শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চীনের ঋণ নিয়ে সতর্কতা উচ্চারণ বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীর

ফাইনান্সিয়াল টাইমস | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০২২, ১:৩৯ পিএম | আপডেট : ৫:৫৭ পিএম, ৯ আগস্ট, ২০২২

অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। -সংগৃহীত।


বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, উন্নয়নশীল দেশগুলিকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) মাধ্যমে আরও ঋণ নেওয়ার বিষয়ে দুবার ভাবতে হবে, কারণ বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি এবং মন্থর প্রবৃদ্ধি ঋণগ্রস্ত উদীয়মান বাজারগুলিতে চাপ বাড়ায়। তিনি আরও বলেন যে, বেইজিংকে তার ঋণের মূল্যায়নে আরও কঠোর হতে হবে এই উদ্বেগের মধ্যে যে, দুর্বল ঋণের সিদ্ধান্ত দেশগুলিকে ঋণ সঙ্কটে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করছে।
এক সাক্ষাৎকারে বিআরআই’র কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, সবাই এই প্রকল্পে রাজি হওয়ার জন্য দুবার ভাববে। সবাই চীনকে দোষারোপ করছে। চীন দ্বিমত করতে পারে না। এটা তাদের দায়িত্ব।’ চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই উইকএন্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য বাংলাদেশ সফরের পর কামাল এ মন্তব্য করেন।
একটি বিবৃতিতে চীন নিজেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত অংশীদার বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে যে, এই জুটি অবকাঠামোতে সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। তবে, কামাল শ্রীলঙ্কার দিকে ইঙ্গিত করেছেন, যেখানে চীনা-সমর্থিত অবকাঠামো প্রকল্পগুলি ঋণ ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়েছিল, একং গুরুতরভাবে অর্থনৈতিক সঙ্কটকে বাড়িয়ে তুলেছিল। তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার পর...আমরা অনুভব করেছি যে, চীনা কর্তৃপক্ষ এই বিশেষ দিকটির যতœ নিচ্ছে না, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর চাপের কারণে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ গত মাসে এশিয়ার সর্বশেষতম দেশ হিসেবে আইএমএফের কাছে অর্থায়নের জন্য দ্বারস্থ হয়েছে। চীনের বিআরআইতে অংশগ্রহণকারী দেশটি বেইজিংয়ের কাছে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার বা তার মোট বৈদেশিক ঋণের ৬ শতাংশ দেনা রয়েছে। কামাল বলেছেন যে, বাংলাদেশ ৪.৫ বিলিয়ন ডলারের মোট প্যাকেজের অংশ হিসেবে আইএমএফ থেকে ১.৫ বিলিয়ন ডলারের প্রথম কিস্তি চাচ্ছে, যার মধ্যে আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে স্থিতিস্থাপকতা প্রকল্পে তহবিল যোগাতে অর্থায়ন এবং এর বাজেটে চাপ কমানোর জন্য অর্থায়ন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আইএমএফ অনুসারে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক ঋণ ছিল ৬২ বিলিয়ন ডলার, যার বেশিরভাগই বিশ্বব্যাংকের মতো বহুপাক্ষিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে পাওয়া। দেশটি চীনের পর তার বৃহত্তম দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতা জাপানের কাছ ৯ বিলিয়ন বা ১৫ শতাংশ দেনা। অর্থমন্ত্রী বলেছেন যে, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি সহ অন্যান্য বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে মোট আরও ৪ বিলিয়ন ডলার চাইছে। তিনি আরও বলেছেন, তিনি আশাবাদী যে দেশ তাদের কাছ থেকে ঋণ পাবে।
কোভিড -১৯ মহামারী থেকে অর্থনৈতিক আঘাত, সেইসাথে ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে বিশ্বব্যাপী খাদ্য এবং জ্বালানীর দামের বৃদ্ধি অনেক উন্নয়নশীল দেশকে চাপের মধ্যে ফেলেছে এবং কিছু তাদের বিদেশী ঋণ পরিশোধ করতে লড়াই করছে। কামাল বলেন, ‘এর অর্থ হল যে, যদিও সবাই ভুগছে, আমরাও চাপের মধ্যে আছি, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে ছিল না, এমন পরিস্থিতি কল্পনা করারও উপায় নেই।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
মোঃ আরিফ হোসেন ১০ আগস্ট, ২০২২, ৮:১৫ পিএম says : 0
বিদেশি ্ঋণেে এখন নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ না করাই ভালো। আগে দেশে কৃষি উন্নয়নে মনোযোগী হলে ভালো হয়।
Total Reply(0)
Kazi ১০ আগস্ট, ২০২২, ১:০২ পিএম says : 0
এখন সময় নয় ঋণ করে উন্নয়ন প্রকল্প করার। সব প্রকল্প স্থগিত রেখে বেঁচে থাকার কথা ভাবুন । উন্নয়ন জ্বর শ্রীলঙ্কার পরিণতির কারণ। নতুন প্রজন্ম বন্ধ করতে হবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন