শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ডি মারিয়াহীন মেসি-নেইমারদের নতুন চ্যালেঞ্জ

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২২, ১২:০৯ এএম

ইউরোপ সহ সারা দুনিয়ার লিগ গুলোতে ব্রাজিলের পর সবচেয়ে বেশি প্লেয়ার সরবরাহিত হয় ফ্রেঞ্চ ফুটবলের মাধ্যমে। সেই ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট লিগ ওয়ানের নতুন মৌসুমের যাত্রা শুরু হয়েছে। এই রিপোর্টটি যখন পড়ছেন ততক্ষণে নিশ্চয়ই মধ্যরাতে হওয়া অলেম্পিক লিঁও বনাম আজাকসিও ম্যাচের ফলাফলও জেনে গেছেন। নতুন মৌসুম শুরুর আগে কেমন হলো লিগ ওয়ানের দল গুলোর হাল চাল তাতে এক ঝলক চোখ বুলানো যাক।
মাঝে ক্যাম্পোস-গালতিয়ের জুটি মিলে ২০২০/২১ মৌসুমে লিলেকে লিগ চ্যাম্পিয়ন করেছিল। এবার এই জুটি পিএসজির ডেরায় কাজ করছে। পিএসজির আক্রমণ ও রক্ষণ বরাবরই দারুণ। মাঝমাঠের দুর্বলতার কারণেই তাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সফলতার হার কম ছিল। সেই সমস্যার সমাধানে প্রত্যয়ী তারা। অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, জাভি সিমিওনি দল ছেড়েছেন। উইনালডাম ও গুইয়েরও দল ছাড়া চূড়ান্ত। তাই মধ্যমাঠের ভারসাম্য রক্ষার সার্থে তারা দলে টেনেছেন রেনাতো ও ভিতিনহাদের মতন কার্যকরী দুই পর্তুগীজ তারকাকে। গত সপ্তাহে এমবাপ্পে-মেসি-নেইমারদেরকে সুপার কাপে নতের বিপক্ষে ৩-৪-৩ ফর্মেশনে খেলিয়েছিলেন গালতিয়ের। যদিও লিলেকে নিয়ে ৪-৪-২ ফর্মেশনেই তিনি লিগ ওয়ান শিরোপা জিতেন। এই ফ্রেঞ্চ কোচ এমবাপ্পে ও মেসি দুজনকেই একসাথে খেলিয়ে কিভাবে সেরাটা আদায় করবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়। এই দলকে টপকে লিগ জেতাটাই বাকি বড় দলগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ।
চুয়ামেনি, ফ্যাব্রেগাসসহ মোনাকোর মধ্যমাঠের অনেক প্লেয়ার দল ছেড়েছেন। রক্ষণভাগের অনেককেই বিক্রি করতে হয়েছে তাদের। কিন্তু এই দুই জায়গায় এখনও উল্লেখযোগ্য কোন প্লেয়ার আনেননি কোচ ফিলিপে ক্ল্যামেন্ট। দলটির প্রাথমিক লক্ষ্য সামনের মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ালিফিকেশন। সামপাওলির অধীনে গেল মৌসুমে রানার্স-আপ হয়েছিল অলিম্পিক মার্শেই। তবে আর্জেনটাই কোচের অপ্রাতাশীত প্রস্থানে নতুন ক্রোয়েট ম্যানেজার ইগোর তুদোরের সামনে চ্যালেঞ্জ পূর্বের অবস্থান ধরে রাখার। সেই লক্ষে দল ভালোই গুছিয়েছে ৯ বারের চ্যাম্পিয়নরা। গোলকিপিং থেকে স্ট্রাইকিং প্রতি পজিশনেই কার্যকরী প্লেয়ার দলে টেনেছে দলটি। মেসি-নেইমারদের এই মৌসুমে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জানাবে মার্শেই।
মাঝে কিছুদিন বরুশিয়ার দায়িত্ব পালন করে আবারও নিসে ফিরে এসেছেন ফ্যাভরে। এই সুইস কোচ দলে টেনেছেন বহু প্লেয়ার তবে অ্যারন রামসি ও ক্যাসপার স্ম্যালজার বেশ বড় নাম। সদা আক্রমণাত্বক ফুটবল কৌশলে বিশ্বাসী এই কোচের প্রাথমিক লক্ষ্য সেরা তিনে থেকে আগামী চ্যম্পিয়নস লীগে কোয়ালিফাই করা। ল্যাকাজেট ও তোলিসোকে ফ্রি এজেন্টে দলে এনে ছক্কা হাকিয়েছে পিটার বোজের লিও। গতবার আটে থেকে লিগ শেষ করায় এবার ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার বাহিরে থাকবে তারা। অন্যদিকে এক মৌসুম পূর্বেই লিগ জেতা লিলে আর্থনৈতিক ঝামেলায় জর্জরিত। বোটম্যান, রেনাতো, সেলিক, জেকা, ইলমাজকে ছেড়ে দিতে হয়েছে। দলের নতুন পর্তুগীজ কোচ ফনসেকার কৌশলে পূর্বে শাখতার ও রোমা ঝলক দেখিয়েছিল। একই ধারাবাহিকতা লিলেতে টেনে আনতে পারবেন কি না সে উত্তর পেতে চোখ রাখতে হবে লিগ ওয়ানে।
একই সময় পর্দা উঠেছে পর্তুগীজ প্রিমিয়ার লিগেরও। পোর্তো ডফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হলেও নতুন জার্মান কোচ রজার স্মিথের অধীনে বেনফিকা তাদের পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। চ্যাম্পিয়ন লিগের বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচেই স্পষ্ট হয়েছে যে, তারা সঠিক পরিকল্পনায় আছে। দারইউন নুনেজ, জোটা, পিজ্জি, এভারটন, জেডসনের মতন তারকারা ক্লাব ছাড়ার পরও যথেষ্ট শক্তিশালী তাদের স্কোয়াড। বেনফিকার স্কোয়াডে যে ধরনের তরুণ প্রতিভাবান খেলয়াড় রয়েছে তাদেরকে যথাযথ ব্যবহার করতে পারলে লিগতো বটেই, ইউরোপেও এবার দুর্দান্ত খেলার সম্ভাবনা রয়েছে দলটি।
অন্যদিকে এমোরিমের স্পোর্টিং সিপির মাথা ব্যাথার কারণ মিডফিল্ড। পালহিনহা দল ছেড়েছেন, ম্যাথিউজও ছারার গুঞ্জন আছে। এই দুই কোয়ালিটি মিডফিল্ডারের বদলি এখনো পায়নি এমোরিম। ৪-৩-৩ ছকে খেলা এই কোচের কৌশল কার্যকারী করার জন্য এবার তাই একাডেমির ব্রাগাঞ্জা ও উরুগুয়ান উগরেতের দারস্থ হতে হবে। মিডফিল্ড নিয়ে একই সমস্যায় পড়বেন পোর্তোর কোচ কনসেইসাও। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা ভিতিনহা, ভিয়েরা, অলিভিয়েরাকে ছেড়ে দিয়েছে। নতুন সাইনিং গ্রুজিচ ও ইস্তাকিউ সেই অভাব আদৌ পূরণ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে বেশ সংশয় আছে। ডেভিড ক্যামরোকে দলে টানলেও আরেক ডিফেন্ডার এম্বেম্বা ফ্রি এজেন্টে দল ছাড়ায় রক্ষণ নিয়েও চাপে থাকবে পোর্তো। এদিকে ব্রাহার কোচ কার্লোস কার্ভাহাল দল ছাড়ায় বেশ ছন্নছাড়া অবস্থা ক্লাবটির। তাই পর্তুগীজ লিগের মূল লড়াই হবে বেনফিকা, স্পোর্টিং ও পোর্তোর মাঝেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন