষ্ট্র ও মানবতাবিরোধী। ‘দেশের ‘মানি লন্ডারিং প্রিভেনশন অ্যাক্ট’-এর কথা কি আর বলবো. বাংলাদেশের টাকা পাচারকারীদেরকে সরকার বিভিন্নভাবে পৃষ্টপোষকতা দিচ্ছে। অনতিবিলম্বে এ আইনে যত ধরনের ঘাটতি আছে, সব দূর করে আন্তর্জাতিকভাবে পাচাররোধে পদক্ষেপ না নিলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে অর্থনৈতিকভাবে। শুধুমাত্র আইনের ফাকফোকরের কারণে চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত আনতে অনেক সময় লেগে যায়। গত ১৮ বছরে যে পরিমাণ অর্থপাচারের কথা বলা হচ্ছে, তা সর্বশেষ তিন অর্থবছরের মোট বাজেটের কাছাকাছি। এ ছাড়া পাচারের এই অর্থ দেশের বর্তমান জিডিপির ৩১ শতাংশ। বর্তমানে জিডিপির আকার ৩৫৫ বিলিয়ন ডলার।

এসময় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শান্তা ফারজানা বলেন, অনেকে তুলনা করে বলছেন, পাচারের এই টাকা দিয়ে কয়েকটি পদ্মা সেতু বানানো যেত। সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের অন্যতম অংশ মেট্রো রেলই বা কতগুলো বানানো সম্ভব ছিল, এ হিসাবও কষছেন কেউ কেউ। উল্লেখ্য, পদ্মা সেতুর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং মেট্রো রেল প্রকল্পের ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা। পাচারের এই অর্থ দিয়ে দেশের বড় বড় মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করা যেত খুব সহজেই। অতএব, পাচাররোধে দ্রুত কঠোর আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। একই সাথে নতুনধারার নেতৃবৃন্দ প্রমাণিত পাচারকারীর মৃত্যুদন্ড দেয়ার ঘোষণা চেয়ে আইন প্রনোয়নের দাবি জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন