চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নিরীহ লোকদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করে এক সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। বিভিন্ন জেলার শিক্ষিত ও বেকার যুবকদের চাকরি দেয়ার প্রলোভন দিয়ে ও চাকরির জামানত বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা রেখে আবার কখনো প্রশিক্ষণ, ল্যাপটপ কিংবা মোটরসাইকেল দেয়ার নাম করে অগ্রিম বাবদ নিয়ে বিপুল পরিমাণ চাকরীপ্রার্থীর কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়৷ এভাবে একাধিক চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে গত ৩ বছরে প্রায় ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এ চক্রের মূলহোতাসহ তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. মজিবুর রহমান (৪২), দুই নারী সহযোগী লাবনী আক্তার (২৩) ও জান্নাতুল ফেরদৌস ময়না (২০)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৪টি মোবাইল ফোন, ৬০ বিভিন্ন কোম্পানির সিম কার্ড, চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া ৪০টি জাতীয় পরিচয়পত্র, ১৪৮টি বায়োডাটা ও ৩০ এর বেশি ভূঁইফোড় কোম্পানি ও এনজিওর নামে করা নিয়োগপত্র ও স্ট্যাম্প সিল জব্দ করা হয়।
বুধবার দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রেজাউল মাসুদ।
তিনি বলেন, দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের দরিদ্র ও বেকার তরুণ-তরুণীদের এসএসসি-এইচএসসি পাশে ৪০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিত একটি চক্র। এরপর তাদেরকে চাকরির ভুয়া কনফার্মেশন দিয়ে ল্যাপটপ ও মোটরসাইকেল দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দফায় দফায় দফায় মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো।
রেজাউল মাসুদ বলেন, এ চক্রটি রাজধানীর উত্তরায় নারী ও শিশু কল্যান কেন্দ্র নামে একটি অফিস খুলে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা করছে। বিভিন্ন জেলার শিক্ষিত ও বেকার যুবকদের চাকরি দেয়ার প্রলোভন দিয়ে ও চাকরির জামানত বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা রেখে আবার কখনো প্রশিক্ষণ, ল্যাপটপ কিংবা মোটরসাইকেল দেয়ার নাম করে অগ্রিম বাবদ নিয়ে বিপুল পরিমাণ চাকরীপ্রার্থীর কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে সাইবার পুলিশ সেন্টারে (সিপিসি) একটি অভিযোগ আসে। অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, অভিযোগকারী ভিকটিম ছাড়াও সারাদেশে অসংখ্য বেকার চাকরিপ্রার্থীরা এই চক্রের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছে। পরবর্তীতে সাইবার মনিটরিং টিমের একটি চৌকস দল গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর দক্ষিণখান থানাধীন আশকোনা এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের মূলহোতা মজিবুর রহমানসহ তার ২ নারী সহযোগী লাবনী আক্তার ও জান্নাতুল ফেরদৌস ময়নাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মজিবুর রহমানের বরাত দিয়ে বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রেজাউল মাসুদ বলেন, সে তার অন্যান্য সহযোগীদের যোগসাজশে গত ৫ বছরে প্রায় ২৫ হাজার সিভি/বায়োডাটা সংগ্রহ করেছে। এসব বায়োডাটা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে গত ৩ বছরে প্রায় ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
একই ধরণের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মূলহোতা মজিবুর রহমান এর আগে ২০১৮ সালে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তীতে জামিনে বের হয়ে এসে একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন