বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বেসরকারি খাতে দেশের প্রথম পূর্নাঙ্গ অ্যাস্ট্রো অবজারভেটরি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০২২, ২:৫০ পিএম

বেসরকারি পর্যায়ে দেশের প্রথম পূর্নাঙ্গ অ্যাস্ট্রো অবজারভেটরি (মানমন্দির) মহাকাশ পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার জন্য প্রস্ততুত। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যবসায়ী নেতা শাহজাহান মৃধা বেনুর ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় নির্মিত এই অবজারভেটরির প্রধান কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।

সরেজিমেন ঘুরে দেখা যায়, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় বাঘের বাজার সংলগ্ন বেনুর ভিটায় প্রায় ৮০ বিঘা জায়গায় অবস্থিত এই চারতলার ভবনের উপরে অবজারভেটরির অবস্থান।প্রাথমিক পর্যায়ে ১৪ ইঞ্চি মিড ক্যাসিগ্রেইন টেলিস্কোপের সাহায্যে রাতের আকাশ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

ভবিষ্যতে এখানে আরো অত্যাধুনিক ১০০ ইঞ্চি ব্যাসের রিফ্লেক্টর টেলিস্কোপ সংযুক্ত করা হবে। মানমন্দিরে রেডিও টেলিস্কোপ স্থাপনের পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান বেনু।

তিনি জানান, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের ছাদে ১৯৯০ সালে দেশের প্রথম মানমন্দির স্থাপন করেন। যেকজন বিজ্ঞান প্রেমী মানুষের হাত ধরে দেশে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা শুরু হয় তাঁদের মধ্যে শাহজাহান মৃধা বেনু অন্যতম। জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার অন্যতম এই পথিকৃৎ বাংলাদেশে স্বাধীনতা পরবর্তী জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক সকল ঘটনাবলীর গবেষণা, পর্যবেক্ষণ ও উদযাপনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

২০১৯- ২২ সালে নির্মিত এই অবজারভেটরির স্বপ্ন তিনি বহুকাল ধরেই লালন করতেন। শখের এই জ্যোতির্বিদ সবসময় চাইতেন, দেশে এমন একটি গবেষণা কেন্দ্র হবে যেখানে মহাকাশ প্রেমীরা উন্নত বিশ্বের মতো মহাকাশ গবেষণা করার সুযোগ পাবে। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বপ্ন- এদেশের ছেলেমেয়েরাও একদিন NASA, CNSA, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি, কানাডা স্পেস এজেন্সিতে নিয়মিত মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করবে।

সম্প্রতি অবজারভেটরিটি পরিদর্শন করেন নাসার সাবেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় মোরেনো ভ্যালি কলেজে পদার্থবিদ্যা ও জ্যোতির্বিদ্যার অধ্যাপক ড. দীপেন ভট্টাচার্য ও মহাকাশ গবেষক ড. মাকসুদা আফরোজ।

দীপেন ভট্টাচার্য বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে এতো বড় কাজ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। জ্যোতির্বিদ্যার প্রতি বেনু সাহেবের এমন আন্তরিকতা সত্যিই আমাদের উৎসাহিত করে। আগামীতের এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও গবেষকরা বেশ উপকৃত হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

জ্যোতির্বিজ্ঞানকে কেন্দ্র করে এই মহাকাশপ্রেমীর স্বপ্ন সত্যি হবার দারপ্রান্তে। আমরাও এই বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বপ্নকে লালন করার পাশাপাশি বাস্তবায়িত করতে সাহায্য করব বলে তিনি যুক্ত করেন।

তনি আরও বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণায় আগ্রহীরা এখানে পুরোপুরি গবেষণা করার সুযোগ পাবে। দেশ-বিদেশের বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষকদের অংশগ্রহণে এটি হয়ে উঠবে একটি পূর্নাঙ্গ মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র।

অবজারভেটরির প্রতিষ্ঠাতা বেনু আরও বলেন, মহাকাশ গবেষকদের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার, গ্রন্থাগার ও থাকার সুব্যবস্থা থাকবে। অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফির জন্যও থাকবে নানান সুযোগ সুবিধা। এখানকার অ্যাস্ট্রো উঠানের মনকাড়া কারুকার্যে যে কেউ মুগ্ধ হতে বাধ্য হবে। জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি আর্চারি, মাউন্টেনিয়ারিং ও উড্ডয়ন বিদ্যার প্রশিক্ষণের সুযোগ সুবিধাও থাকবে।

একজন ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি দেশের বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি শিল্প ও সাংস্কৃতিকেও পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছেন। তিনি একাধারে বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

একজন প্রকৃতিপ্রেমী ও পরিবেশের নিবিড় পর্যবেক্ষক হিসেবে কিশোর বয়স থেকেই বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন(বাপা), প্রকৃতি ও পরিবেশ সংগঠন তরুপল্লব সহ বিভিন্ন পরিবেশ সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রায় একযুগ ধরে পরিবেশ বিষয়ক পত্রিকা "প্রকৃতিপত্র" সম্পাদনা করে তিনি প্রকৃতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বিজ্ঞান ক্লাব অনুসন্ধিৎসু চক্রে'র জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি হিসেবে তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন